ভারতে চুরি হওয়া মোবাইলফোন প্রথমে দেশটির অভ্যন্তরে হাতবদল হয়। এরপর সেদেশের আবাসিক হোটেলে অবস্থান করা বাংলাদেশি চোরাকারবারিরা এসব ফোন সংগ্রহ করেন। পরে সময় সুযোগমতো ফলবাহী ট্রাকে করে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন চোরাকারবারিরা।

অবৈধ উপায়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পর চোরাই ফোনের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ আসে চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারে। এই বাজারে রয়েছে চোরাই মোবাইলের রমরমা ব্যবসা। চোরাকারবারিদের প্রধান টার্গেট আইফোন। এই মডেলের একেকটি ফোন বিক্রি করে ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হয়।

রিয়াজউদ্দিন বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্রে জানা গেছে, ভারতে হারিয়ে যাওয়া একটি চোরাই মোবাইল মাসখানেক আগে চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে উদ্ধার হয়। এর আগে রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে কেনা একটি আইফোন নিয়ে ভারতে গিয়ে দেশটির পুলিশের হাতে আটক হন শাহ আলম নামে একজন। রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে কম দামে আইফোনটি কিনেছিলেন শাহআলম। দেশে মোবাইলটি নিরাপদে ব্যবহার করছিলেন তিনি। চিকিৎসার জন্য ভারতের মুম্বাই শহরে গেলে সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে আটক করে। কারণ, তার হাতে যে মোবাইলটি ছিল সেটি ভারত থেকে চুরি হয়েছিল।

গত ছয় মাসে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া একাধিক ব্যক্তি চোরাই মোবাইল নিয়ে ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। এতে একদিকে যেমন বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে, অন্যদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। তাই এই বেআইনি ব্যবসা বন্ধে অনতিবিলম্বে রিয়াজউদ্দিন বাজারে বড় পরিসরে অভিযান পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন খোদ ব্যবসায়ীরা।

দেশে এসব অবৈধ মোবাইল বিক্রির জন্য রিয়াজউদ্দিন বাজারে মোহাম্মদীয়া প্লাজায় 'মিশমা টেলিকম' নামে একটি দোকান দেন রাশেদ। ওই দোকানে বসেন রাশেদের ভাই কায়সার। সেখান থেকে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন দোকানে এবং বিভিন্ন জেলা-উপজেলার দোকানগুলোতে চোরাই মোবাইল সাপ্লাই দেওয়া হয়। আবার, একই দোকানে সংগ্রহ করা হয় বাংলাদেশে চুরি যাওয়া এবং ছিনতাই হওয়া মোবাইল। এসব মোবাইল কায়সার নিয়ে যান দুবাই। সেখান থেকে মোবাইলগুলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে যায়

দিনের পর দিন এভাবে অবৈধ ব্যবসা চললেও লাগাম টানতে পারছে না পুলিশ। অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের যোগসাজশের কারণে মূল হোতারা থেকে যায় অধরা। সবশেষ ভারতীয় এক তরুণীর হারানো মোবাইল উদ্ধার হলেও কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করলেও পরবর্তীতে সমঝোতার ভিত্তিতে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) শীর্ষ এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিয়াজউদ্দিন বাজারে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান।

কেন চোরাই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা?

সাধারণত একটি নতুন ফোনে দোকানিরা এক থেকে দুই হাজার টাকা লাভ করতে পারেন। তবে চোরাই মোবাইল হলে একেকটিতে তারা ২৫ থেকে ৩৫-৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করেন। এ কারণে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা চোরাই মোবাইল বিক্রির দিকে ঝুঁকছেন।

রিয়াজউদ্দিন বাজারের এক মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী জানান, একটি আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স মডেলের মোবাইলের বর্তমান মূল্য দেড় লাখ টাকা। ভারতের চোরাকারবারিরা এটি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এ ধরনের একেকটি মোবাইল বর্ডার ক্রস করতে খরচ হয় ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এরপর এসব মোবাইল দোকানে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এতে ৩৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে ক্রেতারাও প্রচলিত বাজারমূল্যের প্রায় অর্ধেক মূল্যে ফোন পেয়ে সন্তুষ্ট হন। সম্প্রতি ভারতীয় চোরাই মোবাইল উদ্ধারের ঘটনা জানাজানি হওয়ায় আতঙ্কে আছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

চোরাচালানের গডফাদার রাশেদ-রুবেলরা অধরা

একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, রিয়াজউদ্দিন বাজারে চোরাই মোবাইলের ব্যবসার অন্যতম মূল হোতা মো. রাশেদ। এই বাজারে তার মতো ১৫ থেকে ২০ জন একই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে হেলাল, তারেক ও রুবেলসহ কয়েকজনের নাম সবাই জানেন।

রাশেদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একসময় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছিলেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাসিন্দা এই যুবক। সেখানে সুবিধা করতে না পেরে কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে আসেন তিনি। চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারে চাকরি নেন একটি দোকানে। বিক্রয়কর্মী হিসেবে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও তার সঙ্গে চোরাচালানে জড়িত লোকজনের সখ্য গড়ে ওঠে।

একপর্যায়ে নিজেই জড়িয়ে যান চোরাচালানে। এরপর তাকে আর পেছনফিরে তাকাতে হয়নি। কয়েক বছরের মধ্যেই অঢেল সম্পত্তির মালিক বনে যান তিনি। সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নে গড়ে তোলেন সুরম্য দালান-কোঠা। অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে তার চলাফেরায়।

রাশেদের মোবাইল চোরাচালানে জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে আসে গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন ভারত থেকে দেশে ফেরার সময় রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার ব্যাগ তল্লাশি করে ২২টি দামি মোবাইল, চার লিটার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, ১৭ পিস শাড়ি, ১৭ পিস থ্রিপিস এবং ৪০ পিস টি-শার্ট জব্দ করা হয়। তার সঙ্গে ছিল (B00311540) নম্বরের পাসপোর্ট। ঘটনার সময় তিনি প্রথমে কাস্টমস কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে যান। এরপর মাঠে এসে আর্মড পুলিশের হাতে আটক হন। তার ব্যাগে সন্দেহজনক মালামাল থাকায় তাকে পুনরায় কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর মালামালগুলো জব্দ করেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র ভৌমিক। তিনি নিজে সই করে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করেন।

সেই জব্দ তালিকার মন্তব্য অংশে লেখা হয়— ‘যাত্রী (রাশেদ) ব্যাগেজ ঘোষণা প্রদান করেননি। তিনি বারবার যাতায়াত করেন। যাত্রী বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ও বাণিজ্যিক পরিমাণে পণ্য আনয়ন করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে। তাই পণ্যগুলো শিফট ইনচার্জের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী আইনানুগ নিষ্পত্তির জন্য সাময়িকভাবে আটক করা হলো এবং ডিএম কপিটি বিচার শাখায় প্রেরণ করার জন্য সুপারিশ করা হলো।’

গত ৬ জুন রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে উদ্ধার করা হয় ভারতীয় নাগরিক দিপান্বিতার আইফোন/ ছবি : সংগৃহীত

সেদিন জব্দ তালিকা প্রস্তুত করার পর ছেড়ে দেওয়া হয় রাশেদকে। এরপর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, সেটি জানা যায়নি।

ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাসে কয়েকবার রাশেদ ভারতে আসা-যাওয়া করেন। পাশাপাশি দুবাইয়েও নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে তার।

দুটি দেশে রাশেদের ঘন ঘন সফরের বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, মূলত ভারতে চুরি যাওয়া এবং ছিনতাই হওয়া মোবাইল দেশে নিয়ে আসেন তিনি। এক্ষেত্রে নিজে কিছু নিয়ে আসেন। বাকিগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে এসব অবৈধ মোবাইল বিক্রির জন্য রিয়াজউদ্দিন বাজারে মোহাম্মদীয়া প্লাজায় 'মিশমা টেলিকম' নামে একটি দোকান দেন রাশেদ। ওই দোকানে বসেন রাশেদের ভাই কায়সার। সেখান থেকে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন দোকানে এবং বিভিন্ন জেলা-উপজেলার দোকানগুলোতে চোরাই মোবাইল সাপ্লাই দেওয়া হয়। আবার, একই দোকানে সংগ্রহ করা হয় বাংলাদেশে চুরি যাওয়া এবং ছিনতাই হওয়া মোবাইল। এসব মোবাইল কায়সার নিয়ে যান দুবাই। সেখান থেকে মোবাইলগুলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিয়াজউদ্দিন বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, চোখের সামনেই বিক্রয়কর্মী থেকে চোরাকারবারি হয়ে ওঠেন রাশেদ। তিনি এখন বেশিরভাগ সময় থাকেন কলকাতায়। সেখানে চোরাই মোবাইল সংগ্রহ করে বিভিন্ন মাধ্যমে দেশে পাঠান। এই রিয়াজউদ্দিন বাজারেই রাশেদের মতো কয়েকজন এ ব্যবসা করে রাতারাতি অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়ে গেছেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, চোরাই মোবাইল বাংলাদেশে পাচারকালে কয়েকমাস আগে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রাশেদ। ভারতীয় এক পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ের মোবাইল ফোন চুরির ঘটনায় তাকে কলকাতা অংশের বেনাপোল সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক হওয়ার পর রাশেদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া পণ্যের তালিকা/ সংগৃহীত

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে মো. রাশেদ ও রুবেলকে একাধিকবার কল দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। রিয়াজউদ্দিন বাজারে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি।

দুই চোরাকারবারিকে আটক করেও ছেড়ে দিলেন ডিবি কর্মকর্তা!

