চিকিৎসকসহ করোনায় আক্রান্ত আট হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী
দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত তিন হাজার ২৪ জন চিকিৎসক ও দুই হাজার ১৪২ জন নার্সসহ মোট আট হাজার ৪৫২ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন।
সোমবার (১৯ জুন) চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিশনের (বিএমএ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়, চিকিৎসক আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা জেলায় ৮৫৮ জন, চট্টগ্রাম জেলায় ৪৯২ জন ও সিলেট জেলায় ৩৪৯ জন। এ তিন জেলায় চিকিৎসকরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বেশি। নার্সদের মধ্যে সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয়েছেন ঢাকায় ৮১৯ জন, ময়মনসিংহে ১৬৪ জন, সিলেট জেলায় ৮৩ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনজন ডেন্টাল সার্জন ও ১৬৬ জন চিকিৎসক। তাদের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেডিকেল চিকিৎসক ২৩ জন, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ৭৩ জন, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত/অবসরপ্রাপ্ত ৭ জন, বেসরকারি/জেনারেল প্র্যাকটিশনার্স ৬২ জন এবং আর্মি মেডিকেল কলেজে কর্মরত একজন রয়েছেন। এছাড়াও ডেন্টাল চিকিৎসকদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা দুই জন এবং বেসরকারি/জেনারেল প্র্যাকটিশনার্স রয়েছে একজন।
করোনায় দেশে প্রথম চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছিল গত বছরের ১৫ এপ্রিল। ওই দিন মারা যান সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দীন আহমদ (৪৭)। ডা. মঈন উদ্দীন আহমেদ করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে গিয়েই সংক্রমিত হয়েছিলেন। ঢাকার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর খবরে চিকিৎসক সমাজসহ সব পেশাজীবী শ্রেণি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।
চিকিৎসকদের মৃত্যুর তালিকায় যোগ হওয়া সবশেষ নামটি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. মোস্তফা কামাল। তিনি চলতি মাসের ১৩ জুলাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউএসটিসি) কার্ডিওলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
অল্প সময়ের ব্যবধানে এভাবে এত চিকিৎসকের মৃত্যু দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসির অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘করোনায় আমরা অনেক বিশেষজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ চিকিৎসককে হারিয়েছি। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি হতে অনেক সময় ও শ্রমের প্রয়োজন হয়। তারা দেশের সম্পদ। কষ্টের মধ্যেও গর্বের বিষয় হচ্ছে, জীবনের ঝুঁকি রয়েছে জেনেও সম্মুখসারির এই যোদ্ধারা পিছপা হননি, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।’
টিআই/জেডএস