জনগণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে সংশোধিত ধূমপান এবং তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনটি অধিকতর জনবান্ধব ও শক্তিশালী করে সংসদে দ্রুত উত্থাপন করা বর্তমান সরকারের আমলেই পাস করা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী। 

সোমবার (২৮ আগস্ট) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে ‘সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাসের লক্ষ্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আলোচনায় সভায় সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি ও গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ মনজুরুল আহসান বুলবুল, গ্লোবাল টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাসহ আরও অনেকে।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এই সংসদের শেষের দিকের অধিবেশনের অগ্রাধিকার তালিকায় এই আইনটি নিয়ে আসতে হবে। যার জন্য নাগরিক ফোরামের আলোচনাগুলোই পারে এই জনগুরুত্বপূর্ণ আইনটিকে সংসদে পাসের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে। 

তিনি বলেন, সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে শক্তিশালীকরণের যে খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে, তা বর্তমানে চূড়ান্তকরণের অপেক্ষায় রয়েছে। এই খসড়ায় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বাতিল, সিঙ্গেল স্টিক সিগারেট/বিড়ি ও ই-সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধ, বিক্রয় স্থলে তামাক পণ্যের প্রদর্শনী ও তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বন্ধ, এবং তামাক পণ্যের প্যাকেটে সচিত্র সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধির প্রস্তাবনা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। এসময় তিনি বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীটি পাস হলে সেটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের সঙ্গে বহুলাংশে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। যা আগামী প্রজন্মের নাগরিকদের তামাক ব্যবহারের আশঙ্কাও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমবে। তাই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ভিশন বাস্তবায়নে সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি বর্তমান সরকারের মেয়াদেই পাস করা জরুরি।

তামাক কোম্পানিগুলোর সিএসআর বন্ধ করা আশু প্রয়োজন এবং এই সরকারের মেয়াদেই এই আইন পাস করা সম্ভব বলে মনে করেন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। 

এসময় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনীটি মন্ত্রিপরিষদ থেকে অনুমোদনের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই প্রস্তাবনা কার্যকর করা গেলে কিশোর-তরুণদের তামাকের বিষয়ে আগ্রহী হওয়ার সম্ভাবনা বহুলাংশে কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে।

গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ মনজুরুল আহসান বুলবুল মনে করেন, তামাকের বিরুদ্ধে শক্ত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হলে এই আইনের সংশোধনী দ্রুত পাস করা প্রয়োজন। এই আইনটি দ্রুত পাসের তাগিদ দেন সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাও।

সভায় তামাক-বিরোধী অ্যাক্টিভিস্ট/সংগঠন, শিক্ষক ও গবেষকগণ, অর্থনীতিবিদগণ, স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত বিশিষ্ট নাগরিক ও গণমাধ্যমের কর্মীগণ জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন। 

টিআই/কেএ