‘বিচারহীনতায়’ বাড়ছে চিকিৎসকদের ওপর হামলা-নির্যাতন
দেশে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলা-নির্যাতন। সম্প্রতি রাজশাহীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় জনপ্রিয় চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম কাজেম আলী আহমেদ হত্যাকাণ্ডে নতুন করে আলোচনায় এসেছে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি।
চিকিৎসক নেতারা বলছেন, ডা. কাজেমের মৃত্যুর ছয় দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কোনো যোগসূত্র খুঁজে বের করতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। আটক হননি হত্যাকারীদের কেউ। বরং এ ঘটনায় অনেকটা অদৃশ্য নীরবতা দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে।
বিজ্ঞাপন
একইসঙ্গে বিচারহীনতার এমন সংস্কৃতির কারণে চিকিৎসকদের ওপর হামলা বাড়ছে বলেও মনে করছেন চিকিৎসক নেতারা।
জানা গেছে, রোববার (২৯ অক্টোবর) কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে গভীর রাতে রাজশাহী মহানগরীর বর্ণালী মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলায় খুন হন বিশিষ্ট চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম কাজেম আলী আহমেদ।
প্রতিদিনের মতো রোববার রাতে রোগী দেখে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ডা. গোলাম কাজেম আলী আহমেদ। পথে বর্ণালীর মোড়ের খানিকটা আগে রাজীব চত্বরের বিপরীত পাশে মসজিদের নিকট তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে একদল দুর্বৃত্ত। অতর্কিত তার বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় তারা। গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তা থেকে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। কিছুক্ষণের মধ্যে রাত ১টার দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি
চিকিৎসক সূত্রে জানা যায়, নগরীর লক্ষ্মীপুরে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়মিত রোগীদের চিকিৎসা দিতেন ডা. গোলাম কাজেম আলী আহমেদ। প্রতিদিনের মতো রোববার রাতে রোগী দেখে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথে বর্ণালীর মোড়ের খানিকটা আগে রাজীব চত্বরের বিপরীত পাশে মসজিদের নিকট তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে একদল দুর্বৃত্ত। অতর্কিত তার বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় তারা। গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তা থেকে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। শুরুতে সাধারণ ওয়ার্ডে (৫ নম্বর) ভর্তি করা হলেও পরে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে রাত ১টার দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন
একের পর এক চিকিৎসকের ওপর হামলা, রক্তাক্ত চিকিৎসাসেবা
২৯ অক্টোবর ডা. কাজেমের ওপর হামলার পরের দিন (৩০ অক্টোবর) চেম্বারে রোগী দেখাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মো. রাজু আহম্মেদ নামক এক আবাসিক চিকিৎসকের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তিনি মারাত্মকভাবে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। হামলার পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রথমে শারীরিক অবস্থা কিছুটা খারাপ থাকলেও বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।
এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর রাত ১০টায় ময়মনসিংহ মেডিকেলে কর্মরত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর রোগীর স্বজন ও পুলিশ ক্যাম্পের কতিপয় বিপথগামী সদস্য হামলার চালান। আহত হন হাসপাতালে কর্মরত তিন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও পাঁচ মেডিকেল শিক্ষার্থী। যদিও হামলার ঘটনার পর দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপরও স্থানীয় চিকিৎসকদের মধ্যে একটা চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর রাত দেড়টার দিকে ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর হামলা করেন রোগীর স্বজনরা। হামলায় আট ইন্টার্ন চিকিৎসক ও ছয় মেডিকেল শিক্ষার্থী আহত হন।
গত ২৫ জুলাই রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিডফোর্ট) হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় একজন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থী ও একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক গুরুতর আহত হন। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের থানা হাজতে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে নিজেদের ভুল স্বীকার এবং দুঃখ প্রকাশ করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবেন না— এমন মুচলেকায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
