রাজধানীসহ সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক সংকট চলছে বহুদিন ধরে। কোভিড মহামারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এর আগে কিছু চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হলেও চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে নতুন করে এ সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় দ্রুততম সময়ে পৃথক তিনটি বিসিএসে অন্তত আরও ছয় হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

চিকিৎসা-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অধিদপ্তরের এ চাহিদা বাস্তবায়ন হলে হাসপাতালগুলোতে সেবার মান বাড়বে। পাশাপাশি কমবে রোগীদের হয়রানি।

৩৯তম ও ৪২তম বিসিএসের মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ হলেও বিরাট জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে তা যথেষ্ট নয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও গবেষণা বিভাগ থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নতুন চিকিৎসক নিয়োগে বিশেষ বিসিএসের আহ্বান জানিয়ে একটি চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিদ্যমান স্বাস্থ্যব্যবস্থায় চিকিৎসক সংকট নিরসন এবং স্বাস্থ্য ও সেবার মান উন্নয়নসহ নানাবিধ কারণে ছয় হাজার চিকিৎসক নিয়োগের প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে।

কেন বিশেষ বিসিএসে বড় নিয়োগ

একসঙ্গে ছয় হাজার চিকিৎসক নিয়োগ কতটা জরুরি— সে প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীতকরণ, ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীতকরণ, বিভিন্ন জেলা সদর হাসপাতালসমূহ জেলা ভেদে ১০০ থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ কার্যক্রম শেষ হলে সেবা দেওয়া অব্যাহত রাখতে চিকিৎসক নিয়োগ প্রয়োজন।

এ ছাড়া বিভাগীয় শহরে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, পাঁচটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিলেট, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী ও ফরিদপুর) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন কার্যক্রমসহ বিভিন্ন প্রজেক্ট চলমান রয়েছে। পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্যসেবা চলমান রাখতে আরও চিকিৎসক প্রয়োজন। এমনকি সরকারের ইউনিভার্সেল হেলথ কাভারেজের লক্ষ্য অর্জন এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য জনবল নিয়োগ প্রয়োজন।

বর্তমানে ৩২ হাজার ৪৯৬টি সরকারি চিকিৎসক পদ সৃষ্টি করা আছে। এর মধ্যে ২৬ হাজার ৬৪৮টি পদে চিকিৎসক পদায়িত হয়েছেন। বাকি পাঁচ হাজার ৮৪৮টি পদ খালি আছে।

বড় কারণ হিসেবে অধিদপ্তর বলছে, প্রতি বছর সরকারি চিকিৎসকের একটি অংশ পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনে অধ্যয়নরত থাকেন। তাই প্রান্তিক সেবাকেন্দ্র, উপজেলা ও জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সেবা ও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি বছর নির্দিষ্ট সংখ্যক সরকারি চিকিৎসক অবসর গ্রহণ করে থাকেন, যা প্রতিনিয়ত চিকিৎসক-শূন্যতা তৈরি করছে। একইসঙ্গে ৩৯তম ও ৪২তম বিসিএসের মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ হলেও এ বিরাট জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে তা যথেষ্ট নয়।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, অধিদপ্তরের পাঠানো সুপারিশপত্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছালেও এ বিষয়ে কোনো তোড়জোড় শুরু হয়নি। বিষয়টি এখনো বিবেচনার পর্যায়ে রয়েছে।

শূন্য আছে প্রায় ৬ হাজার পদ

রাজধানীসহ সারা দেশের হাসপাতালগুলোর সেবা পরিধি ও শয্যা সংখ্যা বাড়লেও পুরোনো জনবল কাঠামো দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। এরপরও সর্বমোট যে সংখ্যক পদ সৃষ্টি রয়েছে, সেগুলোতে নেই চিকিৎসক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, বর্তমানে ৩২ হাজার ৪৯৬টি সরকারি চিকিৎসক পদ সৃষ্টি করা আছে। এর মধ্যে ২৬ হাজার ৬৪৮টি পদে চিকিৎসক পদায়িত হয়েছেন। বাকি পাঁচ হাজার ৮৪৮টি পদ খালি আছে। কিন্তু স্ট্যান্ডার্ড সেটআপ অনুযায়ী, চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে আরও আট হাজার ৩০০টি পদ সৃজন করা প্রয়োজন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য একজন চিকিৎসক প্রয়োজন। বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। জনসংখ্যার অনুপাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী দেশে চিকিৎসক সংখ্যা খুবই অপ্রতুল।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের মোট পদ রয়েছে ৫২৬টি। যার বিপরীতে মাত্র ২৯৮ চিকিৎসক রয়েছেন। শূন্য রয়েছে ২২৮টি পদ। শুধু এ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নয়, বরিশাল বিভাগের ১২৫টি হাসপাতালের একই অবস্থা।

