দেশের ক্রান্তিলগ্নে ডিপ্লোমা চিকিৎসকেরা এগিয়ে এলেও বার বার অবহেলার শিকার হয়েছে। এমনকি চার বছরের কোর্স করা ৮০ হাজার ডিপ্লোমা চিকিৎসক থাকলেও প্রাথমিক চিকিৎসার সেবার প্রাণকেন্দ্র কমিউনিটি ক্লিনিকে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে আলাদা ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, এমন অবস্থার জন্য দায়ী পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি মোদাচ্ছের আলী।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের (অন্তর্বর্তীকালীন) শপথ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, যে ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আমরা দেখছি, সেটিতে সব শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণ দরকার। স্বাস্থ্য খাতে পরিবর্তন করতে হলে ডিপ্লোমা চিকিৎসকদেরও সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। এ সময় তাদের দাবির ব্যাপারে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমরা একটি বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়তেই নতুন বাংলাদেশ গঠন করেছি। আমরা চাইবো মেডিকেল অঙ্গনেও যেন কোনো বৈষম্য না থাকে।

প্রধান অতিথি অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. সামছুল হুদা (বড়) বলেন, দেশ স্বাধীনের পর ৭১ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত মানুষ চরম খাদ্য সংকটে পড়েছিল। চিকিৎসা পাওয়া ছিল খুবই দুষ্কর। ক্ষমতায় এসেই জিয়াউর রহমান ডিপ্লোমা মেডিক্যাল চিকিৎসকদের নিয়োগের চিন্তা করেন। কোর্স চালু হয়। এরপর দীর্ঘ সময় ডিপ্লোমা চিকিৎসকেরা দেশের চিকিৎসার সংকটে এগিয়ে এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে, ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের প্রতি অবহেলা করেছে। এমনকি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে চার বছরের কোর্স করা ডিপ্লোমাদের নিয়োগ না দিয়ে ছয় মাসের প্রশিক্ষিত একজন অনভিজ্ঞ ব্যক্তিকে সেখানে বসানো হয়েছে। ফলে মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। অথচ এগুলোতে ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের নিয়োগ দেওয়া গেলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হতো।

তিনি বলেন, চার বছরের একটা কোর্স করা ব্যক্তিকে রেখে ছয় মাসের প্রশিক্ষিত একটা ব্যক্তিকে বসানোর মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকার গোটা চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। এটাকেই বলে বৈষম্য। এ বি এম আব্দুল্লাহ আর মোতাচ্ছের আলী এই বৈষম্য তৈরি করেছেন। অবিলম্বে আমরা এই ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। ছাত্রজনতা বৈষম্য দূর করতে যে অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে, এর মধ্যদিয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ হবে। আমরা প্রান্তিক মানুষকে সেবা দিতে চাই।

টিআই/এমএসএ