বাংলাদেশে মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্ট দেশের স্বাস্থ্য সেবাকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও এমিরেটস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ।

তিনি বলেছেন, আমাদের দেশে এমন একটি কাজ হয়েছে শুনে অনেক বিদেশি বন্ধুরাই আমার কাছে ফোন করে জানতে চেয়েছে আসলেই খবরটি সত্য কি না। তাদের অনেকেই এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না। এটি আমাদের জন্য বিরাট সাফল্য।

রোববার (২৭ মার্চ) রাতে ইউনাইটেড সিটির হেড অফিসের ইউনাইটেড ক্লাব হাউসে আয়োজিত ‘মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্টের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্টের পর রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠায় আমি রোগী ও তার স্বামীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বাংলাদেশে যে এ ধরনের সার্জারি সম্ভব তা জাহাঙ্গীর কবীরের নেতৃত্বে প্রমাণিত হয়েছে। এটি অত্যন্ত গৌরবের।

তিনি বলেন, ট্রান্সপ্লান্ট নিয়ে আমাদের দেশে কুসংস্কার আছে। একজন মৃত ব্যক্তি তার অঙ্গ দান করলে অন্তত ৫ থেকে ৬ জন মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারেন। এটি একটি বিরাট বিষয়। তাই মৃত্যুর পর অঙ্গদানে মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে।

প্রখ্যাত এ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, মৃত্যুর পর অঙ্গদান সংক্রান্ত একটি আইন করতে হবে। যেন এটি নিয়ে কোনো অপরাধ সংঘটিত না হয়। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সাথে কথা বলব। তিনি যেনো একটি আইন করার মাধ্যমে বিষয়টি সহজ করে দেন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।

মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্টে নেতৃত্ব দেওয়া চিকিৎসক ডা. জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, একটা সময় সরকারি হাসপাতাল ছাড়া কোথাও হার্টের চিকিৎসা ছিল না। রোগীরা ধুঁকে ধুঁকে মারা যেতেন। এখন বেসরকারি পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মানের হার্টের চিকিৎসা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা সর্বাধুনিক সার্জারি করছি। আমরা মেকানিক্যাল হার্ট ট্রান্সপ্লান্টের মতো সার্জারি করেছি। রোগী এখন সুস্থ আছেন। আমি উনার অপারেশন এমনভাবে করেছি যেনো ভবিষ্যতে হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট করা যায়।

অনুষ্ঠানে মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি হওয়া রোগীর স্বামী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, আমার স্ত্রী এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। এজন্য আমরা খুবই খুশি। আমি আমার স্ত্রীর জীবন ফিরে পেয়েছি, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।

তিনি বলেন, আমরা অনেক দেশে ঘুরে সর্বশেষ ইউনাইটেড হাসপাতালে জাহাঙ্গীর কবীরের কাছে আসি। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করছিলেন যে আমার স্ত্রী সুস্থ হবেন। আমার পরিবার প্রাথমিক অবস্থায় রাজি না হলেও জাহাঙ্গীর কবীরের আশ্বাসে আমরা সার্জারি করাই।

উল্লেখ্য, ইউনাইটেড হসপিটালের প্রধান কার্ডিয়াক সার্জন ও কার্ডিয়াক সেন্টারের পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর কবির এবং তার সহকর্মীরা গত ২ মার্চ ইউনাইটেড হসপিটালে সফলভাবে ৪২ বছর বয়সী এক নারীর হৃদপিণ্ডে একটি মেকানিক্যাল হার্ট এলার্ট স্থাপন করেন। যিনি দীর্ঘদিন হৃদপিণ্ডের নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। দেশে বিদেশে নানা চিকিৎসার পরও তার হৃদপিণ্ড প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়ছিল।

টিআই/এমএইচএস