করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকায় সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করছে সরকার। এ অবস্থায় জটিল কোনো রোগ ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে এসে ভিড় না জমানোর আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

শনিবার (৩ মার্চ) অধিদফতরের পরিচালক ( হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘‌সামান্য সর্দি-জ্বর আর অন্য সাধারণ রোগ নিয়ে রোগীদের হাসপাতালে এসে ভিড় না করার আহ্বান জানাচ্ছি। এই সময়ে তারা যেন ফোনেই চিকিৎসা সেবা নেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে যারা একেবারেই ইমার্জেন্সি রোগী, তারা আসবেই। তাদের ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। বিশেষ করে করোনা রোগীরা যাদের ভর্তি লাগবে তাদের আসতেই হবে। তাদের ঘরে বসে থাকা যাবে না।’

সার্বক্ষণিক টেলিমেডিসিন সেবা চালু থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য বাতায়ন চালু আছে। সব হাসপাতালগুলোতেই টেলিমেডিসিন সেবা চালু আছে। এই সময়ে ইমার্জেন্সি না হলে হাসপাতালে না আসাই ভালো।’

ফরিদ মিয়া বলেন, ‘লকডাউন দেওয়াতে বরং ইমার্জেন্সি রোগীদের জন্য সুবিধা হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জন্যও সুবিধা হবে। কারণ রোগীদের সঙ্গে যে কুড়িখানেক উপস্থিতি থাকে, তা কম আসবে। এতে আমাদের চিকিৎসক-নার্সদের সেবা কার্যক্রমে সুবিধা হবে।’

লকডাউনে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘লকডাউন ঘোষণা মূলত সাধারণ মানুষের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য। তারা যেন অযথাই বাইরে ঘুরে না বেড়ায়, সেটা বন্ধ করার জন্য। এতে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম আগের মতোই চলবে।’

লকডাউনে চলবে টিকা কর্মসূচি: স্বাস্থ্য অধিদফতর
লকডাউনের মধ্যে সারাদেশে চলমান টিকা প্রয়োগ কর্মসূচিও চলবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সাবরিনা ফ্লোরা। তিনি ঢাকা পোস্টকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, করোনা টিকা কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া। কোনো পরিস্থিতিতেই এই কার্যক্রম বন্ধ হবে না। সুতরাং লকডাউনেও টিকা কার্যক্রম চলবে।

এর আগে সোমবার থেকে লকডাউনের তথ্য জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, দ্রুত বেড়ে যাওয়া করোনা সংক্রমণ রোধ করতে সরকার ২-৩ দিনের মধ্যে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের চিন্তা করছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান জরুরি সেবা দেয় সেই ধরনের প্রতিষ্ঠানগু‌লো লকডাউন চলাকা‌লে খোলা থাক‌বে। এছাড়া শিল্প-কলকারখানাও খোলা থাক‌বে, যা‌তে ক‌রে শ্রমিকরা শিফ‌টিংয়ের মাধ্যমে কাজ করতে পারে।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ২ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে নয় হাজার ১৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ছয় লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জন।

টিআই/ওএফ