দেশের স্বাস্থ্য সেবা খাত অপ্রতুল বরাদ্দ এবং দুর্নীতির কারণে রুগ্ন হয়ে পড়েছে। তাই দেশের স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষায় একটি আইন অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।

শনিবার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘অপ্রতুল বাজেট এবং দুর্নীতির বেড়াজাল : স্বাস্থ্যখাতের রুগ্নদশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ কথা বলেন।

সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ নামের নাগরিক সংগঠন এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে তারা বলেন, একটি সমতাভিত্তিক, অন্তর্ভুক্তি এবং জবাবদিহিতামূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য যৌক্তিক মতামতগুলো রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকের কাছে পৌঁছে দেওয়াই গোলটেবিল বৈঠকের উদ্দেশ্য।

এসময় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের অপ্রতুল বাজেট ও দুর্নীতির বেড়াজালে আটকে পড়া বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা বিশ্লেষণ করেন।

ডা. এম এইচ চৌধুরী লেলিন বলেন, আমাদের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ একেবারেই অপ্রতুল। এটা বাড়ানো হোক।

তিনি স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষা আইন বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে বলেন, দেশে একটি স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষা আইন অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। সেখানে পক্ষগুলোর দ্বায়িত্ব ও দায় নির্ধারণ করা থাকবে। দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষার মান নির্ধারণ এবং মেডিক্যাল ট্যুরিজম বিষয়ে গুরুত্ব দিতে স্বাস্থ্য খাতের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

ডা. আতিয়ার রহমান বলেন, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি সরকারি ও বেসরকারি, উভয় ক্ষেত্রেই ঘটেছে। তিনি এসব দুর্নীতি তদন্তের আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যখাতে অপ্রতুল বাজেট সত্ত্বেও এখানে কিন্তু দুর্নীতি ঠিকই হয়েছে। তিনি তাই এই খাতে দুর্নীতি নির্মূলে অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ করে নিয়োগ বাণিজ্যের মতো দুর্নীতি বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যক্ত করেন।

এছাড়া দেশের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এ দেশের মানুষের ব্যক্তিগত ব্যয়ের প্রায় ৪৪ শতাংশ চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যয় করতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় এখানে আরও বরাদ্দ জরুরি বলে অভিমত দেন তিনি।

এতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন সুমন বলেন, বাজেট ব্যয়ের ক্ষেত্রে যে দক্ষতা প্রয়োজন, সেটায় আমাদের ঘাটতি রয়েছে। বাজেট ব্যয়ের ক্ষেত্রে যদি দক্ষতার অভাব থাকে সেটাও কিন্তু অন্য একজনের জন্য দুর্নীতির সুযোগ করে দেয়। দক্ষতা বৃদ্ধিতে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ডা. কাজী সাইফউদ্দীন বেন নূরের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের ট্রেজারার অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর খান। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইউনিসেফের ন্যাশনাল কনসালটেন্ট ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাকুল আলম। এই খাতের বিভিন্ন দুর্নীতি ও এর ভূমিকা নিয়ে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন এমিনেন্স অ্যাসোসিয়েটস ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. মো. শামীম হায়দার তালুকদার।

আরএইচটি/জেডএস