বিধিনিষেধেই পার ৮৩ দিন, আছে ‘বিতর্ক’ আছে ‘প্রশংসা’
শেষ হলো ২০২১ সাল। বছরটি প্রশাসনের জন্য ঘটনাবহুল হয়ে থাকবে। একদিকে করোনা মোকাবিলায় লড়তে হয়েছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের, অন্যদিকে শুধুমাত্র বিধিনিষেধের কারণে ৮৩ দিন অফিস বন্ধ থাকায় অনেকের সময় কেটেছে ঘরে বসে। নিজের কর্মকাণ্ডে কেউ হয়েছেন ‘আলোচিত’ আবার কেউ হয়েছেন ‘সমালোচিত’।
করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ২০২০ সালের মতো ২০২১ সালেও বিধিনিষেধের পথে হাঁটতে হয় সরকারকে। শুরুতে সীমিত পরিসরে অফিস খোলা থাকলেও পরে একটানা ৬৪ দিন সরকারি-বেসরকারি অফিস ছিল বন্ধ। দ্বিতীয় ধাপে বন্ধ ছিল ১৯ দিন। সবমিলিয়ে বিধিনিষেধের কারণেই ৮৩ দিন বন্ধ ছিল সরকারি অফিস।
বিজ্ঞাপন
গেল বছর সম্পদের হিসাব ইস্যুতে শুরু হয় নানা আলোচনা। মাঠপ্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডে ওঠে সমালোচনার ঝড়। বরিশালে ইউএনও'র সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনায় সামনে আসে ‘আমলা-রাজনীতিবিদদের দ্বন্দ্ব’। বিতর্কের জন্ম দিয়ে মন্ত্রিত্ব হারান ডা. মুরাদ হাসান। সবমিলিয়ে প্রশাসনের জন্য ‘ঘটনাবহুল বছর’ হিসেবে মনে থাকবে ২০২১ সাল।
৮৩ দিন বন্ধের কবলে সরকারি অফিস
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গেল বছর ৫ এপ্রিল থেকে প্রথম দফায় সাতদিনের বিধিনিষেধ কার্যকর হয়। তবে এ সময় জরুরি কাজের জন্য সীমিত পরিসরে অফিস খোলা ছিল। পরে দুদিন বাড়িয়ে এ বিধিনিষেধ চলে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত।
সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে না পারায় আরও কঠোর হয় সরকার। ঘোষণা আসে কঠোর বিধিনিষেধের। ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণা দেয় সরকার। এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধের ঘোষণা আসে।
কয়েক দফা বাড়ে এ বিধিনিষেধ। ১৬ জুন পর্যন্ত টানা ৬৪ দিন বন্ধ থাকে অফিস। ১৭ জুন থেকে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেওয়া হয়।
অফিস খুলে দিলেও বিধিনিষেধ চলে ১৫ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত। এরপর ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সব বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত মোট ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়। পরে তা পাঁচদিন বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়।
২৩ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত বিধেনিষেধের টানা ১৯ দিন সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকে। ১১ আগস্ট থেকে ফের বিধিনিষেধ শিথিল হয়। এদিন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুনরায় খুলে দেওয়া হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস।
আলোচনায় সম্পদের হিসাব ইস্যু
আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতি পাঁচ বছর পরপর বাধ্যতামূলকভাবে সম্পদের হিসাব দেওয়ার বিধান রয়েছে। তবে এ বিধান অতীতে তেমন মানা হয়নি। সেজন্য গেল বছর (২০২১ সাল) কঠোর হয় সরকার। সম্পদের হিসাবের বিধান মানাতে গত জুলাই মাসে দেওয়া হয় চিঠি।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার আলোকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সচিবদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাওয়ার পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ নিজ দফতর ও সংস্থাগুলোকে সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ পাঠায়।
বিতর্কের জন্ম দিলেন মাঠপ্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা
মাঠপ্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা ২০২১ সালে অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্কের জন্ম দেন। তাদের মধ্যে একজন খাদ্য-সহায়তা চাওয়া ব্যক্তিকে জরিমানা করে সমালোচনার মুখে পড়েন। আরেকজন ছাগলের মালিককে জরিমানা করে হন তিরস্কৃত।
গত ২০ মে ৩৩৩-এ কল করে খাদ্য-সহায়তা চান নারায়ণগঞ্জের ষাটোর্ধ্ব ফরিদ উদ্দিন। সহায়তা দিতে সেসময় দায়িত্বে থাকা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরা ফরিদ উদ্দিনের বাড়ি গেলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার আইয়ুব আলী তাকে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেন। আইয়ুব আলী ইউএনওকে জানান, সাহায্য চাওয়া ব্যক্তি চারতলা বাড়ির মালিক ও সচ্ছল ব্যক্তি। এ ঘটনা জানার পর জরিমানা হিসেবে তাকে উল্টো ১০০ প্যাকেট খাদ্য-সহায়তা দিতে নির্দেশ দেন ইউএনও।
