সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে (২০১০-২০১১ সাল) চুক্তিভিত্তিক অ্যাডহক (অস্থায়ী) ও বিভিন্ন সময়ে চুক্তিভিত্তিক (প্রকল্প) নিয়োগপ্রাপ্ত দুই হাজার ৩৪৬ জনকে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদ্যমান সরকারি চাকরিবিধি ভঙ্গ করে অবৈধভাবে এনক্যাডারমেন্টকরণ ও বিধিবহির্ভূত পদোন্নতি দেওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। একইসঙ্গে অবৈধভাবে অ্যাডহক নিয়োগ ও এনক্যাডারমেন্ট বাতিলের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ক্যাডাররা। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ডা. মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন ও সদস্যসচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে ক্যাডার পদগুলোতে ভিন্ন নিয়োগবিধির আওতায় নিয়োগপ্রাপ্ত অ্যাডহক ও প্রকল্প কর্মকর্তাদের পদায়ন ও পদোন্নতি দেওয়া শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু দুষ্কৃতকারী কর্মকর্তা। এখন পর্যন্ত ভুয়া পদোন্নতি, জনপ্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে পাঁচ শতাধিক ভুয়া পদায়ন, ক্যাডার কর্মকর্তাকে অ্যাডহকদের অধীন করা হয়েছে। এসব অবৈধ পদোন্নতি ও পদায়নের প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে ২০২২ সালে মামলা করা হয়েছে। মামলায় রুল জারি করা থাকলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের অনিয়মকারী শাখার কর্মকর্তারা অ্যাডহক ও প্রকল্প কর্মকর্তাদের পক্ষে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূত পদোন্নতি আদেশ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদায়ন শাখা পুনরায় অবৈধ পদায়ন আদেশ জারি করে।

তারা বলেন, যারা তাদের চাকরিজীবনে কখনো কোনো পরীক্ষা বা প্রশিক্ষণ নেননি, যারা বিসিএসে অকৃতকার্য হয়েও এনক্যাডার হয়েছেন, এমনকি এনক্যাডারের পরে পুনরায় বিসিএস ক্যাডারের পাঁচটি শর্ত থেকে মাফ পেয়েছে। শুধু তাই নয়, বিসিএস পাস কর্মকর্তাদের চেয়ে ওপরে স্থান পেয়েছেন। এসব কারণে ৩৫ হাজার ক্যাডার কর্মকর্তা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত ও ক্ষুব্ধ। আমরা উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, সরকারি কর্মকমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব অনিয়ম লিপিবদ্ধ করে জমা দিয়েছি। ক্যাডারকে অ্যাডহক (নব এনক্যাডার) কর্মকর্তাদের অধীন করার রেওয়াজ কোনো আইন ও বিধি সমর্থন করে না, শতভাগ অবৈধ।

এসময় স্বাস্থ্য ক্যাডারদের পক্ষ থেকে পাঁচটি দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো– সব ধরনের অবৈধভাবে স্থায়ীকরণ, পদোন্নতি এবং অবৈধ পদায়ন বাতিল করতে হবে। চলমান প্রমার্জনার সব প্রক্রিয়া স্থায়ীভাবে বাতিল ঘোষণা করতে হবে এবং এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নৈতিক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন ২৫তম ক্যাডারের সমন্বয়ে গঠিত ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা।

টিআই/এসএসএইচ