বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নানা শারীরিক সমস্যা শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে। আর্থ্রাইটিস তার মধ্যে অন্যতম। 

আর্থ্রাইটিসের দু’টি ভাগ। অস্টিয়ো আর্থ্রাইটিস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস। আপাতভাবে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসকে শুধু অস্থিসন্ধিতে এবং পেশিতে ব্যথা বলেই মনে করা হয়। তবে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস শুধু তা নয়। এর জেরে হাড়ে ব্যথার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই রোগ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে ফুসফুস, হৃদ্‌যন্ত্র এবং রক্তনালিতেও সমস্যা হয়। এমনকি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের কারণে দৃষ্টিশক্তিও কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় চোখ। আর্থ্রাইটিসের কারণে পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকেও বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। আর্থ্রাইটিসের প্রভাব পড়ছে চোখে, কোন লক্ষণগুলি দেখে তা বুঝবেন? 

চোখ শুকিয়ে যায়, জ্বালা করা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে টনটনে ব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টিশক্তি, চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিলে ফেলে রাখা ঠিক হবে না। ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব অপথ্যালমোলজি’ বিভাগের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন— আর্থ্রাইটসের প্রভাব যাতে চোখে না পড়ে, তার জন্য বিশেষ সতর্ক থাকা জরুরি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আর্থ্রাইটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। তার জন্য নিয়ম করে ওষুধ খাওয়া ছাড়াও জীবনযাপনেরও আনতে হবে বদল।  

বাতের ব্যথা বৃদ্ধির একটি প্রধাণ কারণ শরীরে ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়ামের ঘাটতি। ফলে নিয়মিত এই দুটি উপাদান বেশি পরিমাণে নিলে আর্থ্রাইটিসের বাড়াবাড়ি আটকানো যেতে পারে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন পরিকল্পিত, নিয়ন্ত্রিত এবং ডাক্তারের পরামর্শ মাফিক খাওয়াদাওয়া। ওজন কম থাকলে হাড়ের ওপর চাপ বেশি পড়বে না, ফলে ব্যথা প্রতিরোধ করা যাবে অনেকটাই।

নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। এর ফলে হাড়ের সংযোগস্থল সক্রিয় থাকবে, ফলে ব্যথা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আর্থ্রাইটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকলে অন্য কোনও শারীরিক সমস্যাও জন্ম নেওয়ার সুযোগ পাবে না। 

সাঁতার আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমানোর ভীষণ কার্যকরী। নিয়মিত সাঁতার কাটলে পেশিতে চাপ কমে যায়, দেহে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। গবেষণা বলছে হাঁটু ও নিতম্বের জোরও বাড়ে এই ধরনের শরীরচর্চায়। 

এনএফ