এ সপ্তাহে নতুন ৪০ আইসিইউ যোগ হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে করোনা সংক্রমণের হার ব্যাপক আকারে বেড়েছে। হাসপাতালগুলোতে আইসিইউর (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় চলতি সপ্তাহের মধ্যেই রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে নতুন ৪০টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) যোগ হবে।
সোমবার (২৯ মার্চ) দুপুরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইসিভিডি) আয়োজিত হাসপাতালের সম্প্রসারিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত মার্চ মাসে সংক্রমণের হার ২ শতাংশ ছিল, কিন্তু বর্তমানে এ হার ১৩ শতাংশে চলে এসেছে। করোনা প্রায় ৮/৯ গুণ বেড়ে গেছে। এ আক্রান্ত রোগীরা যদি একসঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে, তাহলে সেবা দেওয়া দুরূহ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোর আইসিইউ রোগীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। বেডগুলোও খালি নেই। বুঝতেই পারছেন, করোনা কীভাবে বাড়ছে। আমরা আইসিইউ যতোই বাড়াই, যদি আপনারা স্বাস্থ্যবিধি না মানেন, সতর্ক না হোন, তাহলো কোনো লাভ হবে না। আর আমরা তো চাইলেই আইসিইউর সংখ্যা বাড়াতে পারবো না। কারণ দক্ষ জনবল না থাকলে তো আইসিইউ বাড়িয়ে লাভ নেই। দক্ষ জনবল তো অল্প সময়েই তৈরি হয়ে যায় না। আমরা চেষ্টা করছি। আপনারাও সতর্ক হোন।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনার সময়ে হার্টের রোগীদের কষ্ট হয়েছে। অনেক রোগীই সংক্রমণের ভয়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসেনি। চিকিৎসকদেরও সেবা দিতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এখন আবার সংক্রমণ বাড়ছে, সতর্কতার সঙ্গেই চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। যেন হার্টের চিকিৎসা করাতে এসে করোনা সংক্রমিত না হয়।
এপ্রিলেই আট বিভাগে ৮ কার্ডিয়াক হাসপাতাল
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, দিনদিন হার্টের রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। প্রতি বছর এক থেকে দেড় লাখ মানুষ হার্টের অসুখে মারা যায়। আর করোনায় এক বছরে মারা গেছে মাত্র আট হাজারের মতো। সুতরাং হার্টের সুস্থতা ও চিকিৎসায় আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।
এসময় তিনি বলেন, হার্টের রোগীদের চিকিৎসায় আমরা এ বছরের এপ্রিল মাসেই আটটি বিভাগে আটটি ক্যান্সার ও কিডনি হাসপাতালের সঙ্গে আটটি করে কার্ডিয়াক হাসপাতালও নির্মাণ করবো। এ লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি আমাদের শেষ হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিটি বিভাগীয় কার্ডিয়াক হাসপাতালে একশ থেকে দেড়শ বেড থাকবে। সবমিলিয়ে আটটি বিভাগে ১২০০/ ১৪০০ বেড নতুন করে যুক্ত হবে। এতে করে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটেও রোগীদের চাপ কমবে।
১২৫০ বেডে উন্নীত হলো হৃদরোগ ইনস্টিটিউট
৫১৪ বেড থেকে ১২৫০ বেডে উন্নীত হয়েছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতাল। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সম্প্রসারিত ভবনের উদ্বোধন করেন।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, হৃদরোগ হাসপাতাল সবসময় রোগীতে পরিপূর্ণ থাকে। সবসময় দেখা যায় বেডে জায়গা না পেয়ে বারান্দা, করিডোরে রোগীদের জায়গা হয়। নতুন করে ৫১৪ বেড থেকে ১২৫০ বেডে উন্নীত হওয়ায় আশা করি এ সমস্যা আর থাকবে না।
এসময় বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে গেলেই রোগীদের নানা দুরবস্থা দেখা যায়। আশা করি নতুন বেড যুক্ত হওয়ায় আর সমস্যা থাকবে না। মানুষ যে স্বাচ্ছন্দ্যে এ হাসপাতাল থেকে সেবা পায়। কোনো রকম দুর্ভোগে যেন রোগীরা না পড়ে।
আব্দুল মান্নান বলেন, প্রতিবছর হৃদরোগে আক্রান্ত অনেক রোগী চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে চলে যায়। আমাদের অবশ্যই এইসব রোগীদের বিদেশমুখীতা রোধ করতে হবে। দেশেই যদি আমরা আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে পারি, তাহলে রোগীরা আর বিদেশ যাবে না।
চিকিৎসকদের প্রশংসা করে স্বাস্থ্য সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশে অনেক ভালো চিকিৎসক রয়েছেন। দেবী শেঠিও এসে আমাদের চিকিৎসকদের প্রশংসা করে গেছেন। এখন আমাদের হাসপাতালের সেবাটা বাড়াতে পারলেই ভালো কিছু করতে পারবো।
টিআই/এসএম