‘বর্তমানে যারা রাজনীতিতে আসেন তারা হয় সম্পত্তি বানানোর জন্য, না হয় সম্পত্তি রক্ষার জন্য আসেন’— এমন মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাংগঠনিক কমিটির এক নম্বর সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের মূল লক্ষ্য দেশ পরিচালনা করা। সেই আশা থেকে মানুষের অধিকার নিশ্চিতে কাজ করে যান তারা।

কিন্তু বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে যেভাবে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে তাতে রাজনীতির মূল লক্ষ্য উল্টে গেছে। এখন রাজনীতির মানে হচ্ছে ক্ষমতা ব্যবহার করে রাতারাতি বড়লোক হওয়া। যারা রাজনীতিতে এসে নিজেদের মুনাফা ও ব্যবসাকে প্রাধান্য দেন, তাদের আমি রাজনীতিবিদ বলে মনে করতে চাই না।

ইশরাক হোসেন অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে। বাবার দেখাদেখি বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে আলোচনায় আসেন তরুণ এ রাজনীতিবিদ।

সম্প্রতি ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক আদিত্য রিমনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনা, বিএনপির আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম ও নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি। নিচে তা পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো-

ঢাকা পোস্ট : রাজনীতিতে এসেই মেয়র পদে নির্বাচন করলেন। দারুণ আলোচনায়ও ছিলেন। এখন রাজনীতি নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

ইশরাক হোসেন : আসলে আমাদের দল যখন সিদ্ধান্ত নেয় যে মেয়র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, সেখানে তরুণ নেতৃত্ব তৈরির জন্যই সম্ভবত আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। আমরা কিন্তু একটা আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা, আমিও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি। আমাদের দলের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- বর্তমানে দেশে যে গণতন্ত্র নেই, ভোট-ব্যবস্থা বলতে যে কিছুই নেই; সেই জায়গা থেকে দেশকে মুক্ত করে আবারও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। রাষ্ট্রের মালিকানা ও রাষ্ট্রক্ষমতা জনগণের হাতে ন্যস্ত করা।

ডিএসসিসি মেয়র নির্বাচনী প্রচারণায় প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন / ছবি- সংগৃহীত

মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার না থাকায় যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে; সর্বত্র গুম, খুন, দুর্নীতি ও বিচারহীনতা; জবাবদিহিতার কোনো বালাই নেই। সেই জায়গায় আমরা আবার মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই। দেশে বিরাজনীতিকরণের যে প্রক্রিয়া চলছে তা পরিবর্তন করে প্রকৃত রাজনীতিকে ফিরিয়ে আনতে চাই। মোট কথা, দেশ ও জনগণের কল্যাণে আজীবন রাজনীতি করে যেতে চাই। এটাই আমার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।

ঢাকা পোস্ট : আপনি বলছেন, দল তরুণ নেতৃত্ব চেয়েছে বলেই আপনাকে মনোনয়ন দিয়েছে। এখন প্রশ্ন আসছে আগামীতে আবার মেয়র পদে নির্বাচন করবেন কি না?

ইশরাক হোসেন : অবশ্যই নির্বাচন করার পরিকল্পনা রয়েছে। আপনারা জানেন, আমার বাবা দীর্ঘ নয় বছর অবিভক্ত ঢাকা সিটির নির্বাচিত মেয়র ছিলেন। তিনি এ শহরের উন্নয়নে যেসব বাধা ও প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছিলেন, সেগুলো নিয়ে আমার সঙ্গে তার বিস্তর আলোচনা হতো। এ শহরেই আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা। তখন থেকেই আমার মধ্যে একটা ইচ্ছা ছিল যে দেশের বাইরের শহরগুলো, উন্নত শহরগুলো কীভাবে নাগরিকদের সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে; যেহেতু আমার বিদেশে পড়াশোনার সুযোগ হয়েছে, তাই বাইরের দেশগুলোর একটা উন্নত শহরের ম্যানেজমেন্ট (ব্যবস্থাপনা) কীভাবে হয়, কীভাবে পরিচালিত হয়, নাগরিকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা কীভাবে নিশ্চিত করে— এসব বিষয় নিয়ে গবেষণা করতাম। আমারও ইচ্ছা আছে পৃথিবীর সবচেয়ে অবসবাসযোগ্য শহরের তালিকা থেকে ঢাকাকে কীভাবে বাসযোগ্য শহরে পরিণত করা যায়। বলতে পারেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আগামীতেও মেয়র পদে নির্বাচন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাংগঠনিক কমিটির এক নম্বর সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন / ছবি- ঢাকা পোস্ট

ঢাকা পোস্ট : সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে বিগত এক দশকে বিএনপির আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য সফলতা আসেনি বলে বলা হচ্ছে। এ অবস্থায় সামনের দিনগুলোতে আবার আন্দোলনে নামার কথা বলছে বিএনপি। এবার কি সফলতা আসবে বলে মনে হয়?

