নব্বই দশকের আগেও গ্রামের জনপ্রিয় শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবীরা আসতেন রাজনীতিতে। পরিচ্ছন্ন, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিরাই নাম লেখাতেন এখানে। তাদের দৃঢ় নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যেত, সাধারণ মানুষ পেত সমস্যার সমাধান। এখন সময় পাল্টেছে। রাজনীতি চলে গেছে টাকাওয়ালাদের হাতে। টাকার মাপকাঠিতে মনোনীত হচ্ছে নেতৃত্ব, টাকার জোরে পাকাপোক্ত হচ্ছে সিংহাসন। যোগ্যতা, নীতিনৈতিকতা ও আদর্শের স্থলে জায়গা পেয়েছে আনুগত্য। ফলে তৃণমূলের ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতারা রাজনীতির মাঠ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। সেই সুযোগে মাঠদখলে নিচ্ছেন কথিত টাকাওয়ালা জনপ্রিয়রা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মানুষ এখন দেওয়া-নেওয়ায় বিশ্বাসী। কিছু পেতে হলে কিছু দিতেই হবে। সাধারণের যেমন টাকার প্রয়োজন, তেমনি যার টাকা আছে তার প্রয়োজন ক্ষমতা। দুইয়ে–দুইয়ে চার মেলাতে গিয়ে আমরা নিজেরাই অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটিয়েছি। সেই সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে আমাদের মূল্যবোধের। টাকাওয়ালারা এখন সমাজব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে। সেই প্রভাব পড়েছে রাজনীতিতে। আগে জনপ্রিয়তা ছিল যোগ্যতা ও মূল্যবোধের ওপর, এখন সেটি স্থান করে নিয়েছে টাকার ওপর। ফলে নির্লোভ, ত্যাগী, দেশপ্রেমী ও সৎ মানুষেরা রাজনীতির মাঠ থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন।

দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছরে পাঁচবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় তারা। বর্তমানে টানা চারবার দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে দলটি। নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তারাও পরিবর্তন এনেছে। দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমরা অতীতে দেখেছি ত্যাগী, নির্লোভ, দেশপ্রেমী, তুলনামূলক সৎ ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরাই নেতৃত্বে আসতেন। সেক্ষেত্রে আস্থা রাখা হতো শিক্ষক, আইনজীবী ও চিকিৎসকদের ওপর। মানুষ তাদের শ্রদ্ধা করতেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এ ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যায়। তারা সেই সময় অর্থবিত্তের প্রভাব আছে এমন ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেয়। তাদের নেতৃত্বে রাজনীতিও ভিন্ন পথে হাঁটতে শুরু করে।

‘অর্থশালী মানুষের দাপট বেড়ে যায়। তাদের মনোনয়ন দেওয়ার জন্য প্রতিযোগিতাও শুরু হয়। পরবর্তীতে এটি আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে হয়নি, সেটি বলছি না। যারা এসেছেন, মনোনয়ন পেয়েছেন বা নেতা হয়েছেন, এলাকার মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু, সেটি না দেখেই আমরা তাদের ওপর নেতৃত্বভার অর্পণ করেছি। ফলে, এলাকার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাদের বিশাল দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তাদের বাছাই করার ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে আমাদের আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিল। এখনও উচিত। এই ধারা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, যাদের কাছে প্রচুর টাকা আছে তারাই এখন জনপ্রিয়। তারা ক্ষমতা দেখাতে পারে। কারণ, তারা অনেক দান-সদকা করে, মসজিদ-মাদ্রাসা বানিয়ে দেয়, সেখানে এয়ারকন্ডিশন লাগিয়ে দেয়, মানুষকে দিয়ে ওমরা করায়। এসব কারণে অর্থবিত্তের মালিকরাই জনপ্রিয়। আগে নেতৃত্বে আসতেন সমাজের সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিরা। সেক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবীদের প্রাধান্য দেওয়া হতো। এখন সেই সংস্কৃতির পরিবর্তন হয়েছে। বিপুল অর্থবিত্ত না থাকায় তাদের জনপ্রিয়তাও নেই। এখানে আমাদের মূল্যবোধের পরিবর্তন হয়েছে।

