মুক্তিযোদ্ধার ‘ভুয়া’ সনদ, সুদে-আসলে টাকা আদায় করবে মন্ত্রণালয়
‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধা সনদ উপস্থাপনের মাধ্যমে যারা সরকারি ভাতা নিয়েছেন, তাদের সেই ভাতা সুদে-আসলে ফেরত নেওয়া হবে। তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ারও ঘোষণা এসেছে। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয় বৈঠকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনে নিরস্ত্র হাতেই শত্রুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন নিরীহ বাঙালি। পাকিস্তানের দোসরদের সহায়তায় নির্মম হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের শিকার হন বাংলার সাধারণ মানুষ। তবে, প্রতিবাদী বাঙালি মাত্র নয় মাসের চেষ্টায় এবং ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে কাঙ্ক্ষিত সেই স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু দেশ স্বাধীনের পর দীর্ঘদিন স্বাধীনতাকামী সূর্যসন্তানেরা অবহেলা ও অনাহারে দিন কাটিয়েছেন। এমনকি সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাও করতে পারেনি কোনো সরকার।
বিজ্ঞাপন
আওয়ামী লীগ সরকারের করা তালিকাতেও ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধারা ঢুকে পড়ে। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসার পর অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এবার তালিকা থেকে বাদ যাওয়া প্রায় আট হাজার ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার
পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাসহ ভাতা চালু করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের করা তালিকাতেও ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধারা ঢুকে পড়ে। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসার পর অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এবার তালিকা থেকে বাদ যাওয়া প্রায় আট হাজার ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার।
গত ১২ জুন জাতীয় সংসদে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়াসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তরভাবে আলোচনা হয়। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে এসব বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, বীর উত্তম। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, গোলাম দস্তগীর গাজী, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও বেগম মাহফুজা সুলতানা। মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সভাপতিসহ কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে।
আরও পড়ুন
‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে জানান, ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে আট হাজার ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে। তারা বিগত দিনগুলোতে যে ভাতা নিয়েছিলেন তা সুদে-আসলে আদায় করা হবে। এ ছাড়া ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে প্রচলিত আইনে মামলা করতে হবে বলে জানান তিনি।
সচিব আরও জানান, প্রত্যেক উপজেলায় নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে একটি করে ক্যাপসুল লিফট স্থাপনের লক্ষ্যে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে, বিষয়টি সংসদীয় কমিটিকে অবগত করেছি।।
সংসদীয় কমিটিকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) কামরুন নাহার জানান, প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মোট ৪৪৬টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের মধ্যে ৪৩৬টির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১০টির জায়গা না পাওয়ায় নির্মাণ করা যাচ্ছে না। পরবর্তীতে জমি পাওয়া গেলে সেগুলো নির্মাণ করা হবে বলে তিনি কমিটিকে অবহিত করেন।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস এম মাহাবুবুর রহমান বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাকাল এবং ট্রাস্টের জমি ও স্থাপনা যেখানে যে অবস্থায় আছে তার বিবরণ, মোট সম্পত্তির পরিমাণ, ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন সংসদীয় কমিটির কাছে হস্তান্তর করেন। এরপর তিনি কার্যপত্রের আলোকে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের বছরভিত্তিক আয় ও ব্যয়ের হিসাব সম্পর্কে কমিটিকে অবহিত করেন।
কল্যাণ ট্রাস্টের অনেক জমি উদ্ধার করা হয়েছে এবং ৬০টি প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। ফলে বছরে ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা ট্রাস্টের লাভ হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ক্যাপসুল লিফট স্থাপন প্রসঙ্গে কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী ঢাকা পোস্টকে বলেন, কিছুদিন আগে আমার এলাকায় দুজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন। এভাবে সব মুক্তিযোদ্ধা এক সময় মারা যাবেন। আমিও মারা যাব। তাই মৃত্যুর আগে একটি ভালো কাজ দেখে যেতে চাই। বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধারা সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে কষ্ট পান। তাই অতিদ্রুত লিফট সরবরাহের অনুরোধ করছি।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ‘ক্র্যাক প্লাটুন’ ঢাকা শহরে ৭০টি অপারেশন পরিচালনা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা ও ইতিহাস ব্যাপক। কমিটির প্রথম বৈঠকে ঢাকায় সরকারি অর্থায়নে ‘ক্র্যাক প্লাটুন’ সম্পর্কিত ‘স্মৃতিসৌধ’ বা ‘চলচ্চিত্র/ডকুমেন্টারি’ তৈরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ ক্ষেত্রে অর্থ দিয়ে হলেও তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এ জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে আশা করছি।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনেক ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’ শনাক্ত করেছে এবং এ কাজ অব্যাহত রয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এ তালিকা করা কষ্টসাধ্য। এজন্য অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নানা উপায়ে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তবে, অনেককে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, এটাও সত্য।
