কয়েক বছর কমতির দিকে থাকার পর, বিশ্বে কলেরা আক্রান্তের সংখ্যা আবার বাড়ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।  

গতকাল শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসেই, ২৬টি দেশে কলেরার প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া গেছে; যেখানে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রতি বছর ২০টিরও কম দেশে কলেরার প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া যায়। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কলেরা এবং ডায়রিয়া নিয়ে কাজ করা দলের প্রধান ফিলিপ বারবোজা জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেছেন, কয়েক বছর কমতির দিকে থাকার পর বিশ্বজুড়ে কলেরার প্রাদুর্ভাবের একটি উদ্বেগজনক উত্থান দেখছি।  প্রাদুর্ভাবের সংখ্যা বেড়েছে শুধু তাই-ই নয়, এগুলো আগের চেয়ে মারাত্মকও হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালে কলেরায় গড় মৃত্যুর হার আগের পাঁচ বছরের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি। কলেরা আবার বাড়ার জন্য দারিদ্র্য এবং সংঘাতের পাশপাশি জলবায়ু পরিবর্তনকেও দায়ী করেন তিনি।  

তিনি বলেন, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং খরার মতো প্রকৃতির চরম আচরণের কারণে অনেকে বিশুদ্ধ পানি পান না, যা কলেরা ছড়াতে ভূমিকা রাখে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলো তীব্র হওয়ার সাথে সাথে, কলেরা প্রতিরোধে এখনই কাজ না করলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। 

আরও পড়ুন : হারপেস সিম্প্লেক্স : ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন অস্ত্র 

কলেরায় আক্রান্ত হয়ে ঠিক কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে নেই। কারণ, প্রাদুর্ভাবের শিকার দেশগুলো এমন কোনো তথ্য রাখে না।  

বারবোজা বলেন যে চাহিদা তুলনায় কলেরার টিকার প্রাপ্যতা অত্যন্ত সীমিত। কয়েক মিলিয়ন ডোজ টিকা হাতে আছে যা এ বছরের শেষের মধ্যে ব্যবহার করা হবে।  

আরও পড়ুন : মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খেলে শরীরে কী হতে পারে?

তিনি আরও বলেন যে প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় পর্যাপ্ত টিকা হাতে নেই। এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, মূল সমস্যাটি হলো যে কলেরার টিকা উৎপাদন করে একটিই প্রতিষ্ঠান। এ টিকা উৎপাদনের সমস্ত খরচ কেউ নিজের কাঁধে নিতে চায় না। আরও প্রতিষ্ঠানকে টিকা উৎপাদনে নিয়ে আসা দরকার।  

কলেরা আক্রান্ত হয়ে যদিও কেউ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা যেতে পারেন, কিন্তু পানিশূন্যতা ঠেকিয়ে ও বিশেষ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে এর চিকিৎসাও সম্ভব। কিন্তু বহু মানুষ ঠিক সময়ে চিকিৎসা পান না।  

এছাড়া বিশুদ্ধ পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত করে প্রাদুর্ভাব রোধ করা যেতে পারে। বারবোজা বলেন, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, তবে তা আশাহত হওয়ার মতো না। সর্বোপরি কলেরা প্রতিরোধ করা যায় এবং এর চিকিৎসাও আছে।  

সূত্র : এএফপি।  

এনএফ