অফিসে কাজের চাপ, অতিরিক্ত চিন্তা-ভাবনা, উৎকণ্ঠা— সব মিলিয়ে এলোমেলো যাচ্ছে সবই। মানসিক চাপ বা স্ট্রেস শুধু মনকে বিপর্যস্ত করে তোলে তা নয়, ত্বকের ওপরও এর প্রভাব ফেলে।  

ত্বক আগের মতো উজ্জ্বল-ঝলমলে থাকে না। অকালেই বুড়িয়ে যায়। চোখের তলায় পুরু কালো দাগ। স্ট্রেস ত্বকেরও বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে।  

আমাদের মস্তিষ্ক ও ত্বকের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। চিকিৎসার পরিভাষায় একে বলা হয় ‘বাইডাইরেকশনাল পাথওয়ে।’ অর্থাৎ, সহজ করে বললে, দ্বিমুখী পথ। মন-মস্তিষ্কে যদি চাপ বাড়ে, তা হলে তার সরাসরি প্রভাব পড়ে ত্বকে। সেটা কী ভাবে?

অতিরিক্ত মানসিক চাপ ত্বকে কী কী পরিবর্তন আনে?
• মানসিক চাপ যত বাড়ে, ততই ত্বক তার জৌলুস হারাতে শুরু করে। ত্বকের সজীব ভাব আর থাকে না, খসখসে হতে শুরু করে। ব্রণ, ফুসকুড়ি দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে আবার সোরিয়াসিসের লক্ষণও ফুটে ওঠে।  সোরিয়াসিস হলে ত্বক শুকিয়ে মাছের আঁশের মতো হয়ে যায়। লালচে-খয়েরি ছাপ পড়ে যায় ত্বকে। অনবরত চুলকানি হতে থাকে। এই সোরিয়াসিস অনেক কারণেই হয়, যার মধ্যে একটি কারণ হলো অতিরিক্ত মানসিক চাপ।

• এমন অনেক মানুষ আছেন, যাদের দেখে মোটেই বয়স বোঝা যায় না। পঞ্চাশেও মনে হয় ত্রিশের। আবার অনেকে কম বয়সেই কেমন যেন বুড়িয়ে যান। এরও একটি বড় কারণ হলো দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ ও উদ্বেগ। দীর্ঘদিনের অযত্ন ও মনের ওপর বাড়তে থাকা চাপই জমতে জমতেই কিন্তু গালে কালো ছোপ, মেছতার দাগ পড়তে আরম্ভ করে। বয়সের আগেই গ্রাস করে বার্ধক্য। চিকিৎসকরা বলেন, শরীর ও মন যদি একসঙ্গে ভালো রাখা যায়, তা হলেই বয়স থমকে থাকবে আপনার হাতের মুঠোয়। 

• কম ঘুমানো, অত্যধিক মানসিক চাপ, অবসাদ, হরমোনের পরিবর্তন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস— এ সব কারণে চোখের চারপাশে কালো ছোপ পড়ে, যাকে আমরা ডার্ক সার্কেল বলে থাকি। অতিরিক্ত স্ট্রেস বা মানসিক চাপ ত্বকের কোলাজেন ও ইলাস্টিন প্রোটিন ভেঙে দেয়। শুধু তা-ই নয়, এই দুই প্রোটিন যাতে আর তৈরি হতে না পারে, সে চেষ্টাও করে। ফলে চামড়া কুঁচকে যেতে থাকে, চোখের নীচের চামড়া ফুলে যায় ও তাতে কালচে ছোপ পড়ে। ত্বকেও দাগছোপ পড়া শুরু হয়ে যায়।

• অকালপক্কতা, লাগাতার চুল পড়ার অন্যতম কারণই কিন্তু মানসিক চাপ। তা বাড়লে অকালেই চুল পাকার সমস্যা শুরু হয়। অনেকের ঘন ঘন চুল পড়তে থাকে।

এনএফ