বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ মো. বাবুকে (৩৬) উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের ভেজথানি হাসপাতালে পাঠিয়েছে সরকার। রাজধানীর শনির আখড়ায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার চার মাসেও কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাকে দেশের বাইরে পাঠানো হলো। বোন সুবর্ণা তার সঙ্গে গেছেন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে গুলিবিদ্ধ মো. বাবুকে থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর তাকে বিদায় জানান।

এসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, আহতদের চিকিৎসায় সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। দেশে যাদের চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না, তাদের দেশের বাইরে পাঠানো হচ্ছে। এমন আরও কয়েকজন এ তালিকায় রয়েছেন।

জানা গেছে, যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়ার বাসিন্দা মো. বাবু মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানের ছেলে। তিনি নয়াপল্টনের একটি ছাপাখানায় কাজ করতেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বন্ধ হয়ে যায় ছাপাখানা। কিন্তু বাসায় বসে থাকেননি বাবু। নেমে পড়েন স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে। শনির আখড়ায় বাসা হওয়ায় সেখানে প্রতিদিন আন্দোলনে যেতেন তিনি।

আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় গঠিত টিমের সদস্য, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবির হিমু জানান, বাবুর পেটের নিচের অংশ দিয়ে ঢুকে কোমরের পেছন দিয়ে বের হওয়ার সময় বুলেট ছিন্নভিন্ন করে যায় তার খাদ্যনালী, মূত্রথলি আর কোমরের হাড়। চিকিৎসকরা তার পেটে দুইবার অপারেশন করেছেন। তার খাদ্যনালীর অনেকাংশ কেটে ফেলতে হয়। বাকি অংশ পেটে ফুটো করে আলাদা করে মলত্যাগের রাস্তা বানানো হয়। কিন্তু তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।

তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে বাবুকে বিএসএমএমইউতে স্থানান্তর করা হয়। কিছুদিন পর অবস্থা আরও খারাপ হয় তার। মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয় দেশের বাইরে পাঠানোর। ১৫ দিন আগে থাইল্যান্ডের চিকিৎসক এসে বাবুর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। পরে তারা তাকে থাইল্যান্ডে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন।

মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে জানানো হলে তিনি দ্রুত বাবুকে থাইল্যান্ডে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

টিআই/এসএসএইচ