বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ৬ জন রোগীর চোখে সফল কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগ ও কমিউনিটি অফথালমোলজী বিভাগের উদ্যোগে এসব রোগীর চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থান করা হয়। প্রতিস্থাপন করেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমান এবং সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ।

শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ নিজে এসব রোগীদের চক্ষু পরীক্ষা করেন। পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা যায় সব রোগীরই চোখ ভালো আছে এবং কর্নিয়া প্রতিস্থাপন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

জানা গেছে, প্রতিস্থাপন করা এসব কর্নিয়া সংগ্রহে নেপালের তিলগঙ্গা আই ইনিস্টিটিউট চক্ষু ব্যাংক ও নেপালী চিকিৎসকগণ সহায়তা করেন।

কর্নিয়া প্রতিস্থাপন প্রসঙ্গে শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, কর্নিয়া দানের মাধ্যমে মানুষের অন্ধত্ব দূর করা সম্ভব। কর্নিয়া দান করে মৃত্যুর পরেও অন্যের চোখের দৃষ্টি হয়ে বেঁচে থাকুন। এটি একটি মহতী সুযোগ। কর্নিয়া দান একটি সহজ প্রক্রিয়া এবং এর মাধ্যমে মুখম-লের কোনো বিকৃতি হয় না। 

তিনি বলেন, কর্নিয়ার অভাবে অন্ধত্ব দূরীকরণ কার্যক্রম পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। কর্নিয়া দানে জনসচেতনা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যম বিরাট ভূমিকা রাখতে পারেন। এজন্য আমি গণমাধ্যমকর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। যাতে করে দেশবাসী কর্নিয়া দানে উৎসাহিত হয় এবং অন্ধত্ব দূরীকরণ কার্যক্রম সফল হয়।

গত বৃহস্পতিবার যেসকল রোগীর চোখে সফলভাবে কর্নিয়া স্থাপন করা হয় তারা হলেন- আব্দুর রহিম (১৮), তানহা মাহাজিন ইকরা (১৪) রাজিয়া খাতুন (৬০), খাদিজা (৬০), তাসলিমা (৩২) ও গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাস (৬০)। 

চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অচিরেই সংযোজনের জন্য কর্নিয়া পাঠাবে। এজন্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সান ডিয়াগো আই ব্যাংকের সঙ্গে এমওইউ চুক্তি সই করেন। 

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে কর্নিয়া সংযোজনে জনগণের অসচেতনতা এবং কর্নিয়া সংগ্রহের অপ্রতুলতার কারণে একটি বিরাট সংখ্যক কর্নিয়া রোগীর কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয় না। সে কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিভিন্ন বন্ধু রাষ্ট্রের সহায়তায় কর্নিয়া সংযোজনের জন্য এমওইউ চুক্তি সইয়ের উদ্যোগ নিয়েছেন।

টিআই/এমএ