‘বিপুল অর্থবিত্তের মালিক যিনি, তাকেই এখন আমরা সম্মান করি। শুধু রাজনীতি নয়, সবক্ষেত্রে এ মূল্যবোধের পরিবর্তন হয়েছে। পুরো জাতির মূল্যবোধেই পরিবর্তন হয়েছে। যার দাপট আছে, টাকা আছে; যিনি বেশি বেশি দান-খয়রাত করতে পারেন, তিনিই দানবীর; তার জনপ্রিয়তাও বেশি। অন্য কেউ তাদের সামনে দাঁড়াতেই পারেন না।’

ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে এমন নীতির প্রভাব কেমন? জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। এখন যারা রাজনীতি করবেন, তাদের প্রচুর টাকা থাকতে হবে। নতুন যারা আসবেন, তাদেরও টাকা লাগবে। নির্বাচন করতেও এখন প্রচুর টাকা লাগে। আগে কর্মীরা স্বেচ্ছায় দলের পক্ষে, প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতেন। এখন টাকা ছাড়া কোনো কথা নেই। দল থেকে প্রার্থীরা কিছু পাননি বা প্রার্থীদের কাছ থেকে কর্মীরাও কিছু খাননি— এমন নজির আপনি দেখাতে পারবেন না। নির্বাচন আসলে গ্রাম কিংবা শহরে এমন তৎপরতা চোখে পড়ে। ফলে যাদের টাকা আছে তারাই নির্বাচন করেন। আর নির্বাচনে যে ব্যয় সেটি তুলতে নিয়োগ-বাণিজ্য, বালু বা জলমহাল দখল, ঠিকাদারি বা টেন্ডারবাজি— এমন কোনো হীন কাজ নেই, যা তিনি করেন না। শুধু নির্বাচনের ব্যয় নয়, সুদ-আসলে কয়েক গুণ টাকা হাতিয়ে নেন যাতে পরবর্তী নির্বাচনে ব্যয় করতে পারেন।’

শুধু ব্যবসায়ী বা অর্থবিত্তের মালিক নন, পরিবারতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় নেতার সন্তানরাও আসছেন রাজনীতিতে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয়রা বলছেন, নেতাদের ছেলে-মেয়ে হিসেবে কাউকে পদ দেওয়া যায় কিন্তু নেতা বানানো যায় না। নেতা হতে হলে তাদেরও (নেতার সন্তান) রাজনৈতিক যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়। বর্তমান সমাজে যারা জনপ্রিয় তারা কিন্তু টাকাওয়ালা। এটি অস্বীকার করার উপায় নেই। শুধু যে তারাই রাজনীতিতে আসছেন, এটিও সঠিক নয়।

তাদের মতে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থাকলে দল থেকেই অন্যরা উঠে আসার সুযোগ পান। আর যদি না থাকে তাহলে পরীক্ষিত কর্মীর বদলে নেতার পরিবারের সদস্যরা গুরুত্ব পান। আবার বংশপরম্পরায় অনেকেই নেতা হচ্ছেন। অনেক ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদ ক্ষমতার উচ্চ আসনে বসছেন। এখন এমপি (সংসদ সদস্য) ছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান কিংবা পৌরসভার মেয়র হিসেবেও এমন অনেকে এসেছেন, যাদের পিতা একসময় সেই পদে ছিলেন।

দেশে বিত্তবান ও নেতার সন্তানদের রাজনীতিতে আসা প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ঢাকা পোস্টকে বলেন, “প্রথম কথা হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র নেই। দেশে স্বৈরতন্ত্র চলছে। মানুষের ন্যূনতম অধিকার নেই। রাজনীতি সর্বোচ্চ ফ্যাসিবাদের কাছে বন্দি। রাজনীতি স্বাভাবিক থাকলে সৃজনশীলতা প্রত্যাশা করা যায়। এখন যেটি চলছে তা হলো ‘জোর যার মুল্লুক তার’। এখন যেহেতু ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেই কারণে সৃজনশীলতা নেই বললেই চলে। এটি না থাকলে রাজনীতি থাকে না। রাজনীতি না থাকলে সাধারণ মানুষও মুখ ফিরিয়ে নেবে।”

