বদলি তালিকায় মৃত ও অবসরে যাওয়া চিকিৎসক, কোভিড চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত চিকিৎসক ও আরটি-পিসিআর ল্যাবসহ অন্যান্য ল্যাব কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত চিকিৎসকের নাম থাকার কথা স্বীকার করে এর পেছনে ‘তথ্যগত অপ্রতুলতা’কে কারণ হিসেবে দেখিয়েছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বদলি আদেশ স্থগিত রাখতে বলেছে তারা।  

তালিকায় ভুল থাকার বিষয়টি স্বীকার করে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বলছে, কোনো হাসপাতালে সংযুক্তি আদেশ বাস্তবায়নে জটিলতা থাকলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের আদেশ বাস্তবায়ন স্থগিত রেখে আগামী ৮ জুলাইয়ের মধ্যে সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখপূর্বক তাদের তালিকা এ বিভাগের পার-১ অধিশাখার ই-মেইল (per1@hsd.gov.bd) এ প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলাে।

মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব মো. আবু রায়হান মিঞা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বদলি আদেশে ত্রুটি স্বীকার এবং নতুন এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের গত ৪ ও ৫ জুলাই তারিখের বিভিন্ন স্মারকে কোভিড রােগীদের সেবা প্রদানের জন্য সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক পদের চিকিৎসকদের বিভিন্ন পর্যায়ের হাসপাতালে সংযুক্তিতে পদায়ন করা হয়। তথ্যগত অপ্রতুলতার কারণে উক্ত সংযুক্তি আদেশসমূহে নিম্নরূপ চিকিৎসকদেরও পদায়ন করা হয়ে থাকতে পারে :

ক. আরটি-পিসিআর ল্যাবসহ অন্যান্য ল্যাব কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত চিকিৎসক

খ. কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত চিকিৎসক।

গ. মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের একমাত্র চিকিৎসক যিনি শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

এছাড়া চিকিৎসকদের বর্তমান কর্মস্থলের বিষয়ে তথ্যগত ভুল থাকার কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আদেশ ত্রুটিপূর্ণ হয়ে থাকতে পারে।

এর আগে গতকাল (৫ জুলাই) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জাকিয়া পারভীন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জীবেশ কুমার প্রামাণিক স্বপনকে বগুড়া ২৫০ শয্যা মোহান্মদ আলী হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু তিনি গত ৬ জানুয়ারি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

একইসঙ্গে গত বছরের ১০ আগস্ট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রেজওয়ানুল বারী শামীমকে নাটোর জেলা হাসপাতালে এবং রংপুর মেডিকেল কলেজের গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের ডা. ফেরদৌস আরা শেখ নামে আরও এক চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে। তিনিও মৃত বলে জানা গেছে।

এছাড়াও চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া রংপুর মেডিকেল কলেজের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মমতাজ বেগম ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. গিয়াসউদ্দিনকেও বদলি করা হয়েছে আদেশে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব জাকিয়া পারভীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল আমরা প্রায় সাড়ে ৫০০ অর্ডার তৈরি করেছি। আমরা তালিকাটি পিডিএফ থেকে নিয়েছিলাম। সেখানেই ভুল ছিল। এটি সংশোধন করা হচ্ছে।

টিআই/এসকেডি/জেএস