ইউএনও'র নির্দেশে ১০০ জনের খাদ্য-সহায়তার টাকা জোগাড় করতে নিজের ও ভাইয়ের স্ত্রীর স্বর্ণালঙ্কার বন্ধক দিতে হয় ফরিদ উদ্দিনকে। এ কষ্টে তিনি আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন। ২২ মে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা জোগাড় করে তিনি ১০০ জনকে খাদ্য-সহায়তা দেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের নজরে এলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসে।
সমালোচনার মুখে পড়েন ইউএনও। মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় স্থানীয় মেম্বার এবং যাচাই না করে জরিমানা করায় ইনএনও'র শাস্তি দাবি করেন অনেকে। পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ পান ফরিদ উদ্দিন।
গত ১৭ মে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ চত্বরের বাগানের ফুলগাছ খাওয়ায় ছাগলের মালিককে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেন ইউএনও সীমা শারমিন।
জরিমানা করার নয়দিন পর মালিক সাহারা বেগমকে না জানিয়ে সেটি বিক্রির অভিযোগ ওঠে। ২৬ মে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। চারদিক থেকে সমালোচনায় বিদ্ধ হন সীমা শারমিন। পরের দিন ২৭ মে জরিমানার টাকা ইউএনও নিজেই পরিশোধ করেন এবং ছাগল সাহারা বেগমের কাছে ফিরিয়ে দেন। গত ৮ জুন তাকে বদলি করা হয়।
প্রশংসাও পেয়েছেন অনেকে
ভালো কর্মকাণ্ডের কারণে মাঠপ্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা প্রশংসাও কুড়িয়েছেন। গত জুলাইতে দেশে করোনার সংক্রমণের অবস্থা ছিল নিয়ন্ত্রণহীন। মৃত্যু হলে প্রতিবেশী তো দূরের কথা অনেক ক্ষেত্রে নিজের পরিবারের লোকজনও কাছে আসতে চাইতেন না। পিরোজপুরের কাউখালীতে এমন একটি ঘটনা ঘটে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে রেখা আক্তার (৪৫) নামের এক নারী মারা যান। মরদেহের গোসল ও দাফনে কেউ এগিয়ে এলেন না। খবর পেয়ে এগিয়ে এলেন কাউখালীর ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাউখালী উপজেলার উজিয়ালখান গ্রামের ওই নারী গত ৯ জুলাই দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনায় মারা যান। আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে পরিবার বা প্রতিবেশী কেউই গোসল করাতে আসেননি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মরদেহ পড়ে থাকে। বিষয়টি জানার পর ইউএনও সুরক্ষাসামগ্রী (গাউন, হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক, ক্যাপ ও বুট জুতা) পরে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী গোসল শেষে কাফন ও দাফনের ব্যবস্থা করেন।
এছাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণের উদ্বৃত্ত টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন রংপুরের বদরগঞ্জের ইউএনও মেহেদী হাসান। জানা যায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে রংপুরের বদরগঞ্জে ভূমি ও গৃহহীন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু পরিবারের জন্য বাড়ি নির্মাণে পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দফতর থেকে এসব বাড়ি করে দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়িগুলো নির্মাণের পর উদ্বৃত্ত থেকে যায় ২৫ লাখ টাকা। ওই টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেন ইউএনও মেহেদী হাসান। এমন দায়িত্ববোধ ও স্বচ্ছতার জন্য তাকে সাধুবাদ জানান দেশবাসী।
সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ২১ মাস ছাড়
সরকারি চাকরিতে নিয়োগে বয়সসীমার ক্ষেত্রে ২১ মাস ছাড় পান করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রার্থীরা। গত ১৯ আগস্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব বরাবর এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এমন সিদ্ধান্তের ফলে ২০২০ সালের ২৫ মার্চের পর থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ ছাড়িয়ে যায়, তারা এ ছাড়ের সুবিধা পান।
বড় পদোন্নতি
গেল বছরে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপ-সচিব পদে বড় ধরনের পদোন্নতি দেয় সরকার। প্রশাসনে উপ-সচিব পদে ২০২১ সালেই সবচেয়ে বড় পদোন্নতি হয়। সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপ-সচিব পদে গত ৭ মার্চ পদোন্নতি পান ৩৫৮ কর্মকর্তা। ৭ সেপ্টেম্বর ৯২ জন যুগ্ম সচিবকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেয় সরকার।