‘দেশে যখন গণতন্ত্র ফিরে আসবে, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া যখন সৃজনশীল হবে, তখন সাধারণ মানুষ রাজনীতির প্রতি ফের আস্থা ফিরে পাবেন। তৃণমূলে যারা জনপ্রিয় ও যোগ্যতাসম্পন্ন তারাই রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন।’

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, তৃণমূলের জনপ্রিয়রা মূল্যায়িত হচ্ছেন না, আমি এটি মনে করি না। স্থানীয় রাজনীতিতে জনপ্রিয়দের নেওয়া হচ্ছে, তারা নেতৃত্বে আসছেন। রাজনীতিতে জনপ্রিয়তা, দক্ষতা, গ্রহণযোগ্যতা, ত্যাগ-তিতিক্ষা, সৎ-সাহস, নীতি-নৈতিকতা— এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এসব দেখেই পদ-পদবি দেওয়া হয়। এ কারণে আওয়ামী লীগ এখনও তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং এর নেতাকর্মীরা জনপ্রিয়। দলীয় সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জনপ্রিয়তার সুউচ্চ স্থানে অবস্থান করছেন। এটি দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে গৌরবান্বিত করেছে।

চলতি সংসদে সংসদ সদস্যদের মধ্যে অধিকাংশের পেশাই (৬৬.৮৯ শতাংশ বা ২০০ জন) ব্যবসা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে এ হার শতকরা ৬৫.৯২ শতাংশ (১৪৭ জন)। আবার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে ২৯ জন (৯.৩৯ শতাংশ) আইনজীবী, (প্রকৃত তথ্য হবে ৩২ জন এবং ১০.৬৭ শতাংশ)। এই ৩২ জনের মধ্যে ২৬ জনই আওয়ামী লীগের। অর্থাৎ ব্যবসায়ী ও আইনজীবীরাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এগিয়ে আছেন। মাঠের বা তৃণমূলের প্রকৃত রাজনীতিবিদরা দলে গৌণ হয়ে পড়েছেন— সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)

তৃণমূলে কি জনপ্রিয়তা দেখে পদ-পদবি দেওয়া হয়— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি সব জায়গায় থাকা দরকার। সব জায়গায় এটি গড়ে তুলতে আমাদের উদ্যোগ আছে। কোথাও কোথাও ব্যতিক্রম (অজনপ্রিয় ও টাকাওয়ালাদের নেতৃত্বে আসা) হতে পারে। এগুলো চিহ্নিত করা এবং ভবিষ্যতে যাতে না হয় সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এমন পদক্ষেপ চলমান।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর তথ্যানুযায়ী, চলতি সংসদে সংসদ সদস্যদের মধ্যে অধিকাংশের পেশাই (৬৬.৮৯ শতাংশ বা ২০০ জন) ব্যবসা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে এ হার শতকরা ৬৫.৯২ শতাংশ (১৪৭ জন)। আবার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে ২৯ জন (৯.৩৯ শতাংশ) আইনজীবী, (প্রকৃত তথ্য হবে ৩২ জন এবং ১০.৬৭ শতাংশ)। এই ৩২ জনের মধ্যে ২৬ জনই আওয়ামী লীগের। অর্থাৎ ব্যবসায়ী ও আইনজীবীরাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এগিয়ে আছেন। মাঠের বা তৃণমূলের প্রকৃত রাজনীতিবিদরা দলে গৌণ হয়ে পড়েছেন।

