বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত চক্ষুরোগীদের চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ দিতে এবার ফ্রান্স থেকে চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনেছে সরকার।

বাংলাদেশের চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সমন্বয় করে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এই চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ফ্রান্স থেকে আসা রেটিনা স্পেশালিস্ট ডা. লরিট। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথম দফায় ৪০ জন রোগী দেখার পর ডা. লরিট বাংলাদেশের চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবার প্রশংসা করেছেন।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকে টানা দুপুর পর্যন্ত বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহত চক্ষু রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেন ফ্রান্স থেকে আসা এই চিকিৎসক। পরবর্তীতে হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি।

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা সমন্বয়কারী রেয়াত লোদী বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন আহত চক্ষু রোগীদের বিশেষায়িত চিকিৎসা কার্যক্রম আমরা পরিচালনা করছি। প্রথম থেকেই এই কার্যক্রমে আমরা রোগীদের থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। প্রথম দফায় আমরা ৫ থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত নেপাল এবং চীন থেকে আসা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে আমরা আহত রোগীদের সেবা দিয়েছি। দ্বিতীয় দফায় এবার ফ্রান্স থেকে চোখের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসেছেন এবং সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেবা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে আমরা বিদেশি চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমে দেড় শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে যদি কারও আরও উন্নত সেবার প্রয়োজন হয়, তাহলে তাদের বিদেশে পাঠানোরও পরিকল্পনা রয়েছে।

চিকিৎসা কার্যক্রম প্রসঙ্গে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহত ৪০ জনের মতো রোগী আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আমরা পেশাগত দিক দিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের চিকিৎসকরা গত দুই মাস ধরে যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন, আমরা সঠিক ট্র্যাকে আছি কি-না, সেটি যাচাই করতে মূলত আমরা বিদেশি চিকিৎসকদের নিয়ে এসেছি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ফ্রান্স থেকে আসা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেবা দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, যারাই এ পর্যন্ত বিদেশ থেকে আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে আসছেন, প্রত্যেকেই আমাদের চিকিৎসকদের সেবায় সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য হলো, আমাদের চিকিৎসকরা আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিচ্ছেন এবং চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি থাকছে না।

প্রসঙ্গত, এর আগে গতকাল (২৩ সেপ্টেম্বর) চীনের ১০ সদস্যের এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল আহতদের দেখতে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতাল এবং জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি আহতদের চিকিৎসা কার্যক্রমও পরিদর্শন করেন।

পরবর্তীতে নেপাল থেকে আসেন আরেকদল চিকিৎসক। দ্বিতীয় দফায় আজ ৮ অক্টোবর ফ্রান্স থেকেও চোখের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেশে আসেন।

টিআই/এসকেডি