দীপান্বিতা সরকার নামে ভারতীয় এক তরুণীর আইফোন চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে উদ্ধারের তথ্য গত ৭ জুলাই সিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়। যদিও এটি উদ্ধার করা হয় এক মাস আগে। গত ৬ জুন রিয়াজউদ্দিন বাজারের জলসা মার্কেট থেকে মোবাইলটি উদ্ধার করে সিএমপির ডিবি ইউনিটের একটি টিম।

সেই মোবাইল উদ্ধারের বিষয়ে ডিবি কর্মকর্তারা জানান, গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যা পৌনে ৬টা থেকে ৭টা ৫ মিনিটের মধ্যে কলকাতার মহেশতলা থানা এলাকায় দীপান্বিতা নামে এক ভারতীয় তরুণী তার আইফোন ১৪ প্লাস মডেলের মোবাইলটি হারিয়ে ফেলেন। এ ঘটনায় মহেশতলা থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। কিছুদিন পর দীপান্বিতার কাছে একটি ই-মেইল যায়। এতে তিনি জানতে পারেন হারানো মোবাইলটি চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারে চালু হয়েছে। তখন তিনি সিএমপির অফিশিয়াল পেজে যোগাযোগ করে তার অভিযোগের কপি ও চালু হওয়া মোবাইলের লোকেশন পাঠান।

গত ৩১ মে দুজনকে আটক করেছিল ডিবি। এ দুজনের দোকানে থাকা বেশ কিছু মোবাইলও ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আটক হওয়াদের ছাড়িয়ে নিতে রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী নেতারা ডিবির সঙ্গে মধ্যস্থতা করেন। সমঝোতা শেষে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া চোরাকারবারিতে জড়িত আরেক ব্যবসায়ীকে হাতের নাগালে পেয়েও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ডিবি

সিএমপি জানায়, হারানো মোবাইল উদ্ধার করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় নগর ডিবির বন্দর ও পশ্চিম জোনকে। এ জোনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রবিউল ইসলাম ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন।

মোবাইল উদ্ধারের বিষয়ে ডিবির এ কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, যেহেতু মোবাইলটিতে কোনো সিম ঢুকানো হয়নি। তাই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে তদন্ত শুরু করা হয়। প্রথমে রিয়াজউদ্দিন বাজারে কারা ভারত থেকে চোরাই মোবাইল আনে তার খোঁজ নিয়ে তালিকা প্রস্তুত করি। এ তালিকায় ৪ জনের নাম পাওয়া যায়। এর মধ্যে তিনজনই তামাকুমুন্ডি লেন এলাকার। বাকি একজন হলেন জলসা মার্কেটের। শনাক্ত হওয়ার পর আমরা জলসা মার্কেটে টার্গেট করা দোকানে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। বিষয়টি টের পেয়ে অভিযুক্ত দোকান মালিক ফোনটি একজন ব্যবসায়ীর মাধ্যমে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন। গত ৬ জুন মোবাইলটি আমরা পাই। এরপর থেকে জলসা মার্কেটের ওই দোকানটি বন্ধ রয়েছে। আমরা শিগগিরই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করব।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ডিবির এ কর্মকর্তা যে চারজনের কথা বলেছিলেন তার মধ্যে গত ৩১ মে দুজনকে তিনি আটক করেছিলেন। তারা হলেন, তারেক ও হেলাল। এ দুজনের দোকানে থাকা বেশ কিছু মোবাইলও ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ দুজনকে ছাড়িয়ে নিতে রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী নেতারা ডিবির সঙ্গে মধ্যস্থতা করেন। সমঝোতা শেষে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া চোরাকারবারিতে জড়িত আরেক ব্যবসায়ীকে হাতের নাগালে পেয়েও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ডিবি।

রিয়াজউদ্দিন বাজারে চোরাই মোবাইল ব্যবসার অন্যতম মূল হোতা মো. রাশেদ/ ছবি : সংগৃহীত

আবার ছেড়ে দেওয়া দুজনের মধ্যস্থতায় জলসা মার্কেটের চোরাই কারবারি রুবেলের দোকান থেকে ভারতীয় তরুণীর মোবাইল ডিবি কর্মকর্তা এসআই রবিউলের কাছে হস্তান্তর করেন। সেই রুবেলকে আটক করতে পারেনি ডিবি।

সার্বিক বিষয়ে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) আবদুল মান্নান মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভারতীয় তরুণীর মোবাইল উদ্ধারের পর চোরাই মোবাইলের ব্যবসার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা আরও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। এরপর অভিযান পরিচালনা করা হবে।

রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে আটক হওয়া অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোনো তথ্য পেলে আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকি। হয়ত তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে অবশ্যই আমরা অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনব।

এমআর/এমজে/