দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পতিত শেখ হাসিনার পঞ্চম মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। এর কিছুদিন পর থেকে পাঠ্যবইয়ে ‘শরীফার গল্প’ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। ২০২৪ সালে শুরু হওয়া সেই বিতর্ক যেন আওয়ামী সরকারের পিছু ছাড়েনি। পরবর্তীতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে সাবেক সরকারপ্রধানের কটূক্তিও জন্ম দেয় নতুন বিতর্ক। এসব বিতর্কের মধ্য দিয়ে শুরু হয় নতুন বিপ্লবের। অবসান হয় আওয়ামী শাসনামল। শুরু হয় প্রশাসনের নানা সংস্কার।  

‘শরীফার গল্প’ দিয়ে বিতর্কের শুরু

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয় শেখ হাসিনার পঞ্চম মন্ত্রিসভার। তবে, নতুন মন্ত্রিসভার শিক্ষামন্ত্রী বছরের শুরুতে পাঠ্যবই নিয়ে তোপের মুখে পড়েন। জানুয়ারির ১৯ তারিখে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক এক অনুষ্ঠানে সপ্তম শ্রেণির ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বইয়ে ‘শরীফার গল্প’ শিরোনামের লেখা বইয়ের পাতা ছিঁড়ে ফেলার পর সারা দেশে শুরু হয় বিতর্ক। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় চাকরিচ্যুত করা হয় ওই শিক্ষককে।

এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আন্দোলন গড়ায় রাজপথে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের ফটক আটকে শিক্ষকের পক্ষে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে নতুন কারিকুলামে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ অধ্যায়ের শরীফা শিরোনামের গল্প নিয়ে উদ্ভূত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত বিষয়ে আরও গভীরভাবে পর্যালোচনা করে এনিসিটিবিকে সহায়তা করার জন্য পাঁচ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

চলতি বছরের শুরুতে সপ্তম শ্রেণির ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বইয়ে ‘শরীফার গল্প’ শিরোনামের লেখা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক । ছবি- সংগৃহীত

বিচের নামও পরিবর্তন

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শেখ হাসিনার নতুন মন্ত্রিসভা দায়িত্ব গ্রহণের পর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা বিচের নাম পরিবর্তন করে ‘বঙ্গবন্ধু বিচ’ রাখা হয়। একই সঙ্গে ‘সুগন্ধা বিচ ও কলাতলী বিচ’-এর মাঝখানের খালি জায়গার নাম রাখা হয় ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচ’। ১৯ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এ নামকরণ করা হয়।

বরই বিতর্ক

শেখ হাসিনার পঞ্চম মন্ত্রিসভার শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এক অনুষ্ঠানে ইফতারে আপেল ও আঙুরের পরিবর্তে বরই খাবার পরামর্শ দেন। এটিও নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। সাবেক এ শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অভাব-অভিযোগ তো আছেই। সবকিছুতে তো আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ নই। আমাদের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়, সেগুলো আপনাদের বুঝতে হবে। এটা তো আর আপনারা করতে পারবেন না। পজিটিভ সাইডগুলো আপনারা দেখেন। বরই দিয়ে ইফতার করেন না কেন? আঙুর লাগবে কেন, আপেল লাগবে কেন; আর কিছু নাই আমাদের দেশে?’

৫৬০ শহীদ বুদ্ধিজীবীর খসড়া তালিকা প্রকাশ

চলতি বছরের ২৪ মার্চ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চার পর্বে মোট ৫৬০ শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়। এ অনুষ্ঠানে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘চার পর্বে মোট ৫৬০ জনের নাম প্রকাশ করেছি আমরা। এটি খসড়া তালিকা। তবে, চূড়ান্ত তালিকা ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখনও কোনো তালিকা কমিটি থেকে আমাদের দেওয়া হয়নি। এজন্য আমাদের কাছে সর্বশেষ কোনো আপডেট নেই। লিখিত কোনো তালিকা আমরা পাইনি বিধায় প্রকাশ করতে পারছি না।’

কোটা সংস্কার আন্দোলন দিয়ে শুরু, পরবর্তীতে যা সরকার পতনের এক দফা দাবিতে পরিণত হয় । ছবি- সংগৃহীত  

অস্ত্রাগার দেখাতে গিয়ে বিপাকে পুলিশ সুপার

বহিরাগতদের অস্ত্রাগার দেখানো এবং সেখান থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচারের সুযোগ দেওয়ায় শাহের ফেরদৌস রানা নামের এক পুলিশ সুপারকে চাকরিচ্যুত করা হয়। চলতি বছরের ৯ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

কোটা প্রথা পুনর্বহাল

পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সমতার ভিত্তিতে এগিয়ে নিতে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কোটা সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৫৬ শতাংশ কোটা ও ব্যাপক দুর্নীতির কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় ভালো করেও সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে পারতেন না। এ বৈষম্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনের পর ২০১৮ সালে প্রথম কোটাপ্রথা বাতিল করে দেয় তৎকালীন সরকার। ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামেন।

