পাঁচ দিনেও জ্ঞান ফেরেনি সেই আয়ানের, শোকে পাথর বাবা
ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খৎনা করাতে এসে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসকের ভুলে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পাঁচ বছরের শিশু আয়ান। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গত পাঁচ দিনেও জ্ঞান ফেরেনি শিশুটির। চিকিৎসা চলছে একই কোম্পানির গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে রেখে। এদিকে ছেলের এই করুণ অবস্থায় শোকে অনেকটাই পাথর হয়ে আছে আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হয় আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ এবং ইউনাইটেড হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফুল হকের। আয়ানের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ঢাকা পোস্টকে তারা নিশ্চিত করে।
বিজ্ঞাপন
শামীম আহমেদ বলেন, আজকে ৫ দিন হয়ে গেল, অথচ আয়ানের এখনও জ্ঞানই ফিরল না। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কোনো ডিক্লেয়ারেশন দিচ্ছে না। এভাবে কতদিন চলবে তারাই ভালো জানে। ঘটনার পর থেকেই তাকে ফুল ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, আয়ান আমার পরিবারের বড় ছেলে। তার ৬ মাসের ছোট্ট একটা বোন আছে। আয়ানের মা কান্নাকাটি করতে করতে নিজেও অসুস্থপ্রায়। ইউনাইটেডের এক ঘটনায় আমার পুরো পরিবারে অন্ধকার নেমে এসেছে।
আয়ানের স্বজন হাবিবুর রহমান বলেন, আমার নিজের বাচ্চা, কত আত্মীয়স্বজনের বাচ্চাকে খৎনা করিয়েছি, কারো ক্ষেত্রেই কোনো সমস্যা হয়নি। আয়ানের ক্ষেত্রে তাহলে এমন কী হলো যে, পাঁচ দিনেও জ্ঞান ফিরছে না? যদি আয়ানের কিছু হয়ে যায়, একটা জীবন কি ইউনাইটেড হাসপাতাল ফিরিয়ে দিতে পারবে? আমি মনে করি— এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বড় শাস্তি হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, আয়ানের এমন অবস্থার পর থেকে তার বাবা-মায়ের অবস্থা খুবই খারাপ। বাবা তো যেন পাথর হয়ে গেছে। কিছু জিজ্ঞেস করলে শুধু হ্যাঁ-না বলে, অতিরিক্ত কোনো কথাই বলে না। এমনকি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়াও করছে না।
আরও পড়ুন
ইউনাইটেড হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফুল হক বলেন, শিশু আয়ানকে এখনো মৃত বলার কোনো সুযোগ নেই। তবে তার অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত আছে, যেটিকে আমরা ক্রিটিক্যাল বলছি। আমাদের চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো শিশুটিকে বাঁচানোর।
তিনি বলেন, আয়ানের পরিবারকে আমাদের মেডিকেল বোর্ড প্রতিনিয়ত ব্রিফ করছে। চিকিৎসকরা সর্বশেষ জানিয়েছেন— এখনো তার পালস কাজ করছে। বর্তমানে তার ভাইটেলসগুলো (প্রেশার, সুগার) ভালো আছে, তবে নিউরোলজিকালি আনস্টেবল।
কতদিন লাইফ সাপোর্টে রাখা হবে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চটা দিয়ে চাইব রোগীটি যেন ফিরে আসে। তারপরও যদি অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় আসে, তাহলে পরিবার এবং ডাক্তার সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নেবে।
টিআই/এমজে