ক্যানসারে বেশি মৃত্যু নারীদের! কারণ জানলে আজই সতর্ক হবেন
পুরুষের তুলনায় ক্যানসারে বেশি মৃত্যু হচ্ছে নারীদের!২০২০ সালে ভারতে স্তন ক্যানসার, জরায়ু ক্যানসার এবং ওভারিয়ান ক্যানসারের কারণে বেশিরভাগ মহিলা মারা গেছেন।
ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্তের তালিকায় অন্যান্য অন্যান্য দেশেরর চেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় ভারত৷ প্রাণঘাতী ক্যানসার ভারতীয় নারীদের সামনে ভয়াল রূপ ধারণ করেছে। সম্প্রতি, ল্যানসেট ম্যাগাজিন ভারতের নারীদের মধ্যে ক্যানসার সম্পর্কে নারী, শক্তি এবং ক্যানসার নামে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে, যেখানে এ নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে দুই-তৃতীয়াংশ নারীকে সহজেই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো যেত কিন্তু সচেতনতা ও অন্যান্য অনেক কারণে তাদের বাঁচানো যায়নি। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ভারতে প্রায় ৬৯ লাখ নারীর ক্যানসারের কারণে মৃত্যু রোধ করা যেত এবং ৪০ লাখ নারীর ক্যানসারের চিকিৎসা করা যেত।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২০ সালে ভারতে স্তন ক্যানসার, জরায়ু ক্যানসার ও ওভারিয়ান ক্যানসারের কারণে বেশিরভাগ নারী মারা গেছেন।
অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস এর সহকারী অধ্যাপক ডা. অভিষেক শঙ্কর বলেন, ক্যানসারের যত্ন সম্পর্কিত লিঙ্গ-ভিত্তিক আচরণ নিঃসন্দেহে এর জন্য একটি বড় কারণ। পুরুষদের যেভাবে যত্ন নেওয়া হয় নারীদের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া হয় না। এই জিনিসগুলো দরিদ্র সমাজে সবচেয়ে বেশি হয়। যদিও কিছু ক্যানসার রয়েছে যা পুরুষ এবং নারীদের মধ্যে সমানভাবে দেখা যায়, যেমন ধূমপান এবং অ্যালকোহল থেকে সৃষ্ট ক্যানসার৷ তবে পুরুষদের তুলনায় নাড়িদের ক্যানসার কারণে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি হয়।
ডা. অভিষেক শঙ্কর বলেন, তথ্যের অভাবও আরও একটি বড় কারণ, যার কারণে নারীরা সময় মতো এই রোগ নির্ণয় করতে পিছিয়ে থাকেন। স্তন ও জরায়ুর ক্যানসার নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়৷ বেশিরভাগ নারীরাই পুরুষ ডাক্তারের কাছে এর চিকিৎসা করাতে দ্বিধা বোধ করেন। যার ফলে রোগ শনাক্ত করতে বিলম্ব হয় এবং বিলম্বই ক্যানসারের মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ।
সাফদরজং হাসপাতালের গাইনোকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সরিতা শামসুন্দর বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হল, স্তন ও জরায়ুর ক্যানসারের ক্ষেত্রেই নাড়িরা দেরিতে হাসপাতালে পৌঁছান, যেখানে তাড়াতাড়ি শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। স্তন ক্যানসারের জন্য প্রতিটি নারীর নিজেকে সনাক্ত করা উচিৎ। এ ছাড়া বছরে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বয়স ৪০ পেরিয়ে যাওয়া মহিলাদের বছরে একবার ম্যামোগ্রাফি করা উচিৎ যাতে তারা স্তন ক্যান্সার থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারেন। স্তনে কোনও ধরনের পিণ্ড দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
ডা. শামসুন্দর জানান, জরায়ু মুখে ক্যানসার হলে সেখানকার টিস্যু অনেক আগেই বিভিন্ন ধরনের হয়ে যায়। এটি খুব সহজে চিকিৎসা করা যেতে পারে৷ এটি খুব সহজেই নির্মূল করা যায় এবং এমনকি একজন প্রশিক্ষিত নার্সও এটি সহজেই করতে পারে। যখন এটি চিকিত্সা না করা হয় তখন জরায়ুর ক্যানসার হয়। জরায়ুতে কিছু সমস্যা হলেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত, তাহলে সহজেই এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়৷
এমএসএ