সাংবাদিক হত্যা, বিচারপতি মানিক আটকসহ সিলেটে আলোচিত যত ঘটনা
দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে সিলেট থাকে সবসময় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আধ্যাত্মিক রাজধানী হিসেবে খ্যাত সিলেট ২০২৪ সালে বেশ কিছু ঘটনা ছিল আলোচনায়। বিগত বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, প্রশাসনিক তৎপরতার অভাব, রাজনৈতিক উত্তাপ, সড়ক দুর্ঘটনা, বরেণ্য আলেমের বিদায়, জুলাই আন্দোলন এবং সামাজিক প্রতিবাদের কারণে বছরজুড়ে গণমাধ্যমের শিরোনামে ছিল সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে উল্লেখযোগ্য সব ঘটনা।
প্রেমের টানে সিলেটে
বিজ্ঞাপন
ভালোবাসার মানুষকে কাছে পেতে সুদূর জার্মান থেকে সিলেটের বিশ্বনাথে ছুটে আসেন সে দেশের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষিকা মারিয়া। জার্মান থেকে এসে সরাসরি সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার শ্রীধরপুর গ্রামের আরিছ আলীর ছেলে আব্রাহাম হাসান নাঈমের বাড়িতে ওঠেন। ৫ জানুয়ারি মুসলিম রীতিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
এদিকে ফেসবুকে থেকে পরিচয়ের মাধ্যমে ভারত থেকে সিলেটের জৈন্তাপুরে এসে বিজিবির হাতে আটক হন নাইকো দাস (১৯) নামে এক ভারতীয় তরুণী। ৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টার সময় জৈন্তাপুরে পরবর্তী সময়ে বিএসএফ ক্যাম্পের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাকে ভারতে হস্তান্তর করা হয়।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সিলেট
সিলেটে ২০২৪ সালে ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে মে মাসের ১৯ তারিখেও পুলিশের বাধায় সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে পূর্ব ঘোষিত সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপি। বাধার মুখে বিএনপি নেতারা স্থান পরিবর্তন করে নগরের কোর্ট পয়েন্টে পথসভা করে।
সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির পুরোনো কমিটি বিলুপ্ত করে ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় বিএনপি নতুন ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। অ্যাডভোকেট ফজলুল হক মিলনকে আহ্বায়ক এবং অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম কায়কোবাদকে সদস্য সচিব করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
নতুন নেতৃত্ব গ্রহণের পর থেকেই জেলা রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। দলীয় ঐক্য বজায় রাখার চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি পায়।
জুলাই বিপ্লব
সারাদেশের ন্যায় জুলাই বিপ্লবে উত্তাল ছিল সিলেট বিভাগ। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে তা ছড়িয়ে পড়ে সিলেটের সবগুলো জেলা ও উপজেলায়। মিছিল, সমাবেশ, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ আর আত্মহুতির মাধ্যমে জুলাই বিপ্লব সফলতা পায়। বিপ্লবে এই অঞ্চলে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী রুদ্রসেন প্রথম মারা যান। এরপর সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের গুলিতে এক দিনে প্রাণ হারান ৬ জন। এদিন পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন দৈনিক নয়া দিগন্তের সাংবাদিক এটিএম তুরাব। পরে এ ঘটনায় ১৮ ডিসেম্বর সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সাদেক কাওসার দস্তগীরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ৩ আগস্ট মৌলভীবাজারের জুড়ীতে হামলা হয় ছাত্র-জনতার ওপর। ৪ আগস্ট জেলা শহরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করে। স্বাধীনতার পর মৌলভীবাজারে ছাত্র-জনতার সাথে আওয়ামী লীগসহ পুলিশের হামলা শুরু হয় দুপুর ১২টার কিছু সময় পর থেকে যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন
বরেণ্য আলেমের বিদায়
সিলেটের শ্রদ্ধেয় আলেম জামেয়া ক্বাসিমুল উলুম দরগাহ মাদরাসার মুহতামিম, দেশের প্রথিতযশা আলেম শায়খুল হাদিস মাওলানা মুফতি মুহিব্বুল হক গাছবাড়ি হুজুর মারা যান ১৭ মে। সেদিন বাদ মাগরিব হযরত শাহজালাল (র.) দরগাহ মাদরাসায় তার নিজ বিশ্রামকক্ষে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। শায়খুল হাদিস মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ি মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত জামেয়া ক্বাসিমুল উলুম দরগাহ মাদরাসার অধ্যক্ষের (মুহতামিম) দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ উলামা পরিষদের সভাপতি, আযাদ দ্বিনী এদারায়ে তা’লিম বাংলাদেশ শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাগুলোর সর্বোচ্চ অথরিটি আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অন্যতম সদস্য ছিলেন।
