তামাকজনিত রোগে বছরে দেড় লক্ষাধিক মৃত্যু
তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর দেড় লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়াও তামাকজনিত এসব রোগের চিকিৎসা ব্যয় ও উৎপাদনশীলতার ক্ষতি হয় ৩০ হাজার কোটি টাকা।
রোববার (৬ জুন) ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ : চিকিৎসকদের ভূমিকা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এ কথা জানান।
বিজ্ঞাপন
বক্তারা বলেন, জনগণের মাথাপিছু আয় ৯ শতাংশ বাড়লেও ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্বল্পমূল্যের তামাকপণ্যের দাম বাড়ানো হয়নি। এর ফলে তামাকপণ্যের প্রকৃতমূল্য হ্রাস পাবে এবং তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী তামাক ছাড়তে নিরুৎসাহিত হবে।
ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের রেজিস্ট্রার (ক্লিনিকাল রিসার্চ) ডা. শেখ মুহাম্মদ মাহবুবুস সোবহান।
মূল প্রবন্ধে জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর তামাকের ক্ষতিকর প্রভাবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, টোব্যাকো অ্যাটলাস অনুসারে, বাংলাদেশে প্রতিবছর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে ১ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। আর ২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বছরে তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় ও উৎপাদনশীলতার ক্ষতি হয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
তিনি আরও বলেন, তামাকদ্রব্যের দাম বাড়িয়ে তামাকের ব্যবহার হ্রাস করার মাধ্যমে এই অকালমৃত্যু ও আর্থিক ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। অথচ, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শুধু উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটে শলাকাপ্রতি ৫০ পয়সা ও ৭০ পয়সা দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর বাইরে নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেট, বিড়ি ও ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের দাম ও কর অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, তামাক জনস্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ সবকিছুর জন্যই ক্ষতিকর। কোনো দিক থেকেই এর কোনো উপকারিতা নেই। তাই বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বেই তামাক চাষ নিষিদ্ধ করা উচিৎ।
ওয়েবিনারে সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক বলেন, কর বাড়িয়ে তামাকের দাম বাড়ানো হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও তরুণরা তামাক থেকে দূরে থাকবে।
ওয়েবিনারে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল (রিজভী), বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল মুয়িদ চৌধুরী এবং ডা. বিশ্বজিৎ ভৌমিক। এতে অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মোস্তাফিজুর রহমান।
টিআই/এইচকে