বিএসএমএমইউ স্পেশালাইজড হাসপাতাল
গ্রেড কমিয়ে সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, ক্ষুব্ধ আবেদনকারীরা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের জন্য জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল গত ৪ জুন। সেখানে ২৯ পদে ১৭৩ জন লোক নিয়োগের কথা বলা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ তম পদ ছিল হিসাবরক্ষকের। ১১তম গ্রেডে বেতন স্কেল হবে ১২৫০০-৩০২৩০ টাকা। পরে ১২ জুন সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে পদ ও লোকের সংখ্যা বাড়লেও কমিয়ে দেওয়া হয় গ্রেড।
সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে ১৪ তম গ্রেডে বেতন স্কেল করা হয়েছে ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা। আবার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতায় আনা হয়েছে পরিবর্তন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চাকরিপ্রার্থীরা।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১৫তম পদ হিসাবরক্ষকের। এই পদে ৫ জন নেওয়া হবে। যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে সব পাবলিক পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণি/বিভাগ/সমমানসহ অ্যাকাউন্টিংয়ে স্নাতক/সমমান ডিগ্রি। কম্পিউটারে দক্ষতাসম্পন্ন হতে হবে। সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদের অগ্রাধিকার, গ্রেড-১১। বেতন স্কেল ১২,৫০০-৩০,২৩০ টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের ১ থেকে ১১ নম্বর পদের জন্য ১০০০ টাকা, ১২ থেকে ২৪ নম্বর পদের জন্য ৮০০ টাকা এবং ২৫ থেকে ২৯ নম্বর পদের জন্য ৬০০ টাকা জমা দিয়ে রশিদের কপি সংগ্রহ করার কথা বলা হয়। আবেদনের সময় ছিল ১৯ জুন দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত।
এরপর ১২ জুন সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেখানে আবেদনের সময় ও পদের সংখ্যা বাড়ানো হলেও গ্রেড কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতায় পরিবর্তন আনা হয়। ৩১ পদে ১৮৪ জন লোক নেওয়ার কথা বলা হয়। এর মধ্যে ১৭তম পদ ছিল হিসাবরক্ষকের। এই বিজ্ঞপ্তিতেও হিসাবরক্ষকের পদ সংখ্যা ৫। যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা চাওয়া হয় সব পাবলিক পরীক্ষায় ন্যূনপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণি/বিভাগ/সমমানসহ বাণিজ্য বিভাগের যেকোনো বিষয়ে স্নাতক/সমমান ডিগ্রি এবং কম্পিউটারে দক্ষতাসম্পন্ন। সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদের অগ্রাধিকার, গ্রেড-১৪। বেতন স্কেল ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের ১ থেকে ১২ নম্বর পদের জন্য ১০০০ টাকা, ১৩ থেকে ২৬ নম্বর পদের জন্য ৮০০ টাকা এবং ২৭ থেকে ৩১ নম্বর পদের জন্য ৬০০ টাকা জমা দিয়ে রশিদের কপি সংগ্রহ করার কথা বলা হয়। আবেদনের সময় করা হয় ২৭ জুন দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ১১তম গ্রেড দেখে আমি আবেদন করেছিলাম। আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ১৯ জুন। এরপর তারা সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আরও ১০ দিন সময় বাড়িয়েছে, কিন্তু গ্রেড কমানো হয়েছে। এরই মধ্যে আমি আবেদন করে ফেলি। প্রথমেই যদি ১৪তম গ্রেড থাকতো আমি আবেদনই করতাম না।
তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে বিএসএমএমইউ’র রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু উনি আমাদের কথা শুনে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। আমাদের বলেন, পরীক্ষা দিলে দেবে, না দিলে নাই। কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। কোনো টাকা ফেরত দেওয়া হবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থী বলেন, যখন ১১তম গ্রেডের কথা বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল, তখন শুধুমাত্র অ্যাকাউন্টিং শিক্ষার্থীদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে বাণিজ্য বিভাগের যেকোনো বিষয়ের শিক্ষার্থীকে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়। ১১তম গ্রেডে তারা হয়তো তেমন প্রার্থী পায়নি, তাই বিষয় ও গ্রেড পরিবর্তন করেছে দুর্নীতির জন্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করা চাকরিপ্রার্থী সরওয়ার শামীম বলেন, প্রথমে ১১তম গ্রেড দেখিয়ে তারা ৮০০ টাকা করে আবেদন ফি নিয়েছে। আমরা অনেকেই গ্রেড দেখে আবেদন করি। কিন্তু হঠাৎ গ্রেড পরিবর্তন করে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। আবার বিষয়ের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা হয়। তবে ফি কমানো হয়নি। আমার মনে হয়, তারা দুর্নীতি করার জন্যই এমনটা করেছে।
এ বিষয়ে বিএসএমএমইউ রেজিস্ট্রার ডা. স্বপন কুমার তপাদার বলেন, সরকারি নীতিমালার সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। এতে যদি কেউ ক্ষুব্ধ হয়ে থাকেন, তাহলে তারা আমাদের কাছে আবেদন করুক। আমরা তাদের আবেদনগুলো সংরক্ষণ করে রাখব। সে অনুযায়ী যাচাই করে দেখব যে, তারা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন কি না। যদি তারা পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে থাকেন, তাহলে আমরা টাকা রিফান্ডের ব্যবস্থা করব। টাকা রিফান্ডের প্রশ্নে পরীক্ষার নেওয়ার পরে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এখনই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া যাবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে সংশোধনী কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাচাই-বাছাই করতে আমাদের একটু সময় লেগেছে। তারপর আমরা সংশোধনী দিয়েছি।
এএজে/এসএম