সংসদ এখন ব্যবসায়ীদের দখলে— এমন অভিযোগ এখন সর্বত্র। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আমাদের নেত্রী দীর্ঘদিন দেশ চালাচ্ছেন। তিনি সবকিছু ভালো বোঝেন। নিশ্চয়ই প্রকৃত যারা, দলের ত্যাগী নেতাকর্মী কিন্তু এখনও এদিক-ওদিকে পড়ে আছেন, তাদের মূল্যায়ন করবেন। তাদের পদ-পদবি দেওয়া হবে, আশা করি।’

‘৮০-এর দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন হয়েছিল। ওই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ৯১-সালের নির্বাচনে আমরা হঠাৎ দেখলাম, সব হিসাব-নিকাশ উল্টে দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় চলে এলো। সেই নির্বাচনে অর্থের একটা প্রাধান্য ছিল। সেই কারণে আমাদেরও বিত্তবানদের কিছুটা প্রাধান্য দিতে হয়েছে। কিন্তু আমরা যেহেতু দীর্ঘদিন ক্ষমতায়, এখন আমাদের বিষয়গুলো আরও যাচাই-বাছাই করা উচিত। জনপ্রিয় ও পরিচ্ছন্ন মানুষদের মনোনয়ন দিয়ে উপরে তুলে আনা উচিত। যাদের হাত ধরে জাতির পিতার স্বপ্ন এবং শেখ হাসিনার ভিশনগুলো বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।’

রাজনীতিতে ব্যবসায়ী ও বিত্তবানদের প্রাধান্য সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ভাবনা কী— জানার চেষ্টা করে ঢাকা পোস্ট। তাদের মতে, ব্যবসায়ীরা সম্মিলিত রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলে রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করার ক্ষমতা অর্জন করেছেন। বেসরকারি ব্যাংক ও পোশাক খাত দেখলে এটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পোশাক শিল্পের মালিকেরা একচেটিয়া সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন। ব্যবসায়ী নেতারা সরকারি দলের ছত্রচ্ছায়ায় সংসদ ও মন্ত্রিসভায় স্থান করে নিচ্ছেন। এদিক থেকে তারা এ রাষ্ট্রে অত্যন্ত শক্তিশালী ও প্রভাবশালী।

সাধারণের অভিযোগ, বর্তমান রাজনীতিতে যোগ্যতা ও আদর্শের চেয়ে আনুগত্যের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। দল ভাবছে তার পূর্বপুরুষ যেহেতু অনুগত ছিল, সেও এর বাইরে যাবে না। এ কারণে তৃণমূলের প্রকৃত জনপ্রিয় ও যোগ্য নেতৃত্ব রাজনীতির মাঠ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। সেই সুযোগ নিচ্ছেন সমাজের টাকাওয়ালা কথিত জনপ্রিয়রা।

বর্তমান এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ রাজনীতির কী হবে— এমন প্রশ্নের জবাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক, উভয় বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের লেখাপড়া, আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধ, আমাদের স্কুল, আমাদের সমাজ— সব জায়গাতে আমাদের যে অবক্ষয় হয়েছে, এর সমাধান করতে না পারলে দেশের সার্বিক যে উন্নয়ন, সেই উন্নয়ন স্থায়ী হবে না, মুখ থুবড়ে পড়বে। 

‘এজন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের নৈতিক শিক্ষা, সামাজিক যে বন্ধন তা ফিরিয়ে আনতে হবে। সমাজের কোনটি ভালো, কোনটি মন্দ— এগুলো বলার যেসব লোক ছিলেন, তাদের অনুসরণ বা মূল্যায়ন করতে হবে। এটা যদি করতে না পারি তাহলে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে দুর্নীতিবাজদের দাপট আরও বাড়তে থাকবে। দেশের মানুষকেও এটি বুঝতে হবে যে, সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে যারা কাজ করবেন, তাদের পেছনে যদি মানুষ দাঁড়ায় তাহলে এই টাকাওয়ালারা রাজনীতির মাঠ ছেড়ে চলে যাবেন।’

এমএসআই/এমএআর/