কাজেম হত্যার প্রতিবাদে রাজশাহীতে ধর্মঘট, বিক্ষোভ ছড়াবে দেশব্যাপী
রাজশাহীতে ডা. কাজেম আলী আহমেদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), রাজশাহী। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় এ আন্দোলন সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন
রাজশাহী বিএমএ ওই ঘটনায় গতকাল শনিবার (৪ নভেম্বর) এবং রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। আগামীকাল সোমবার (৬ নভেম্বর) পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী কর্মসূচি প্রদান করা হবে বলে জানান বিএমএ নেতারা।
এর আগে গত সোমবার (৩০ অক্টোবর) রাজশাহীর সব প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রাখা হয়। পরের দিন মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টায় মানববন্ধন ও কালো ব্যাচ ধারণ কর্মসূচি পালন করেন চিকিৎসকরা।
বিচারহীনতায় বাড়ছে হামলা-নির্যাতন : বিডিএফ
বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশনের (বিডিএফ) মুখপাত্র ডা. নিরুপম দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ডা. মো. কাজেম আলী চেম্বার থেকে বের হন। সেখান থেকে বাসায় যাওয়ার পথে একদল সন্ত্রাসী তার পথরোধ করে অতর্কিত হামলা চালায় এবং মারাত্মকভাবে আহত করে। তারপর হাসপাতালে যাওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
‘চিকিৎসকদের ওপর যে হামলাগুলো হচ্ছে, এর অন্যতম কারণ হলো বিচারহীনতার সংস্কৃতি। একটা ঘটনার যদি বিচার না হয়, অপরাধীরা যদি ছাড় পেয়ে যায়, তাহলে সন্ত্রাসীরা আরো দুঃসাহস দেখাবে। আপনাদের হয়তো মনে আছে খুলনার রাইসা ক্লিনিকের মালিক ডা. মো. আব্দুর রাকিব খাঁনের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে। ওনার হত্যার বিচারের জন্য আমাদের অনেক লম্বা একটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। রাকিব খানের পরিবার ও চিকিৎসক সমাজকে অনেক জায়গায়, অনেকের পেছনে ঘুরতে হয়েছে।’
‘এসব হত্যাকাণ্ডের যদি দ্রুততম সময়ে বিচার না হয়, তাহলে কিন্তু এ ধরনের হামলা-হত্যাকাণ্ড হতেই থাকবে। এমনকি যদি অন্যরা দেখে যে, এসব ঘটনার বিচার হয় না, চাইলেই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে আপস-মীমাংসা করা যায়, তাহলে বরং দিনদিন এসব ঘটনা বাড়বে।'
চিকিৎসকদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে শিগগিরই : ডা. নিরুপম দাস
কোথায় গিয়ে বিচার আটকে যায়— জানতে চাইলে ডা. নিরুপম দাস বলেন, বিচার হচ্ছে না বিভিন্ন কারণে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো স্থানীয় প্রভাব। প্রায় সময় দেখা যায় কোনো একজন চিকিৎসক কর্মক্ষেত্রে হামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু স্থানীয়দের প্রভাবে সেই চিকিৎসক আপস করতে বাধ্য হচ্ছেন। এমনকি চিকিৎসক যদি আপস না করে থানায় গিয়ে মামলা করেন তাহলে স্থানীয় ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অপরাধীরা বিচারের আওতায় আসছেন না।’
আরও পড়ুন
এ চিকিৎসক নেতা আরো বলেন, ডা. কাজেম হামলার শিকার হয়ে মারা গেলেন। কিন্তু কারা হামলা করল, কেন হামলা করল, ঘটনার পেছনের কী কারণ— সেটা এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পারলাম না। এ ঘটনাগুলোতে কোনো আসামি গ্রেপ্তার হচ্ছে না, মামলা হলে সেটা আইন-আদালতে গিয়ে আটকে যাচ্ছে, কোনো বিচার হচ্ছে না। এসব কারণে চিকিৎসকদের ওপর হামলা-নির্যাতন দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে। অন্তত দু-চারটা ঘটনার যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতো, তাহলে এ ধরনের ঘটনা অনেকটা কমে আসত।
বিএমএ-স্বাচিপসহ চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠনগুলোর ভূমিকা প্রসঙ্গে ডা. নিরুপম দাস বলেন, চিকিৎসকদের সংগঠনগুলোর অধিকাংশই লেজুড়বৃত্তিক। তারা নিজেদের বৃত্তের বাইরে কোনো চিন্তা বা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এ ধরনের কিছু কারণে চিকিৎসক পেশাটা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। এসব কারণে চিকিৎসক সমাজে একটা নীরব ক্ষোভ জমা হচ্ছে, যার বহিঃপ্রকাশ হয়তো খুব শিগগিরই আমরা দেখতে পাব। আমরা চাই ডা. কাজেমের হত্যাকারীরা দ্রুত আইনের আওতায় আসুক। অন্যথায়, বিডিএফ কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেবে।
মর্মাহত স্বাচিপ, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজশাহীতে চিকিৎসক খুনের বিষয়টি খুবই ন্যক্কারজনক। খুনের ছয় দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত ঘটনার মূল কারণ বের করতে না পারাটা দুঃখজনক। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা খুবই মর্মাহত। আমরা চাই অপরাধী যে-ই হোক অবিলম্বে দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।
‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের স্থানীয় স্বাচিপের নেতৃবৃন্দ কাজ করছেন। তারা মারা যাওয়া চিকিৎসক পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন, প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলছেন। এক কথায়, আমাদের লোকজন এ ঘটনায় তৎপর। আমরা আশা করি খুব শিগগিরই পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করে হত্যাকারীদের শনাক্ত এবং আইনের আওতায় আনা হবে।’
কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকরা অনিরাপদ : ডা. জামাল
ডা. জামাল উদ্দিন বলেন, সার্বিকভাবে চিকিৎসকরা তাদের কর্মক্ষেত্রে খুবই অনিরাপদ। বিষয়টি নিয়ে স্বাচিপ খুবই তৎপর। আমরা চাচ্ছিলাম চিকিৎসকদের সুরক্ষায় শক্তিশালী একটা আইন হোক। সেই আইন প্রস্তুত হয়ে এখন শেষ পর্যায়ে আছে। যদিও সেটা বাস্তবায়ন হতে কিছুটা সময় লেগে যাচ্ছে। আমরা মনে করছি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে চিকিৎসা সুরক্ষা আইন আটকে আছে। খুব তাড়াতাড়ি জটিলতাগুলো কাটিয়ে চিকিৎসকদের সুরক্ষায় একটা শক্তিশালী আইন প্রতিষ্ঠিত হবে।
‘চিকিৎসকরা যদি কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা না পান, নিত্যনৈমিত্তিকভাবে তারা হামলা ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, তাহলে তারা কর্মক্ষেত্রে যেতেই ভয় পাবেন। এ ছাড়া, চিকিৎসকদের মধ্যে যদি নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে ভীতি আর উৎকণ্ঠা কাজ করে, তাহলে তাদের কাছ থেকে কখনোই ভালো চিকিৎসাসেবা আমরা আশা করতে পারি না। ফলে রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।’
সমাজে অস্থিরতা বিদ্যমান, বহিঃপ্রকাশ চিকিৎসক হামলায় : বিএমএ
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (স্বাচিপ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নই। কিছুদিন আগে একজন চিকিৎসক মারা গেলেন ফ্ল্যাটের কমিটি গঠন নিয়ে, সেটা তো তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। রাজশাহীতে ডা. কাজেম নামক আরেকজন চিকিৎসক মারা গেলেন। আমরা এখন পর্যন্ত জানি না কেন তাকে মারা হলো? আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন
এখন পর্যন্ত হত্যার কারণ উদঘাটন হলো না, কোনো আসামি গ্রেপ্তার হলো না— বিষয়টি কীভাবে দেখছেন। উত্তরে তিনি বলেন, ‘হামলার ঘটনার ছয় দিন হয়ে গেল। কিন্তু এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাউকে আটক করতে পারল না, হামলার কারণও বের করতে পারল না। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা চাই হামলাকারী যে-ই হোক, দ্রুততম সময়ে যেন তাদের আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।’
বিএমএ মহাসচিব বলেন, ‘চিকিৎসকদের ওপর এসব হামলায় চিকিৎসক সমাজ খুবই ক্ষুব্ধ। তারা চায় চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনাগুলো যেন দ্রুত বিচার-আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। চিকিৎসকদের এ দাবিগুলো দিনের পর দিন অগ্রাহ্য করাটা কারো জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না।’
‘বর্তমানে সমাজে একধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকরা হামলার শিকার হন। এটা হলো ইনটেনশনাল। চিকিৎসকদের হাসপাতালে গিয়ে হামলা করবে, এটাও ইনটেনশনাল। সামাজিক অস্থিরতা হলো, আপনি বাজার করতে গেলেন, সেখানে আপনাকে হামলা করা হলো, আপনাকে হত্যা করা হলো। আমরা মনে করি চিকিৎসকদের ওপর হামলা-নির্যাতন ইনটেনশনালি হোক বা সামাজিক অস্থিরতার কারণে হোক, দুটাই নিন্দনীয়। হামলাকারী যে-ই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা খুবই জরুরি। অন্যথায়, এসব ঘটনা আরো বাড়বে এবং চিকিৎসকদের বড় একটা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আমাদের দেখতে হবে।’
ডা. কাজেমের মৃত্যুতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শোক
রাজশাহীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় ডা. কাজেম আলী আহমেদ নামের এক চিকিৎসকের খুনের ঘটনায় শোক জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একইসঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনাও জানানো হয়েছে।
শোকবার্তায় বলা হয়, আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, ২৯ অক্টোবর রাতে রাজশাহীতে ডা. মো. কাজেম আলী আহমেদ দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৪২তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন এবং পরবর্তীতে তিনি একজন চর্ম, এলার্জি, যৌন, কুষ্ঠ রোগ বিশেষজ্ঞ ও কসমেটিক সার্জন হিসেবে রাজশাহীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।
‘ডা. মো. কাজেম আলী আহমেদের অকাল মৃত্যুতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিবার শোকাভিভূত। আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।’
টিআই/এমএআর/