আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সব অপতৎপরতার বিরুদ্ধে চিকিৎসক সমাজকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতারা। তারা বলেন, দেশের সব উন্নয়ন আওয়ামী লীগের শাসনামলে হয়েছে। আল্লাহর রহমতেই প্রধানমন্ত্রী দেশ পরিচালনা করছেন। দেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার সরকারকে বারবার দরকার। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের চিকিৎসকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

শনিবার (৬ মে) দুপুরে স্বাচিপ শিশু-মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (আইসিএমএইচ) শাখা আয়োজিত স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও মহাসচিবের সংবর্ধনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, নির্বাচন আসন্ন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠছে। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদকে (স্বাচিপ) সুসংগঠিত হতে হবে। দেশের ধারাবাহিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার সরকারকে আরও একবার নির্বাচিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য স্বাচিপের প্রতিটি ইউনিটকে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে।

ডা. মোস্তফা জালাল বলেন, নির্বাচনের আগেই দেশের প্রতিটি ইউনিটে যোগ্যদের নিয়ে কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে কোনো ‘মাই ম্যান’ খুঁজলে হবে না। প্রতিটি জেলায় গিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যোগ্যদের নিয়ে কমিটি করে আসতে হবে।

এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা ৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু বলেন, চিকিৎসক নার্সদের ভালো আচরণে রোগীরা অর্ধেক সুস্থ হয়ে যায়। মুমুর্ষ রোগীও নতুন করে বেঁচে থাকার প্রেরণা পায়। আইসিএমএইচ-এর সেবার মান ও পরিবেশ নিয়ে রোগীদের এখন আর কোনো অভিযোগ নেই। চিকিৎসকদের পদোন্নতিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অবশ্যই আলোচনা করে সমাধান করব।

স্বাচিপ সভাপতি বলেন, আমাদের অনেক বিভ্রান্তি কাজ করে। সময় এসেছে জাতির সামনে সত্য তুলে ধরা। বিশ্বে এখন বাংলাদেশ একটা রোল মডেল। আপনারা জানেন শেখ হাসিনা চিকিৎসাসেবায় কি কি উন্নয়ন করেছেন। তিনি ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে চিকিৎসায় পদোন্নতি ক্যাডারভুক্ত করেছিলেন। নির্বাচনের আগেই স্বাচিপের সমস্ত ইউনিটের নতুন কমিটি করা হবে।

স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন বলেন, আল্লাহ যাকে যোগ্য মনে করেন এবং পছন্দ করেন তাকেই তিনি ক্ষমতা দান করেন। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ নিজ হাতেই তাকে বারবার ক্ষমতায় বসাচ্ছেন। তিনি মানুষের কথা ভাবেন, স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে চিন্তা করেন। চিকিৎসক হিসেবে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে কিছুই দাবি করতে হয় না। যেকোনো সমস্যা তার কানে পৌঁছালেই তিনি সেটা সমাধান করে দেন। শিশু-মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের পদোন্নতি নিয়ে ক্ষোভ আছে। আমরা সচিব মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলব। আশা করি, এ সমস্যাটি সুরাহা হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে, পদ-পদবি চিরস্থায়ী নয়। এগুলো নিয়ে সবসময়ই মনোবেদনা থাকবে। শিশু-মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ২০০ বেডের একটি হাসপাতাল, এখানে অনেক অর্জন আছে। আমাদের শিশু-মাতৃমৃত্যু কম, নিশ্চয়ই এ হাসপাতালের ভূমিকা এখানে আছে।

ডা. মিলন বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। কিন্তু তারা নির্বাচনে আসতে চায় না। কারণ তাদের ভয় নির্বাচনে তারা হেরে যাবে আর দোহাই দেয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের। তারা বলছে, আন্দোলনের রূপরেখা দেবে। আমরা রাজপথের পরীক্ষিত সৈনিক। আমরা কচুরিপানার মতো ভেসে আসিনি। আওয়ামী লীগ কারও রক্তচক্ষুকে ভয় পায় না। স্বাচিপ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ যেসব নেতাকর্মীরা আছি, আমরা বসে থাকব না।

আইসিএমএইচ স্বাচিপ শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক স্বাচিপ নেতা ডা. শফিকুর রহমান ও আইসিএমএইচ স্বাচিপ সাধারণ সম্পাদক ডা. নাজমুল হোসেন প্রমুখ।

টিআই/এফকে