মন্ত্রণালয়কে দেওয়া চাহিদাপত্রে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিসিপিএস) মাধ্যমে সহকারী সার্জন পদে নিয়মিত বিসিএস ছাড়াও প্রতি বছর দুই হাজার জন করে তিন বছরে মোট ছয় হাজার চিকিৎসক বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব জানানো হয়েছে। এতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলমের অনুমোদন রয়েছে।

জনবল সংকটে ‘নড়বড়ে’ প্রান্তিক স্বাস্থ্যসেবা

ঢাকার হাসপাতালগুলোতে যে সংখ্যক জনবল সংকটের কথা শোনা যায়, তার চেয়ে ভয়াবহ সংকট নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা পরিচালিত হচ্ছে জেলা-উপজেলাসহ প্রান্তিক এলাকাগুলোতে। যার কারণে স্বাস্থ্যসেবার প্রতি আস্থা ও ভরসা অনেকটা নড়বড়ে হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের মোট পদ রয়েছে ৫২৬টি। যার বিপরীতে মাত্র ২৯৮ চিকিৎসক রয়েছেন। শূন্য রয়েছে ২২৮টি পদ। শুধু এ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নয়, বরিশাল বিভাগের ১২৫টি হাসপাতালের একই অবস্থা। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, বিভাগের মোট ১২৫টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক হাজার ২৮১ চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৬৮৮ জন। পদ খালি ৫৯৩টি।

মুগদা জেনারেল হাসপাতাল

এদিকে, রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালেও জনবল সংকটে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা। ৫০০ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল। চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী মিলে ৩৩৯ জনবল সংকট রয়েছে রমেক হাসপাতালে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৮ সালে ২৫০ শয্যা নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৬ সালে হাসপাতালটিকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালে আরও ১০০ শয্যা বাড়িয়ে ৬০০ শয্যায় রূপান্তরিত করা হয়। সর্বশেষ ২০১০ সালে এক হাজার শয্যায় উন্নীত করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। তবে, শয্যা ও রোগীর চাপ বাড়লেও সেবা কার্যক্রম চলছে ৫০০ শয্যা হাসপাতালের জনবল দিয়ে। চিকিৎসক-নার্স সংকটের কারণে রোগীরা সময় মতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না।

সিভিল সার্জনকেই করতে হচ্ছে সিজারিয়ান অপারেশন

একটি জেলার স্বাস্থ্যসেবার সার্বিক তদারকির দায়িত্বে থাকেন জেলা সিভিল সার্জন। তবে, উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়ে চিকিৎসক সংকটের কারণে সিভিল সার্জন হিসেবে দায়িত্বরত থাকলেও রোগীর চাহিদা মেটাতে নিজেই এসে অপারেশন করেন ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরী।

ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরী

জানা গেছে, চলতি আগস্ট মাসের ৫ তারিখে জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিন প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশন করেন জেলা সিভিল সার্জন। ১৪ আগস্ট একই হাসপাতালে আরও দুটি সিজার অপারেশন করেন তিনি।

এ বিষয়ে মোস্তফা জামান চৌধুরী জানান, চিকিৎসক সংকটের কারণে অনেক সময় হতদরিদ্র প্রসূতি মায়েরা সেবা থেকে বঞ্চিত হন। তারা বাধ্য হয়েই কোনো বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে আশ্রয় নিয়ে সিজার করান। এতে তাদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। বঞ্চিত হচ্ছেন সঠিক চিকিৎসা থেকে। বিষয়টি বিবেচনা করে তিনি নিজেই প্রতি সোমবার বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে সিজার সম্পন্ন করেন।

শুধু রংপুর বা বরিশালেই চিকিৎসক সংকট নয়, সারাদেশের প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে এ চিত্র বিরাজ করছে। তবে সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চাহিদা অনুযায়ী নতুন করে নিয়োগের পাশাপাশি চিকিৎসকদের পদোন্নতিতে নিশ্চিত করতে পারলে স্বাস্থ্যসেবায় পরিবর্তনের ধারা সূচিত হবে। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষের মধ্যেও সরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ফিরবে আস্থা ও নির্ভরতা।

সংযুক্তি দিয়ে সেবা চালাচ্ছে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের হাসপাতালটি ৫০০ শয্যার। প্রতিনিয়ত এখানে রোগী থাকে দ্বিগুণ-তিনগুণ। স্বাভাবিকভাবে এসব রোগী হ্যান্ডেল করা আমার চিকিৎসকদের জন্য অনেক কঠিন।