ভূমিকম্প
বছরের আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে সিলেট অঞ্চলে ভূমিকম্প একটি। বিভিন্ন গবেষণা ও তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডাউকি ফল্টের কারণে ভূমিকম্প আতঙ্কে রয়েছে সিলেট। বছরে বেশ কয়েকবার সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেট অফিসের সূত্র মতে, গত ১৪ আগস্ট ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্পটি ছিল এই বছরের সর্বোচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প।
রিসোর্ট থেকে অতিরিক্ত সচিবের মরদেহ উদ্ধার
সিলেটের মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বালিশিরা রিসোর্ট থেকে ১০ অক্টোবর শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সালাউদ্দিন মাহমুদের মরদেহ উদ্ধার করে। এই ঘটনাটি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। সালাউদ্দিন মাহমুদ এসএমই ফাউন্ডেশনের সরকারি কাজে মৌলভীবাজার এসে শ্রীমঙ্গলের বালিশিরা রিসোর্টে ওঠেন। ১০ অক্টোবর সকালে সরকারি একটি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও তার রুমে ডাকাডাকি করে কোন সাড়া না পেয়ে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানায়। পুলিশ বিকল্প পথে রুমে প্রবেশ করে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিচারপতি মানিক আটক
জুলাই পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে আলোচনায় ছিল সিলেট সীমান্ত। বিপ্লব পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা এ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন রয়েছে। দেশের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল সাবেক বিচারপতি মানিকের আটকের ঘটনা। সিলেটের কানাইঘাটের দনা সীমান্ত এলাকায় তার কলাপাতায় শুয়ে পড়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল।
কুলাউড়া সীমান্তে কিশোরী স্বর্ণা দাশ হত্যা
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে কিশোরী স্বর্ণা দাশের নিহতের খবরটি দেশ এবং বিদেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠে। কিশোরী স্বর্ণা মরদেহ মায়ের সঙ্গে গত ১ সেপ্টেম্বর ভাইকে দেখতে দালালের মাধ্যমে ভারতে যাবার জন্য সীমান্তে গেলে বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করে মরদেহ নিয়ে যায়। ঘটনার দুই দিন পর চাতলাপুর চেকপোস্ট দিয়ে ভারতীয় পুলিশ বাংলাদেশি পুলিশের কাছে স্বর্ণার মরদেহ হস্তান্তর করে।
আদালত কেন্দ্রিক বিভিন্ন ঘটনাবলি
সাবেক বিচারপতি মানিক আটকের পর তার ওপর আদালত প্রাঙ্গণে ডিম, জুতা নিক্ষেপ ও হামলা চালায় আম জনতা। হামলায় তার অণ্ডকোষ ফেটে যাওয়ার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। এছাড়া জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বিভিন্ন মামলার আসামি হিসেবে একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা পুলিশ কর্মকর্তাকে সিলেট আদালতে হাজির করার সময় জুতা নিক্ষেপ, ডিম ছুড়ে মারার ঘটনা ঘটে আদালত চত্বরে। এ ঘটনায় সিলেটসহ সারাদেশেই আলোচনার জন্ম হয়।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে সুনামগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় এক বিতর্কের সূত্রপাত হয়। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দীপঙ্কর কান্তি দে এবং সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রিপনসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও মারধরের অভিযোগে মামলা করা হয়। মামলার বাদী যুব অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি মোজাহিদ আলী অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগ নেতারা তাকে নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার জন্য চাপ দেন এবং তা না মানায় তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
