করোনার মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির প্রতিনিধিরা | ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির প্রতিনিধিদের জন্য আলাদা ১০ লাখ ডোজ টিকা আসবে বলে জানিয়েছেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) রাতে গুলশানের নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। পাপন বলেন, চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরতরাও ভয়াবহ করানো ঝুঁকিতে আছেন। অনেকেই কর্মক্ষেত্রে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু তারা সরকারের প্রথম সারির ভ্যাকসিনপ্রাপ্তির তালিকার নেই। এটা দুঃখজনক।

তিনি বলেন, বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো আমাদের বারবার অনুরোধ করছে, তাদের জন্যও কিছু ভ্যাকসিন আনার জন্য। আমরা সেরামের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাদের আরও ১০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার কথা বলেছে।

বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো আমাদের বারবার অনুরোধ করছে, তাদের জন্যও কিছু ভ্যাকসিন আনার জন্য। আমরা সেরামের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাদের আরও ১০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার কথা বলেছে

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন

কবে নাগাদ ১০ লাখ ডোজের এ টিকা আসবে— জানতে চাইলে পাপন বলেন, আমরা এটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছি। কবে আসবে সেটা এখনই বলতে পারছি না। শিগগিরই আপনাদের জানানো হবে।

‘ভ্যাকসিন ওয়্যারহাউজ থেকে সরকারের নিদের্শ অনুযায়ী ৬৪ জেলার সিভিল সার্জনদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। এর মধ্যে সবধরনের কোল্ড চেইন মানা হবে।’

গুলশানের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হাসান পাপন | ছবি- ঢাকা পোস্ট

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘ভারত সরকারের নির্ধারিত মূল্যেই সেরামের কাছ থেকে টিকা কিনছে বাংলাদেশ। তবে এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না যে কত দাম পড়বে? তবে তিন থেকে চার ডলারের মধ্যে হবে। ভারত সরকার চার ডলার করে কিনলে বাংলাদেশও চার ডলারের বেশি দেবে না।’

এর আগে ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে উদয়াচল পার্কের উদ্বোধন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) বনাম ভারতীয় হাই কমিশনের প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাপন বলেন, সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তিন কোটি ডোজ টিকা পেতে আমাদের যে চুক্তি রয়েছে এটি পর্যায়ক্রমে নিয়ে আসা হবে। দুই-একদিনের মধ্যে প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ আসছে।

চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরতরাও ভয়াবহ করানো ঝুঁকিতে আছেন। অনেকেই কর্মক্ষেত্রে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু তারা সরকারের প্রথম সারির ভ্যাকসিনপ্রাপ্তির তালিকার নেই। এটা দুঃখজনক

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন

সোমবার আসছে আরও ৫০ লাখ টিকা

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের ৫০ লাখ টিকা সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশে আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। রোববার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘২০ লাখ ভ্যাকসিন আমরা পেয়েছি। আগামীকাল (সোমবার) আমাদের আরও ৫০ লাখ ভ্যাকসিন আসবে আশা করছি।’

এ জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের যে জাতীয় কমিটি আছে সে কমিটিও প্রস্তুতি মোটামুটি শেষ করেছে।’ ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় চালান আসবে বলেও জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহীদের নিবন্ধনের জন্য তৈরি অ্যাপ সোমবার হস্তান্তর করবে আইসিটি বিভাগ। বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সেটির উদ্বোধন করা হবে।’

এছাড়া ভ্যাকসিনের প্রয়োগ নিয়ে যেন কোনো অনিয়ম না হয় সেজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি সুপারিশ করেছে বলেও জানান মন্ত্রী। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বেসরকারিভাবে ভ্যাকসিন আনার অনুমতি এখনও দেয়া হয়নি।‘’
কিট দিয়ে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) অ্যান্টিবডি পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলেও এ সময় জানান তিনি। 
জাহিদ মালেক বলেন, ‘অনেক দিনের দাবি ছিল অ্যান্টিবডি পরীক্ষার বিষয়টি। আমরা এখন থেকে অ্যান্টিবডি টেস্ট করার অনুমতি দিচ্ছি। এটা অনেকেরই দাবি ছিল।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য ৪২ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এর মধ্যে টেকনোলজিস্ট, নার্স, মিডওয়াইফ, ভলান্টিয়ার রয়েছে। সবমিলিয়ে ৪২ হাজার জনকে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে, যারা ভ্যাকসিন দেবে।’

টিআই/এমএআর