‘প্রতিদিন আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে রোগী আসছেন সাত থেকে আট হাজার। সবসময় রোগী ভর্তি থাকে ৭০০ থেকে ৮০০ জন। এত রোগীর চিকিৎসায় সরকারিভাবে ১৬৮ চিকিৎসকের অনুমোদন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৯০ জনের মতো চিকিৎসককে সংযুক্তি দিয়ে রেখেছে। তার মানে, এসব চিকিৎসক আমাদের একেবারে দিয়ে দেওয়া হয়নি। যে কোনো মুহূর্তে তাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হতে পারে।’

হাসপাতাল পরিচালক আরও বলেন, আমাদের হাসপাতালে আরও বেশকিছু চিকিৎসক প্রয়োজন। ইতোমধ্যে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চাহিদাপত্র দিয়েছি। অন্তত এখানে যদি সংযুক্তি হিসেবে কিছু চিকিৎসকও দেওয়া হয়, তাহলে আমরা সেবা কার্যক্রম যথাযথভাবে চালিয়ে যেতে পারব।

ম্যানেজ করে চালিয়ে নিচ্ছি : মুগদা হাসপাতালের পরিচালক

দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বৃদ্ধির পর আক্রান্ত রোগীদের ভরসার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। যদিও অতিরিক্ত রোগীর ভারে প্রায় নুয়ে পড়েছে এ হাসপাতালের স্বাস্থ্যব্যবস্থা। এ বিষয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নিয়াতুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার হাসপাতালটি ৫০০ শয্যার। প্রতিনিয়ত রোগী থাকে এক হাজারের ওপরে। তবে, আমাদের জনবল কিন্তু এক হাজার শয্যার নয়। সংক্রমণ বাড়ার পর থেকে যদিও আমরা ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী সামাল দিচ্ছি, সেই হিসাবে আমাদের জনবল খুব বেশি নেই।

‘বর্তমানে আমরা শুধু ডেঙ্গু রোগেরই চিকিৎসা দিচ্ছি না, সব ধরনের রোগীকে চিকিৎসা দিচ্ছি। স্বল্প জনবলে একসঙ্গে সব সামলাতে কষ্ট হচ্ছে, তারপরও কিছুই করার নেই। হাসপাতালে রোগী আসলে তো আমরা ফিরিয়ে দিতে পারি না।’

হাসপাতাল পরিচালক বলেন, শুধু চিকিৎসক নয়, নার্স সংকটও তীব্র। তারপরও আমরা ম্যানেজ করে চালিয়ে নিচ্ছি। এক্ষেত্রে রেশনিং করতে হচ্ছে। যেখানে আমাদের অন্য একটি ওয়ার্ডে তিনজন চিকিৎসকের ডিউটি করার কথা, সেখানে দুজন দিয়ে ২৪ ঘণ্টা চালাতে হচ্ছে। এরপরও ভালো লাগার বিষয় হলো, আমাদের চিকিৎসক-নার্সদের সেবায় সুস্থ হয়ে রোগীরা ঘরে ফিরছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম

চিকিৎসা খাতে বড় শূন্যতা রোধে বড় নিয়োগ প্রয়োজন : স্বাস্থ্য মহাপরিচালক

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। এজন্য আমরা মন্ত্রীর নির্দেশে পিএসসিতে একটি চাহিদাপত্র দিয়েছি। এর বাইরেও চিন্তার বিষয় আছে। কোভিডের সময় একসঙ্গে এত সংখ্যক চিকিৎসক নিলাম, একটা নির্দিষ্ট সময় পর আমাদের চিকিৎসা খাতে বড় শূন্যতা দেখা দিতে পারে।

‘স্বাভাবিকভাবেই একসঙ্গে যেসব চিকিৎসক কোভিডের সময় নিয়োগ পেয়েছেন, নির্দিষ্ট সময় পর তারা চাকরি থেকে অবসরে চলে যাবেন। তখন যে শূন্যতা তৈরি  হবে সেটি পূরণে, আমরা ভেবেছি একটি প্যানেল যদি তৈরি করে রাখা যায়, তাহলে বড় ধরনের কোনো ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না।’

খুরশীদ আলম বলেন, আমরা ছয় হাজার চিকিৎসকের চাহিদাপত্র দিলেও এটি তো একসঙ্গে নিয়োগ হবে না। ধাপে ধাপে নিয়োগ হবে। সুতরাং, আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় কোনো ক্রাইসিস তৈরি হবে না।

৪২তম স্পেশাল বিসিএসে বেশকিছু চিকিৎসক এখনও নিয়োগের অপেক্ষায়। তাদের নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি না— জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক আরও বলেন, ৪২তম বিসিএস থেকে আরও কিছু চিকিৎসক নেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের আছে। একসঙ্গে তো আমরা নিতে পারব না। পর্যায়ক্রমে নিতে হবে।

প্রস্তাবনা পেলে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত : পিএসসি

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখনো কোনো প্রস্তাবনা বা কাগজপত্র হাতে পাইনি। তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না। প্রস্তাবনা হাতে পেলে যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টিআই/এসএম/এমএআর/