সমাজে প্রচলিত কোমরে ব্যথা মানেই কিডনি রোগ- এমন ধারণা ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, বেশির ভাগ কোমর ব্যথার রোগী মনে করেন, তাদের কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু নানা কারণেই কোমর ব্যথা হতে পারে। বেশির ভাগ কোমর ব্যথা সাধারণত মাংসপেশি, মেরুদণ্ডের হাড়, ডিস্ক, সন্ধি ও স্নায়ু সম্পর্কিত।

শনিবার (১১ মার্চ) রাতে বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে ঢাকা পোস্ট ও ইউনাইটেড হাসপাতালের যৌথ আয়োজনে এক ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ইউনাইটেড হাসপাতালের নেফ্রোলজি স্পেশালিস্ট ডা. এলেনা হক বলেন, মানুষের মধ্যে সাধারণ একটি ধারণা হলো কোমর ব্যথা মানেই কিডনিতে সমস্যা- এমনটি আসলে ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে ভয়াবহ বিষয় হলো, এমন ধারণা থেকে অনেকেই আবার নিজে নিজে ওষুধ কিনে খাওয়া শুরু করেন। আমাদের হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে এমন অসংখ্য রোগী এসে সরাসরি বলেন, ‘আমার কিডনিতে সমস্যা, কোমরে ব্যথা’। এটি আসলে সঠিক নয়।

তিনি বলেন, কিডনিতে পাথর বা ইনফেকশন হলে এ ধরনের কিছু ব্যথা হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা কিডনি রোগ বলতে যেগুলো বুঝি, সেগুলোতে এভাবে সাধারণত কোমরে ব্যথা হয় না।

ইউনাইটেড হাসপাতালের নেফ্রোলজি কনসালটেন্ট ডা. তানভীর বিন লতিফ বলেন, স্বাস্থ্যকর যেসব অভ্যাসগুলোর কথা বলা হয়, কিডনির ক্ষেত্রেও একই অভ্যাসগুলো প্রযোজ্য। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বলতে বোঝানো হয়- স্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক ব্যায়াম, ধূমপান পরিহার, মাদক গ্রহণ না করা, শরীরের ওজন বাড়তে না দেওয়া। ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন এগুলোকে যদি নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে কিডনি রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রযোজ্য আরেকটি সচেতনতা হলো ওষুধের দোকান থেকে না জেনে ওষুধ খাওয়া। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অন্যজনের কাছ থেকে দেখে বা ছোটখাটো যেকোনো অসুখে নিজের মতো করে দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাওয়া পরিহার করতে হবে।

ডা. লতিফ আরও বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, মানুষ ছোটখাটো ব্যথা বা জ্বর-সর্দিতেও অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেয়ে ফেলেন, যেখানে সামান্য প্যারাসিটামলই কাজ হয়। পাশাপাশি আরেকটি বিষয় দেখা যায়, একটি রোগে অন্য আরেকজন আক্রান্ত ব্যক্তি যে ওষুধ খাচ্ছেন, একই রোগের উপসর্গ থাকা ব্যক্তি তার দেখাদেখি ওই ওষুধ কিনে খেয়ে ফেলছেন। এ ক্ষেত্রে তার রোগটা ভিন্নও হতে পারে। এই যে মানুষের মধ্যে অভ্যাসগুলো গড়ে উঠেছে, এগুলোর ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ডা. তানিয়া রহমান মিতুল।

টিআই/ওএফ