ইশরাক হোসেন : শুধু রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমরা লড়াই করছি না। রাষ্ট্রের প্রতিটি যন্ত্রের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিয়ত লড়াই করে টিকে থাকতে হচ্ছে। এত হামলা-মামলা, নির্যাতনের পরও আমরা এখনও আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাচ্ছি। আমাদের আন্দোলনে ব্যর্থতা আছে, এটা তো বলতেই হবে। যেহেতু এখন পর্যন্ত সফল হয়নি, তবে অতীতে বিএনপি কিন্তু গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সফলতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশে বারবার গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। এবার হয়তো আমাদের কিছুটা সময় লাগছে।

আমি আমাদের মুরুব্বিদের কাছ থেকে শুনেছি, পাকিস্তান আমলেও বর্তমান সরকারের মতো এমন ফ্যাসিস্ট সরকার ছিল না। সে কারণে হয়তো-বা এবার আমাদের সময় লাগছে। আর সাংগঠনিক দুর্বলতা থাকতেই পারে। এটা দল প্রতিনিয়ত মনিটর করছে। তা কাটিয়ে ওঠার জন্য যা-যা দরকার তা-ই করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পুরো দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোকে পুনর্গঠন করা হচ্ছে। দলকে কীভাবে আরও শক্তিশালী করা যায় সেটা নিয়ে কাজ চলছে।

দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন / ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা পোস্ট : বিএনপির ভেতরে একটা কথা প্রচলিত আছে যে দলটির নেতারা আন্দোলনের চাইতে নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্যে বেশি মনোযোগী। শুধু তা-ই নয়, অনেকে নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য রক্ষার জন্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতা, অনেক সময় দলের নীতির বিপক্ষে গিয়েও কথা বলেন। আপনার কী মনে হয়?

ইশরাক হোসেন : আমি মনে করি, যদি কোনো রাজনীতিবিদ এটা করে থাকেন, সেটা যে দলেরই হোক না কেন, তাকে ধিক্কার জানাই। কারণ, এটার নিন্দা করলেও কম হয়ে যাবে। একজন রাজনীতিবিদের লক্ষ্য কী? তারা দেশ পরিচালনার আশা দেখেন। মানুষের অধিকার নিশ্চিতের জন্য তারা কাজ করে যান। সেক্ষেত্রে কেউ যদি তাদের মূল লক্ষ্য থেকে সরে গিয়ে নিজেদের মুনাফা-ব্যবসা বা স্বার্থকে প্রাধান্য দেন, তাকে আমি রাজনীতিবিদ বলে মনে করতে চাই না।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে আমাদের রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে, এখানে রাজনীতির ক্ষমতাকে ব্যবহার করে রাতারাতি বড়লোক হওয়া যায়। আমি প্রায়ই বলি, এখন যারা রাজনীতিতে আসেন তারা হয় সম্পত্তি বানানোর জন্য অথবা সম্পত্তি রক্ষার জন্য আসেন। যেকোনো গণতান্ত্রিক দলে সমালোচনা করার অধিকার আছে। তবে সেটা হতে হবে দলীয় ফোরামে। আমি যদি পাবলিকলি (প্রকাশ্যে) দলের সমালোচনা করার চেষ্টা করি, তাহলে তো আমার প্রতিপক্ষ এটাকে আমারই বিপক্ষে কাজে লাগাবে। ভুল বার্তা যাবে। ফলে এটা ঠিক নয়।

বাবা প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ইশরাক হোসেন / ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা পোস্ট : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে কারাগারে যাওয়ার পর থেকে দল পরিচালনা করে আসছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দল পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় তিনি অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা দলের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আপনার কি মনে হয় তিনি যে পন্থায় দল পরিচালনা করছেন সেটা সঠিক?

ইশরাক হোসেন : আমি ব্যক্তির পূজা করি না। কিন্তু আমার বলতে কোনো দ্বিধা নেই যে আজ বিএনপি আছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কারণেই। এটাও বলা যেতে পারে, আমরা এখন তারেক রহমানের দল করি। আজ বিএনপিকে শেষ করার জন্য বর্তমান সরকার যতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো- তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালানো। সুশীল সমাজ বা যা-ই বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে সবার সমালোচনা করার সুযোগ আছে এবং আমরা তা বিশ্বাস করি। কিন্তু আমরা যারা দলের ভেতরে থেকে কাজ করছি, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে তারেক রহমান যদি দলের হাল না ধরতেন তাহলে আজ বিএনপি নিঃশেষ হয়ে যেত।

একটা জিনিস তিনটা দিক থেকে দেখা যেতে পারে। হয়তো আমার দিক থেকে মনে হতে পারে যে তারেক রহমান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা সঠিক নয়। কিন্তু তিনি কোন পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, সেটা তিনি-ই ভালো বোঝেন। এছাড়া তিনি তো আমাদের চাইতে দলকে, দেশকে কম ভালোবাসেন না। তিনি সঠিক পথেই দল পরিচালনা করছেন বলে মনে করি।

পুলিশের হাতে আটক কর্মীকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের / ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা পোস্ট : বিএনপির আন্দোলন নিয়ে একটা মিথ প্রচলিত আছে যে ‘ঈদের পরেই আন্দোলন’। এখনও আপনারা বলছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি আন্দোলন করবে। আসলে আপনাদের বর্তমান নেতৃত্ব প্রধান প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের কৌশলের কাছে বারবার মার খাচ্ছে। বিএনপির সেই আন্দোলন সফল হবে কি?

