প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় দেশে আবারও সংক্রমণ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, গত কয়েকদিন ধরে দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেছে। সংক্রমণ ২ থেকে ১০ শতাংশে উঠেছে। কিন্তু কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না।

রোববার (২১ মার্চ) সকালে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও মানুষ সতর্ক হচ্ছে না। বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছে, কক্সবাজার, বান্দরবান বেড়াতে যাচ্ছে। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, গত ১৫ দিনে কক্সবাজারে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ ভ্রমণ করেছেন। এদের কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানেনি, মাস্ক ব্যবহার করেনি। ফলে বেশিরভাগ সংক্রমণ বাড়ছে যারা বেড়াতে, ঘুরতে গিয়েছিল তাদের। যারা সমুদ্র সৈকতে মাস্ক ছাড়া ঘুরেছিল, তারাই করোনা আক্রান্ত হচ্ছে। 

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, নইলে মোবাইল কোর্টের জরিমানার মুখে পড়বেন, বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনারা নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, দেশের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করবেন। সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন।

বিশ্বের অনেক দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও অনেক রোগের টিকা তৈরি হয়। এখন করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের চেষ্টা চলছে। বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি গ্লোব এক্ষেত্রে অনেকদূর এগিয়েছে বলে জানিয়েছেন এর কর্মকর্তারা। সরকারও করোনার টিকা উৎপাদনে যেতে চায়।

বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক ওষুধ ও টিকাই দেশে তৈরি হয়। ওষুধের মতো টিকাও দেশে তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। আমরা একটি কারখানাও দেখেছি। দেশেই করোনার টিকা উৎপাদনের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা সেদিকে এগোচ্ছি।

কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক ডা. তাওসিদ আহমেদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, নবনির্মিত ভবনে ১ হাজার ৫০০ বর্গফুট আয়তনের একটি সুপরিসর-উচ্চ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন সভাকক্ষ, পরিচালকের অফিস, ৫০০ বর্গফুট আয়তনের একটি মিনি কনফারেন্স রুম, কার্গো লিফট রয়েছে। স্টোর এলাকায় নতুন করে মোট ১ হাজার বর্গমিটার আয়তনের সাতটি আধুনিক কোল্ড রুম স্থাপন করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেছেন, আগামী এক বছরও যদি করোনার প্রকোপ অব্যাহত থাকে, আমরা তা মোকাবিলা করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছি।

সিএমএসডি পরিচালক বলেন, করোনার প্রকোপ সারাদেশেই বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে পর্যাপ্ত পরিমাণ আইসিইউ বেড, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, ভ্যান্টিলেটর, পিপিই, সার্জিক্যাল গ্লাভস, সেনিটাইজারসহ সব ধরনের উপকরণ মজুদ রয়েছে। যখনই হাসপাতালগুলো চাইছে, তখনই আমরা সেগুলো সরবরাহ করছি।

মোরশেদ জামান বলেন, গত দশ মাসে একটি অভিযোগও দেশের কোনো প্রান্ত থেকে আসেনি যে, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার তাদের যন্ত্রপাতি সরবরাহের ক্ষেত্রে কোথাও ব্যর্থ হয়েছে।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামানের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, অধ্যাপক ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা প্রমুখ।

টিআই/জেডএস