জ্বর নিয়ে কুর্মিটোলায় অসংখ্য রোগী, অধিকাংশই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত
দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়ছে। ইতোমধ্যে গত জুন মাসে এ বছরের রেকর্ড সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্তের হার এভাবে বাড়তে থাকলে চলতি জুলাই মাসেই শনাক্তের আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১১০০ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৫৬৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
তবে বেসরকারির তুলনায় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতেই রোগীদের আগ্রহ বেশি। এমনটাই দেখা গেছে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে।
বুধবার (৫ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদাভাবে তৈরি করা হয়েছে ডেঙ্গু কর্নার। জ্বর বা ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে যারা আসছেন তাদের রাখা হচ্ছে এই কর্নারে। পুরুষ এবং নারীদের পাশাপাশি শিশুদের জন্যও রয়েছে আলাদা বেড।
হবিগঞ্জ থেকে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছে রাসেল। তার বাবা আবদুল হাকিম বলেন, দুই-তিনদিন আগে হঠাৎ ছেলের জ্বর আসে। পাশাপাশি শরীর ব্যথা। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরীক্ষায় ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়ে। এখন চিকিৎসা চলছে। ডাক্তার জানিয়েছেন, যে ফুসফুসে পানি জমে গেছে। সেটি সারাতে কিছুদিন সময় লাগবে।
আরেক ডেঙ্গু রোগী জুবায়ের বলেন, ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। গত ৩০ তারিখে জ্বর অনুভব করতে থাকি। ব্লাড টেস্ট করাতেই ধরা পড়ে যে ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে। এরপর এখানে এসে ভর্তি হই।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন মোমেনা খাতুন। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হই। পাশাপাশি শরীরে তীব্র ব্যথা হতে থাকে। পরে চিকিৎসা নিতে এখানে এসেছি। এখন কিছুটা ভালোর দিকে যাচ্ছে।
এদিকে হাসপাতালে ভর্তি হতে কোনো ভোগান্তির শিকার হতে হয়নি বলে জানিয়েছেন বেশিরভাগ রোগী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী বলেন, এখানে এসে বেড পেতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। টিকিট কাটা ছাড়া বাড়তি কোনো খরচ নেই। তাছাড়া ওষুধ ফ্রিতেই পাওয়া যাচ্ছে।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেডের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি ডেডিকেটেড টিম প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ সাব্বির আহমেদ। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আমাদের হাসপাতালে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছেন প্রায় ৫ থেকে ৬ জন রোগী। সুস্থ হয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রোগী ফিরেও যাচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে কোনো রোগী মারা যায়নি।
তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা কর্নার করা হয়েছে, যেন তারা সহজেই চিকিৎসা পেতে পারেন। গত বছরেও ডেঙ্গু পরিস্থিতি আমরা কভার করতে পেরেছি। আশা করি এবারও পারব। শুধু ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করবে, আমরা এমন একটি টিম তৈরি করেছি। ওয়ার্ডে বেডের পরিমাণ বাড়াচ্ছি। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আমাদের ২০টি বেড ছিল, সেটি বাড়িয়ে ৩০টি করেছি। প্রয়োজনে সামনে বেডের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে। কোনো রোগীকে চিকিৎসা নিতে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে না।
ওএফএ/কেএ