ইশরাক হোসেন : গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সিংহভাগই আমরা অর্জন করে ফেলেছি। মানুষ বর্তমান সরকারকে চিনে ফেলেছে। মানুষ তাদের বিপক্ষে চলে গেছে বিধায় নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলেছে। সরকার এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করেছে। সেক্ষেত্রে আমি বলব, আমরা জনগণকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। এটার জন্য আমাদের দলের বহু নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। অনেক নেতাকর্মী জেল খেটেছেন, অত্যাচার সহ্য করেছেন। তারপরও আমরা আমাদের আসল লক্ষ্য থেকে সরে আসিনি।

আমি মনে করি যেভাবে বিএনপি এগোচ্ছে, অতীতে যেভাবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন, আগামীতেও এ দল গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। এটা কিন্তু বিএনপির একক লড়াই নয়, সমগ্র জাতির লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।

আপনি দেখেন, সারাদেশের মানুষ কিন্তু বিএনপির ওপর আস্থা রাখছেন। অন্য কোনো রাজনৈতিক দল যদি বিএনপি থেকে ভালো করত তাহলে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ মনে করত। বিএনপির ধারেকাছে এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল ভিড়তে পারেনি। আমাদের জনপ্রিয়তা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন তুঙ্গে। এটাই আমাদের অর্জন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাংগঠনিক কমিটির এক নম্বর সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন / ছবি- ঢাকা পোস্ট

আর ক্ষমতায় যাওয়াই আমাদের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য নয়। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করাই আমাদের লক্ষ্য। সেটা অবশ্যই আমরা করব এবং বিজয়ী হব।

ঢাকা পোস্ট : আপনারা বলছেন সরকার ২০১৮ সালের নির্বাচনে আগের রাতে ভোট করে নিয়ে গেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আগামীতেও যদি একই রকম নির্বাচন হয় সেটা ঠেকাতে পারবে কি বিএনপি?

ইশরাক হোসেন : বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র পথই হচ্ছে নির্বাচন। সেখানে আমরা বলতে পারি, বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থার পরিবর্তন আনতে সরকারের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করব। এটা আমরা অতীতে করেছি, এখনও করে যাচ্ছি। আমাদের এক দফা আন্দোলন, সেটা হচ্ছে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা, যেটা আগে ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে বেআইনিভাবে তা বাতিল করে। আমরা আবারও সেই আগের নির্বাচনী ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই।

ঢাকা পোস্ট : গত নির্বাচনের আগে বিএনপি জয়ী হলে দলের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা আপনারা নির্ধারণ করতে পারেননি। সামনে দ্বাদশ নির্বাচন। বিএনপি নির্বাচিত হলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন বলে আপনি মনে করেন?

ইশরাক হোসেন : আগামীতে বিএনপি থেকে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সেটা ঠিক করাই আছে। আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াই হবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া দলের নিয়ম অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তো আছেনই। তিনিও দেশে এসে প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। এর বাইরে দল অন্য কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তবে কোনো পরিস্থিতি যদি তৈরি হয়, কোনো সিদ্ধান্ত যদি নিতে হয় তখন দেখা যাবে।

গত নির্বাচনেও (একাদশ সংসদ নির্বাচন) কিন্তু আমাদের দল একই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিল। তার একটা ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছিল। আমরা কিন্তু নির্বাচনে গিয়েছিলাম আন্দোলনের অংশ হিসেবে। আমরা জানি যে এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, সেটা খুব বেশি বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ ছিল না। তারপরও বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ বিষয়গুলো উঠে আসে যে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন এবং তাকে ঘিরে নির্বাচনী প্রচারণায় একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়।

ওই সময় আমরা বলেছিলাম, সংসদে গেলেই নির্ধারণ হবে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন। নিয়ম অনুযায়ী সংসদ সদস্যরাই ভোটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবেন। যেহেতু তখন আমাদের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে একটি মিথ্যা মামলায় বেআইনি আদালত, বেআইনি রায় দিয়ে আটকে রেখেছিল। তিনি যে আদালতের রায়ে দণ্ডিত, তিনি (খালেদা জিয়া) প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না— আমরা তো এটা আমলে নিইনি। কারণ, যে আদালতে রায় হয়েছে সেই আদালত ও রায়কে তো আমরা মানি না। এটার বিরুদ্ধে তো আমাদের লড়াই চলছিল।

এএইচআর/এমএআর/