কমিটির অপর সদস্য ও চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, বয়স্ক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কমপ্লেক্সগুলোর দ্বিতীয় তলায় উঠতেই যেখানে কষ্টকর হয়ে যায়, সেখানে তাদের জন্য ওপরের ফ্লোর রাখা একেবারেই উচিত হয়নি। কমপ্লেক্সগুলোতে দ্রুত একটি করে ক্যাপসুল লিফট সংযোজনের পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনে এ বিষয়ে আলোচনা করে অতি দ্রুত লিফট সরবরাহের জন্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি।
‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও ‘ক্র্যাক প্লাটুন’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা ভুয়া সনদ নিয়েছেন তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি উপজেলায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন দ্রুত সম্পন্ন করার পক্ষেও কমিটিকে জানিয়েছি।
আরও পড়ুন
সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ও কমিটির সদস্য বেগম মাহফুজা সুলতানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদগ্রহণকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এখনও অনেকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিচ্ছেন। তারা কীভাবে এ সনদ নিচ্ছেন, তা খতিয়ে দেখার জন্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করছি। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীরাঙ্গনা নারীদের কথা ইতিহাসে থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের সময় যে সব সাধারণ ও নিরীহ মা-বোনেরা যুদ্ধ করেছিলেন, তাদের কথা ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়নি। তাই ওই সব নারীর তালিকা তৈরি করতেও মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানিয়েছি।
সংরক্ষিত আসনের এ এমপি আরও বলেন, আমার এলাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে যে সব অসহায় মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন, তাদের যে ২০ হাজার টাকা সম্মানিভাতা দেওয়া হয় তা দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবন-যাপন করা খুবই কষ্টকর। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিভাতা বৃদ্ধি করার পক্ষে সংসদীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করেছি।
টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও কমিটির সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলায় নির্মিত কমপ্লেক্সগুলোতে ক্যাপসুল লিফট সরবরাহের জন্য প্রতিটি বৈঠকে বারবার বলা হচ্ছে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিভাতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় তিন শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা আছেন। এক শ্রেণি খুবই বিত্তবান, তাদের এ ভাতা না হলেও চলে। আরেক শ্রেণি হলেন মধ্যবিত্ত, তাদেরও চলে। তৃতীয় যে শ্রেণি আছেন, তাদের অবস্থা খুবই খারাপ। বর্তমান অবস্থায় সামান্য এ ভাতা দিয়ে জীবন-যাপন করা আসলেই কষ্টকর। তাই সম্মানিভাতা শ্রেণি/ধরন অনুযায়ী ভাগ করে দেওয়া যায় কি না, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে পর্যালোচনা করার জন্য বলেছি। এ ছাড়া ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের নেওয়া পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছি।
সংসদীয় কমিটির বৈঠক প্রসঙ্গে কমিটির সদস্য ও মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ২৯ এপ্রিল কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্য এবং জীবিত নৌ-কমান্ডোদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক ইতিহাসভিত্তিক ডকুমেন্টারি/চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই আলোকে ডকুমেন্টারি তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে।
মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে নথিপত্র সংরক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বেশকিছু উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের কাগজপত্র/নথিপত্র সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। বাকিগুলোতেও যেন সঠিকভাবে সরবরাহ করা হয় সে জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অর্জন ও চলমান কার্যক্রম ইত্যাদি সম্পর্কে কমিটিকে অবহিত করেছি। এ ছাড়া জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী, মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম গেজেটভুক্তির জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন
বৈঠকে সেবাপদ্ধতি সহজীকরণ, মুজিব কর্নার কাম লাইব্রেরি স্থাপন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া চলমান কার্যক্রমের মধ্যে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মহান মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি, মুক্তিযুদ্ধ এবং এসব ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা, দেশ পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদান প্রভৃতি বিষয়ে ১৩টি গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে কমিটিকে জানানো হয়েছে। ১৩টি গবেষণার শিরোনাম, চুক্তিবদ্ধ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নাম ও দলনেতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংসদীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। সংসদীয় কমিটির সুপারিশ আমলে নিয়েই আমরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে কাজ করছি। আমরা ইতোমধ্যে আট হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করেছি এবং তাদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এতদিন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা যেসব টাকা ভাতা হিসেবে নিয়েছেন সেসব টাকা আমরা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছি।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের সময়ই অনেক মানুষ তদবির করে ঢুকে পড়েছেন। কেউ কেউ অর্থের মাধ্যমেও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম উঠিয়েছে। এ তালিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আছে। এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় আরও আগেই ব্যবস্থা নিতে পারত। মূলত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা যারা হয়েছিলেন, তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা যেসব অর্থ নিয়েছেন সেগুলোও ফেরত আনার উদ্যোগ নিতে হবে।
এসআর/এমএআর/