শিক্ষার্থীরা এবার ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে রাস্তায় নামেন। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে এ আন্দোলন চালিয়ে যান তারা। কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র-আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা দল-মত নির্বিশেষে এ আন্দোলনে অংশ নেন। তাদের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

চলতি বছরের জুলাইয়ে আপিল বিভাগের রায়ে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ আসন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা দল-মত নির্বিশেষে সরকার পতনের এক দফা দাবির আন্দোলনে অংশ নেন । ছবি- ঢাকা পোস্ট

নিষিদ্ধ জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবির

চলতি বছরের ১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতাকারী এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত সংগঠন জামায়াত ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।

২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী জামায়াত এবং এর সব অঙ্গ-সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী সত্তা’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

কোটার আন্দোলন থেকে এক দফা

৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটির সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে।’ পরে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন নাহিদ। তিনি বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অসহযোগ আন্দোলন চলবে।’

সেনাবাহিনীসহ নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এ সরকারকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। আপনারা সরকারকে সমর্থন না দিয়ে জনগণকে সমর্থন দিন।’

অসহযোগ কর্মসূচি ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচি ঠেকাতে ৪ আগস্ট তিন দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। বলা হয়, সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। সেই সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের কারফিউও বহাল রাখা হয়।

৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা, গণভবন দখলে নেন ছাত্র-জনতা । ছবি- সংগৃহীত 

ওই দিনের অসহযোগ আন্দোলনে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হামলায় ঢাকাসহ সারা দেশে ৮৩ জন নিহত হন। সরকার ঘোষিত ওই কারফিউ মানতে দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানায় সেনাবাহিনী।

পরের দিন ৫ আগস্ট ঢাকা অভিমুখে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন। তারা সারা দেশে বিক্ষোভ-আন্দোলন এবং গণঅবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেন। কঠোর হস্তে নৈরাজ্যবাদীদের দমন করতে ৪ আগস্ট দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৪ আগস্ট দুপুর থেকে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টিকটকসহ বেশকিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের ওপর সরাসরি গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।

দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা

৫ আগস্ট বেলা আড়াইটার দিকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর উল্লাসে রাজপথে নেমে আসেন ছাত্র-জনতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া লাখো মানুষের সমাবেশ বেলা আড়াইটার দিকে যাত্রা করে গণভবনের দিকে।

এরপর জনগণের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কথা বলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

সেনাপ্রধানের ভাষণের পর উচ্ছ্বসিত ছাত্র-জনতার মিছিলে স্লোগান ছিল, ‘কী হয়েছে কী হয়েছে, শেখ হাসিনা পালাইছে।’ ৩৬ দিন আগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার চেয়ে শুরু হওয়া আন্দোলন ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। শুরু হয় নতুন সরকারের যাত্রা।

চাকরি জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে সচিবালয়ের গেটের সামনে অবস্থান নেন আনসার সদস্যরা । ছবি- সংগৃহীত

জামায়াত নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন বাতিল

জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ এর অঙ্গ-সংগঠনের সন্ত্রাস-সহিংসতার সঙ্গে সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। সরকার বিশ্বাস করে, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ এর অঙ্গ-সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত নয়।

শুরুতেই হোঁচট খান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা শুরুর কয়েকদিনের মধ্যে পতিত আওয়ামী সরকারের রাজনৈতিক সুবিধার বিষয়ে কথা বলে হোঁচট খান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন। পরে তাকে গুরুত্বপূর্ণ এ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আনসারদের সচিবালয় ঘেরাও

চাকরি জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে সচিবালয়ের বিভিন্ন গেটের সামনে অবস্থান নেন প্রায় ২০ হাজার আনসার সদস্য। অন্তর্বর্তী সরকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর আনসারদের বিক্ষোভসহ নানা সংকট সামনে আসে। বঞ্চিতদের ব্যানারে বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার ভারে নুয়ে পড়ে সরকার। ফলে কার্যত পুলিশ সংস্কারের কাজ খুঁড়িয়ে চলতে থাকে। আনসার সদস্যদের সংকট মোকাবিলায় চলে দফায় দফায় বৈঠক। পরবর্তীতে আনসার বাহিনীর সংকট সমাধান হলেও পুলিশের নাজুক অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।

পুলিশ বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে গঠন করা হয় ‘পুলিশ সংস্কার কমিশন’ । ছবি- ঢাকা পোস্ট 

পুলিশ সংস্কারে নেওয়া হয় উদ্যোগ

নানা চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে নতুন সরকারের প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পর গঠন করা হয় পুলিশ সংস্কার কমিশন। সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেনকে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয়। এ কমিশনে সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ও যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ সাজ্জাদ আলী, ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ মো. গোলাম রসুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা ও মানবাধিকার কর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান। কমিশনে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিও রাখা হয়।

এমএম/