গত ২৯ অক্টোবর উপ-সচিব থেকে পদোন্নতি দিয়ে ২১৩ কর্মকর্তাকে যুগ্ম সচিব করা হয়। সর্বশেষ ২১ জুলাই পাঁচজন অতিরিক্ত সচিবকে পদোন্নতি দিয়ে সচিব করে বিভিন্ন দফতরে দায়িত্ব দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ছয়জন সচিবকে বদলি করে অন্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
ইউএনও মুনিবুর রহমানের বাসায় হামলা
বরিশাল সদরের ইউএনও থাকাকালীন মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনাটি গেল বছরের অন্যতম আলোচিত ঘটনা হিসেবে মনে রাখবেন অনেকে।
গত ১৮ আগস্ট রাতে ব্যানার অপসারণ নিয়ে বরিশালে পুলিশ, আনসার ও স্থানীয় ছাত্রলীগ সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই রাতে ইউএনও'র সরকারি বাসভবনে হামলা চালানো হয়। অভিযোগ ওঠে, স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, শ্রমিক ইউনিয়ন, আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা হামলা চালায়।
ওই ঘটনায় গত ১৯ আগস্ট বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলা দায়ের করেন সদর থানার সেই সময়ের ইউএনও মো. মুনিবুর রহমান। অন্যটি করেন কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরির্দশক (এসআই) শাহজালাল মল্লিক। দুই মামলাতে প্রধান আসামি করা হয় বরিশালের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে।
সাদিক আব্দুল্লাহকে গ্রেফতারের দাবি জানায় বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিএএসএ)। ১৯ আগস্ট রাতে কার্যনির্বাহী পরিষদের এক জরুরি সভা শেষে বিবৃতিতে এ দাবির কথা জানায় তারা।
সংগঠনটির সভাপতি ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, বরিশালের মেয়র, যার অত্যাচারে সমগ্র বরিশালবাসী অত্যন্ত অতিষ্ঠ, সেই সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর হুকুমেই ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। অতএব, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন অবিলম্বে তার গ্রেফতার দাবি করছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।
অ্যাসোসিয়েশনের ওই বিবৃতি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এরপর অনেকটা প্রকাশ্যে আসে আমলা-রাজনীতিবিদ দ্বন্দ্ব!
নানা আলোচনা আর সমালোচনার পর ২২ আগস্ট রাতে বিভাগীয় কমিশনারের বাসভবনে ইউএনও ও মেয়র উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১৭ নথি গায়েব
গত ২৮ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১৭টি নথি গায়েব হয়ে যায়। ওই ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়। তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়।
কমিটির দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিভাগের চারজন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তারা হলেন- ক্রয় ও সংগ্রহ (২) শাখার সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর আয়েশা সিদ্দিকা, জোসেফ সরদার, প্রশাসন- ২ এর (গ্রহণ ও বিতরণ ইউনিট) অফিস সহায়ক বাদল চন্দ্র গোস্বামী ও প্রশাসন- ৩ শাখার অফিস সহায়ক মিন্টু মিয়া।
প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে মুরাদের পদত্যাগ
বিতর্কিত ও অশ্লীল মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়ে ২০২১ সালের শেষে এসে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন ডা. মো. মুরাদ হাসান।
ফেসবুক লাইভে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান ও নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি। প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে হাস্যরস করতে করতে ওই নারীকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন ডা. মুরাদ।
নারীবাদী সংগঠন থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলে এমপি মুরাদের শাস্তির দাবি ওঠে। কয়েকটি নারী সংগঠন বিবৃতিও দেয় এ বিষয়ে। এছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যে প্রতিবাদ জানানো হয়।
এর মধ্যেই এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে মুরাদ হাসানের আপত্তিকর ফোনালাপ ফাঁস হয়। মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়ে যায় এটি। ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ৭ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন তিনি।
এসএইচআর/এমএআর/