অফিসে একটানা বসে কাজ করলে অনেক সময় হাত নাড়াচড়া করতে গেলে কাঁধে প্রবল যন্ত্রণা হয়। মনে হয়—কাঁধ যেন শক্ত হয়ে গেছে। এই সমস্যাটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’। মূলত বয়স ৪০ পেরোনো ব্যক্তিদের এ সমস্যা বেশি হয়। এছাড়া পুরুষদের চেয়ে নারীরা এ সমস্যায় বেশি বেশি আক্রান্ত হন।

প্রথমত প্রাথমিক পর্যায় কাঁধ ঘোরাতে গেলে তীব্র যন্ত্রণা হয়। সময় যত এগোতে থাকে, ততই ব্যথা অসহ্যকর হয়ে ওঠে। ঘাড় ও কাঁধের অংশ শক্ত হয়ে যায়।

চিকিৎসকরা বলছেন, মূলত ডায়াবিটিস, থাইরয়েড, হার্টের আসুখ থাকলে ফ্রোজেন শোল্ডারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে গেলে কিংবা কোনও চোট-আঘাতের কারণেও এ সমস্যা বাড়তে পারে।

যা করলে রেহাই পাবেন

এক.
এই সমস্যা থেকে বাঁচতে ঘুমের সঙ্গে কোনও আপস করা যাবে না। তবে ঘুমোনোর সময়ে খেয়াল রাখতে হবে শোয়ার ধরন ঠিক থাকে। ভুলভাবে শোয়ার ফলে ঘাড়ের ব্যথা উল্টো বেড়ে যেতে পারে। খুব বেশি উঁচু কিংবা শক্ত বালিশ নিয়ে ঘুমোবেন না।

দুই.
অফিসে কাজ করতে করতে যখন ক্লান্ত লাগবে, কাঁধে যন্ত্রণা হবে তখন চেয়ারে বসে না থেকে অন্তত দশ মিনিট বিরতি নিন। সেখানেই একটু হাঁটাহাঁটি করুন। এছাড়া হাতের ব্যায়াম করুন।

তিন.
‘লং ড্রাইভ’-এ যেতে অনেকেই পছন্দ করেন। কিন্তু ফ্রোজেন শোল্ডার থাকলে একটানা অনেকক্ষণ গাড়ি চালাবেন না, এতে সমস্যা আরও বেড়ে যাবে।

চার.
যতটা সম্ভভ নিজেকে মানসিক চাপ মুক্ত রাখুন। মানসিক চাপ, উদ্বেগ, চিন্তা বাড়লে ঘুম কম হবে, এতে ক্লান্তি থেকে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।

পাঁচ. 
প্রতিদিন কিছুটা সময় ব্যায়াম করুন। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ঘাড়ের হালকা ব্যায়াম করুন। এতে ঘাড় সচল থাকবে। তবে যোগাসন বেশ কার্যকর। মার্জারাসন, সেতুবন্ধনাস, গরুড়াসন, গোমুখাসনের মতো আসন নিয়মিত করলে এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন।

প্রচণ্ড ব্যথা হলে যা করবেন

ঘাড়ে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হলে হালকা গরম পানিতে একটু লবণ মিশিয়ে গোসল করুন। গোসল করার সময়ে ঘাড় নাড়াচাড়া করবেন না। এতে আস্তে আস্তে ঘাড়ের পেশিগুলো শিথিল হতে শুরু করবে। এছাড়া আইস প্যাক চাপা দিয়ে রাখতে পারেন এতেও সঙ্গে সঙ্গে আরাম পাবেন। এছাড়াও ঘাড়ের উপর হিটিং প্যাড চেপে রাখুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে ঘাড়ে ব্যথা কমবে। তবে সমস্যা বাড়াবাড়ির পর্যায় পৌঁছলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

এমএসএ