গাছের কোঠরেও যদি মশা জন্মায়, তা হবে অশনি সংকেত
দেশে বিভিন্ন সময় ডেঙ্গু সংক্রমণের আচরণগত নানা পরিবর্তন ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম।
তিনি বলেন, ডেঙ্গুর ভেক্টরের আচরণগত পরিবর্তন এসেছে বলে জানিয়েছে কীটতত্ত্ববিদরা। আমরা জেনেছি ডেঙ্গু মশা রাতেও কামড়াচ্ছে এবং শুধুমাত্র পরিষ্কার পানিতে না জন্মে ময়লা পানিতেও জন্মাচ্ছে। এমনকি গাছের কোঠরেও ডেঙ্গুর লার্ভা জন্মাচ্ছে। গাছের কোঠরে যদি মশা জন্মানো শুরু করে, গ্রাম এলাকার জন্য এটি একটি আশনি সংকেত।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (৭ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ২০২৪ সালের ডেঙ্গুর প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক এসব কথা বলেন।
এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, আমরা জানি যে গ্রামে গাছ-পালা অনেক বেশি। এসব গাছের কোঠরে যদি মশা জন্মায়, তাহলে সেখান থেকে মশা মারার ব্যবস্থা করতে হবে, যা আমাদের জন্য অনেক বেশি কঠিন হবে।
তিনি বলেন, মশা মারার ক্ষেত্রে যেসব ওষুধ ব্যবহার করে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং জানিয়েছেন যে ফগিংয়ে কোনো মশা মারা যায় না। এছাড়া ভারতেও উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় বন্ধ করা হয়েছে ফগিং করা। আমরা এ বিষগুলো নোট নিয়েছি। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবো।
স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, আমরা ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের জানিয়েছে, তারা যদি সরকার থেকে অর্ডার পায় তাহলে তারা উৎপাদন শুরু করবে। যেসব কোম্পানি উৎপাদন করে থাকে তাদের সব ভ্যাক্সিন এবং স্যালাইনের উৎপাদনের জন্য একই প্ল্যান্ট। তাই অন্য কোনো ভ্যাক্সিনের সংকট যাতে না দেখা দেয়, সেজন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু শনাক্তকরণে দেশীয় আবিষ্কারের কীট উৎপাদন বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়ে ডা. এবিএম খুরশীদ আলম জানান, দেশীয় পদ্ধতিতে যে কীট আবিষ্কার হয়েছে তার কীট উৎপাদন বিষয়ে আরো বিষদভাবে পর্যালোচনা করা হবে।
ঢাকায় আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার নেই। এর ব্যবস্থা করতে পারলে অনেক রোগীকে সহজে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আরবান হেলথ কেয়ার থাকলে সাধারণ রোগীরা সেখানেই চিকিৎসা নিতে পারতো। কিন্তু দেখা যায় সব রোগী সরাসরি বড় হাসপাতাল গুলোতে যায়, এতে করে হাসপাতালের যাদের দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের ক্ষেত্রে দেরি হয়ে থাকে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) শাখার পরিচালক ডা. শেখ দাউদ আদনান, বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসের (বিআরআইসিএম) মহাপরিচালক ড. মালা খানসহ আরও অনেকে।
টিআই/এসএম