ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি
সহপাঠীকে পিটিয়ে হাসপাতালে নিলেন অভিযুক্তরা
ঢাকা ডেন্টাল কলেজের জিসান নামের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সহপাঠীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাকে নির্যাতনের পর অভিযুক্তরাই হাসপাতালে নিয়ে যান।
ডেন্টাল কলেজের ৫৯তম ব্যাচের ওই শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাতে কলেজের ছাত্র হোস্টেলে নিজ কক্ষে নির্যাতনের শিকার হন। তার বাড়ি খুলনায়।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১ জুন) রাতে ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ঢাকা ডেন্টালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবীর বুলবুল। তিনি জানান, শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হুমায়ুন কবীর বুলবুল বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর চিকিৎসার অবস্থা দেখে এসেছি। আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। কিন্তু আমরা তো প্রশাসন, তার লিখিত অভিযোগের জন্য আমরা অপেক্ষা করিনি। সব বিষয় খতিয়ে দেখে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি পাঁচ সদস্যের একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, আজ জরুরি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. মোখলেছুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে ছাত্র হোস্টেল এবং ছাত্রী হোস্টেলের দুজন করে চার সুপারকে সদস্য করা হয়েছে।
ঢাকা ডেন্টাল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থী জিসানের সহপাঠী। এর মধ্যে তিনজন তার রুমমেট। অভিযুক্তরা হলেন– আকিব, জিম, হাসান, অমিত ও শাওন।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী জিসান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আমি ঘুমিয়ে পড়লে সাড়ে ১১টার দিকে কয়েকজন এসে আমাকে ওঠায়। বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তারা মারধর শুরু করে। ঘুম থেকে উঠিয়ে তারা চেয়ার দিয়ে আমাকে অনেক আঘাত করেছে। তারপর একটা কাগজ এনে ওইটা পড়তে বলেছে। আমি পড়িনি, তাই কাগজটা আমার মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। দাঁতে ব্রেস পরানোর কারণে সেটা বের করতে গিয়ে আমার হাত কেটে গেছে। পরে রাতেই তারা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
মারধরের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে ঈর্ষাকাতর হয়ে তারা মারধর করেছে। এমনকি তারা আমাকে শর্ত দিয়েছিল যে মা-বাবাসহ কারো সঙ্গেই কথা বলা যাবে না। ঘুম থেকে দ্রুত ওঠা যাবে না। এমনকি নামাজও পড়া যাবে না। অর্থাৎ তারা যা বলবে আমাকে তাই মানতে হবে। আমি অনেক এক্সট্রা-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি করতাম। এজন্য তারা আমার প্রতি ঈর্ষাকাতর ছিল।
তবে কলেজের একটি সূত্র বলছে, সম্প্রতি একই ব্যাচের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন মারধরের শিকার ওই ছাত্র। কিন্তু ওই ছাত্রীর আগেও একটি সম্পর্ক ছিল তার এলাকায়। এ ঘটনায় আগের বয়ফ্রেন্ড বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগীসহ তার বন্ধুদের হুমকিধমকি দিয়ে আসছিল। বিভিন্ন সময় কলেজে এসেও তাদের হয়রানি করে। এসব ঘটনার রেশ ধরেই তার সহপাঠীরা বাদানুবাদে জড়ান। এর পরিপ্রেক্ষিতে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
টিআই/এসএসএইচ