১২শ কিডনি প্রতিস্থাপন, মাইলফলক গড়লেন ডা. কামরুল
বাংলাদেশি কোনো চিকিৎসক হিসেবে ১২শ কিডনি প্রতিস্থাপনের মাইলফলক গড়েছেন প্রখ্যাত কিডনি বিশেষজ্ঞ ও সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) রাতে সিকেডি হাসপাতালে একজন রোগীর দেহে কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এই রেকর্ড গড়েন তিনি।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যার পর ৪৫ বছর বয়সী কিডনি বিকল রোগী কাউসারের দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন কার্যক্রম শুরু করেন অধ্যাপক কামরুলসহ ১০ জনের বিশেষজ্ঞ টিম। প্রতিস্থাপন শেষ হয় রাত ১০টার দিকে। কিডনি দাতা (ডোনার) ছিলেন রোগী কাউসারের স্ত্রী।
ট্রান্সপ্ল্যান্টের পর কিডনি গ্রহীতা এবং কিডনি দাতা কেমন আছেন— জানতে চাইলে অধ্যাপক কামরুল বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে ১২শ তম রোগীর ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রম সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। কিডনি গ্রহীতা এবং কিডনি দাতা উভয়েই ভালো আছেন।
আরও পড়ুন : কিডনি চিকিৎসার নায়ক কামরুল মেডিকেলে হয়েছিলেন দেশসেরা
তিনি বলেন, রোগীকে পোস্ট অপারেটিভ রুমে পাঠিয়ে চিকিৎসকদের অবজারভেশনে রাখা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আশা করি আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যেই তারা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিতে পারবেন। এরপর প্রথম তিন মাস ঢাকায় থেকে প্রতি সপ্তাহে ফলোআপ করতে হবে। এরপর মাসে একবার করে ফলোআপ করলেই চলবে।
এক হাজার কিডনি প্রতিস্থাপন করে প্রথম দেশ-বিদেশে আলোচনায় এসেছিলেন দেশের এই প্রথিতযশা কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন। এবার সে রেকর্ড ছাপিয়ে তিনি ১২শ কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্ন করায় নেতৃত্ব দিলেন।
জানা গেছে, ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সফলভাবে তিনি রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপন করে আসছেন। সাফল্যের হার শতকরা ৯৫ শতাংশ, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সমকক্ষ।
প্রসঙ্গত, অধ্যাপক কামরুল ইসলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৪০ ব্যাচের শিক্ষার্থী। ১৯৮২ সালে তখনকার ৮টি মেডিকেল কলেজের সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। উচ্চশিক্ষাগ্রহণ করেন যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস অব এডিনবার্গ থেকে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বাবা আমিনুল ইসলাম পাকশী ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করায় স্থানীয় রাজাকার ও বিহারীরা তাকে হত্যা করে।
অধ্যাপক কামরুল ১৯৯৩ সালে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দেন। তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। প্রথমবারের মতো সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজ করেন ২০০৭ সালে। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে প্রতিষ্ঠা করেন সিকেডি হাসপাতাল।
টিআই/এসএসএইচ