চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হকের কার্যালয় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন দৈনিক মজুরিতে কর্মরত ২২৮ জন কর্মচারী। 

তাদের দাবি, দীর্ঘ ১৮ বছর যাবৎ অনেকে কাজ করলেও ‘বিএনপি-জামায়াত’ ট্যাগ দিয়ে এসব কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী করা হয়নি, যদিও সাবেক উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদের সময়ে অর্থনৈতিক লেনদেন ও রাজনৈতিক পছন্দের অনেককেই স্থায়ী করা হয়েছে।

আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে তারা বিক্ষোভ করেন।

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেও চাকরি স্থায়ী না হওয়া এমন কর্মচারী আছেন সর্বমোট ২২৮ জনের মতো। তবে গত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিভিন্ন উপাচার্যের সময়ে আর্থিক লেনদেন, রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অন্তত ৯ শতাধিক কর্মচারীর চাকরি স্থায়ীকরণ করা হয়েছে। তবে যারা এতদিনেও স্থায়ী হতে পারেনি, সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে তারা ফুঁসে উঠেছে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৭ বছর যাবৎ ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ করেন রাসেল খান। তিনি বলেন, নতুন যে ভিসিই এসেছেন, তারা শুধুই ‘আশ্বাসের মূলা’ ঝুলিয়েছেন। কেউই তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেনি।  

রাসেল খান বলেন, স্থায়ী হওয়ার বাকি আছি সর্বমোট ২২৮ জন, যারা দৈনিক মজুরিতে কাজ করে আসছেন। আমাদের মধ্যে এমনও অনেকে আছেন যিনি দীর্ঘ ১৮ বছর যাবৎ কাজ করছেন, কিন্তু স্থায়ী হতে পারেননি। কারণ তারা নাকি বিএনপি-জামায়াতপন্থি। এ কারণে তাদের স্থায়ী করা হয়নি। বরং দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ৭ বছর যাবৎ কাজ করছি। একদিনের জন্যও আমাদের ছুটি নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মেই নাকি আমাদের কোনো ছুটি নেই, যে কারণে ঈদেও কোনো ছুটি নিতে পারি না। ছুটি নিতে হলে মজুরি কাটা হবে। এতো কষ্ট করে কাজ করার পরও আমার বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের অভিযোগ আনা হয়, যদিও আমি কোনোদিন করিনি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ল্যাব-অ্যাটেন্ডেনস বলেন, আমি ১২ বছর যাবৎ কাজ করছি। গত ভিসি শারফুদ্দিন বেশ কিছু চাকরি স্থায়ী করেছে, তারপরও এখন বাকি আছে ২২৮ জন। সব মিলিয়ে ৯০০ জনের বেশি কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী করা হলেও আমাদেরটা করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে আমাদের মামা-চাচা নাই, দলও করিনি। এজন্যই আটকে রেখেছে। যাদের হয়েছে তারা সুপারিশে এবং টাকা-পয়সাও লেনদেন হয়েছে শুনেছি। এবার যেহেতু নতুন সরকার এসেছে, এখন আমরাও আমাদের অধিকার চাই।

টিআই/এনএফ