বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অডিট আপত্তির বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জুলফিকার রহমান খান। এতে বলা হয়েছে, যেকোনো প্রকল্পের অডিট একটি চলমান প্রক্রিয়া, যেকোনো আপত্তি হলে সেটি জবাবের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়ে থাকে। মূলত এটা কোনো অনিয়ম নয়।

বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে বিএসএমএমইউর জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মজুমদার কর্তৃক পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, যেহেতু সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন, সেহেতু 'ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে'র নির্দেশে বিএসএমএমইউ থেকে গতকাল ২২ আগস্ট গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস রিলিজটি প্রত্যাহার করা হলো। একই সঙ্গে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের সাবেক প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জুলফিকার রহমান খান স্বাক্ষরিত অডিট আপত্তির বিষয়ে ব্যাখ্যাসমূহ তুলে ধরা হলো।

আরও পড়ুন>>সুপার হাসপাতালে ‘সুপার’ অনিয়ম, ৬৬ কোটি টাকার অডিট আপত্তি

ব্যাখ্যা : বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প অডিট অধিদপ্তর (ফাপাড) কর্তৃক মোট ৭টি আপত্তি উল্লেখ করেছেন যা ইতিপূর্বে পত্রের মাধ্যমে জবাব প্রদান করা হয়েছে। আপত্তিকৃত অর্থ মূলত ভ্যাট ও আয়কর পরিশোধ সম্পর্কিত। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এই প্রকল্পের বৈদেশিক প্রতিষ্ঠানের সমস্ত কাজের ভ্যাট, ট্যাক্স, কাস্টমস, লেভিস ও টিডিএস ইত্যাদি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পরিশোধিত হবে মর্মে দাতা সংস্থা এক্সিম ব্যাংকের সহিত বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। কিন্তু ডিপিপিতে সরকারের খাতে (জিওবি) পর্যাপ্ত অর্থ সংস্থান না থাকায় আপত্তিকৃত ভ্যাট ও আয়কর পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।

বলাবাহুল্য উক্ত আপত্তিকৃত ভ্যাট ও আয়কর পরিশোধ বাবদ জিওবি অংশে ব্যয় বৃদ্ধি পূর্বক অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই আপত্তিকৃত অর্থ পরিশোধ করা হবে এবং আপত্তি নিষ্পত্তি হবে।

এই প্রকল্পের প্রত্যেকটি ব্যয় পিপিআর-২০০৮ ও দাতা সংস্থার গাইডলাইন (ইডিসিএফ) অনুসরণ করে সম্পন্ন করা হয়েছে। যেহেতু প্রকল্পটি কোরিয়ান সরকারের অর্থায়নে হয়েছে, সেহেতু প্রত্যেকটি ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর (হেড অব প্রকিউরমেন্ট (হোপ), সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং দাতা সংস্থার অনুমতি সাপেক্ষে ডাইরেক্ট পে-মেন্টের মাধ্যমে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক কর্তৃক প্রদান করা হয়েছে।

আরও পড়ুন>>> ‘আমি না বাঁচলেও আমার গর্ভের সন্তানটা যেন বাঁচে’

যেকোনো প্রকল্পের অডিট একটি চলমান প্রক্রিয়া, যেকোনো আপত্তি হলে সেটি জবাবের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়ে থাকে। মূলত এটা কোনো অনিয়ম নয়।

এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিএসএমএমইউ জানায়, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণের সময় নিয়মবহির্ভূতভাবে ব্যয় হয়েছে ৬৬ কোটি টাকার বেশি।

তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিজেদের ভেতরকার কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ এই বিজ্ঞপ্তি। কারণ, সরকারি সংস্থাগুলো সাধারণত নিরীক্ষা আপত্তি গোপনে করে। কিন্তু বিএসএমএমইউ নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা নিরীক্ষা আপত্তি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রচার করল।

বিএসএমএমইউ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিষয়টি (নিরীক্ষা আপত্তির বিষয়গুলো) গভীরভাবে খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

টিআই/এমএ