এই ঘটনায় সুনামগঞ্জের ছাত্র রাজনীতিতে অস্থিরতা দেখা দেয়। জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় এক কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে ২ জনের ফাঁসির আদেশ দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। দুই জনের ফাঁসির রায়ের এই ঘটনাটি জেলাজুড়ে তুমুল আলোচিত হয়।
আলোচিত খুনের ঘটনা
এ বছরের অন্যতম হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সুনামগঞ্জের সবচেয়ে আলোচিত হত্যা ছিল এসপি বাংলোর পাশের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া মা-ছেলের মরদেহ। গেল ২৯ অক্টোবর এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশের তদন্ত শেষে জানায় একটি আইফোনের জন্য নিজের খালা ও খালাতো ভাইকে খুন করে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এছাড়া সিলেট জেলা কানাইঘাট উপজেলায় শিশু মুনতাহা খুনের ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।
ধর্মীয় ইস্যুতে উত্তেজনা
১৫ অক্টোবর সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে মুসল্লিদের ওপর সাদপন্থিদের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। জামালগঞ্জের উলামা মাশায়েখদের আয়োজনে প্রতিবাদ সমাবেশে স্থানীয় বাসিন্দাদের ব্যাপক অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়।
সমাবেশে সাদপন্থিদের জামালগঞ্জে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি তোলা হয়। এই বিক্ষোভের ফলে সামাজিক উত্তেজনা তৈরি হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
আগুনে পুড়ে একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যু
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায় বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে বসতবাড়িতে আগুন লেগে একই পরিবারের ৬ জন নিহতের ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। আলোচিত এই ঘটনায় নিহত হন বাক প্রতিবন্ধি ফয়জুর রহমান, স্ত্রী শিরিন বেগম, তিন কন্যা সামিয়া, সাবিনা, সোনিয়া ও একমাত্র ছেলে সায়েম উদ্দিন। আগুনের ঘটনায় একই পরিবারের সবাই মারা যান। এরকম ঘটনা মৌলভীবাজার জেলার ইতিহাসে কোনো সময় ঘটেনি। ২০২৪ সালের ২৬ মার্চ ভোরে ঝড়ের সময় বৈদ্যুতিক লাইনের তার ছিড়ে ঘটনাটি ঘটে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় জুড়ী তথা মৌলভীবাজার জুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।
উজানি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যা
ভারত থেকে নেমে আসা উজানি ঢলে প্লাবিত হয় সিলেটের বেশ কিছু জেলা ও উপজেলা। বিশেষ করে মৌলভীবাজার জেলার সবকটি উপজেলা প্লাবিত হয় বন্যায়। ২০২৪ সালে ৪ দফা বন্যায় পতিত হয় মৌলভীবাজার জেলা। প্রথম দফা বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার জুড়ী, কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলা। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা বন্যা হয়। সর্বশেষ চতুর্থ দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার রাজনগর, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, সদর ও জুড়ী উপজেলা। ৪ আগস্ট চতুর্থ দফা বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাজনগর উপজেলা। রাজনগর উপজেলায় বন্যার পানি এরকম জায়গায় পৌঁছেছিল যে এলাকায় কোনো দিন বন্যা হয়নি সেসব এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। যার জন্য কয়েক লাখ মানুষ ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বাড়িঘর তলিয়ে গিয়ে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করে। বন্যায় মৌলভীবাজার জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার। বাড়িঘর হারায় কয়েকশ পরিবার।
জুন মাসে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। জেলার ৪৭টি হাওর এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। জেলা প্রশাসক এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করলেও বাস্তবায়নে সীমাবদ্ধতা দেখা যায়।
বন্যার কারণে হাওর এলাকার বহু কৃষক তাদের ফসল নষ্ট হয়। যার ক্ষতির পরিমাণ ৪৪ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে মৎস্য খাতে ক্ষতি হয় ৭২ কোটি টাকা। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কিছুটা উপকৃত হয়।
প্রতিবেদনটি প্রস্তুতে সহায়তা করেছেন সুনামগঞ্জের তামিম রায়হান ও মৌলভীবাজারের আশরাফ আলী।
আরকে