আলী আকবর, রফিকুল ইসলাম ও মো. রুবেল ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর দুবাই থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। ঘোষণা অনুযায়ী আলী আকবর দুটি স্বর্ণের বার ও ৯৮ গ্রাম স্বর্ণের অলংকারের শুল্ক জমা দেন। অন্যদিকে, রফিকুল ইসলাম ও মো. রুবেল দুটি স্বর্ণের বারের শুল্ক দেন। পাশাপাশি দুজনের সঙ্গে ছিল ১৯৬ গ্রাম অলংকার। শুল্ক-কর পরিশোধ শেষে গ্রিন চ্যানেল দিয়ে কাস্টমস জোন পার হতেই তাদের পথরোধ করা হয়।

রীতিমতো হয়রানির অভিযোগ! কিন্তু আলী আকবরের শরীর তল্লাশি করে অভিনব কায়দায় তার অন্তর্বাসে লুকানো পেস্ট আকারের (নরম-আঠালো) স্বর্ণের অস্তিত্ব মেলে। পরে তা আগুনে পুড়িয়ে ও অ্যাসিডে ধুয়ে ৪৬৪ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করা হয়। একই উপায়ে রফিকুল ইসলাম ও মো. রুবেল ইসলামের কাছ থেকে আরও ৯২৮ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করা হয়। সবমিলিয়ে তিন যাত্রীর কাছ থেকে সোনার বার ও অলংকারসহ দুই কেজি ৩৮২ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাগেজ রুলস বা বিধিমালার সুবিধা কাজে লাগিয়ে স্বর্ণ চোরাচালান একটি কৌশলে পরিণত হয়েছে। দিন যত যাচ্ছে স্বর্ণ চোরাচালানের কৌশলেও ভিন্নতা এসেছে। দুবাই প্রবাসী জামাল হোসেনের কথাই ধরা যাক। মাসে পাঁচ থেকে ছয়বার দেশে আসা-যাওয়া করেন তিনি। যেখানে অন্য প্রবাসীরা বছরের পর বছর খরচের হিসাব কষে দেশে আসতে ভয় পান, সেখানে তিনি কীভাবে বারবার আসা-যাওয়া করেন? বিমানবন্দরের নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, এক মাসে তিনি আট থেকে ১০ বারও আসা-যাওয়া করেছেন। এমনও দেখা গেছে বিমানবন্দর থেকে আবার দুবাই ফিরে গেছেন। তার কাছ থেকে স্বর্ণের ছোট ছোট চালান জব্দ করা হলেও জরিমানা দিয়ে ছাড় পেয়েছেন।

অভিযোগ উঠেছে, যাত্রী বা ক্যারিয়ার মূলত ব্যাগেজ বিধিমালার অপব্যবহার করে নানা কৌশলে দেশে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার বা স্বর্ণের বার আনছেন। পরবর্তীতে তা পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, বৈধ উপায়ে স্বর্ণ আমদানিতে বিভ্রান্তিকর নীতিমালা, অস্বাভাবিক শুল্কহার এবং কাগজপত্রে অস্বাভাবিক সময়ক্ষেপণে এর ব্যয় বাড়ছে। মুখ থুবড়ে পড়ছে স্বর্ণের ব্যবসা। সরকারও হারাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়েও ব্যয়বহুল পুঁজির স্বর্ণের ব্যবসার সঙ্গে কীভাবে জড়িত হলেন জামাল হোসেন? জবাব অনুমান করা গেলেও মূল হোতারা বরাবরের মতো থাকছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে!

একটু পেছনেই ফেরা যাক। ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর, কাতার থেকে ফেরা মোহাম্মদ আকবর হোসেনকে আটক করা হয় বিমানবন্দরে। স্বর্ণের সন্ধানে তার দেহ তল্লাশি করা হয়। অবাক বিষয়, স্বর্ণ না মিললেও তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় স্বর্ণ ক্রয়ের বেশকিছু রশিদ। দুবাই থেকে এসিএম গোল্ড জুয়েলারি থেকে ১৭০০ দিরহামে স্বর্ণের ১০০টি বার ক্রয়ের তথ্য ছিল সেখানে। যার ওজন ছিল ১১ কেজি ৬৬৪ গ্রাম। এত স্বর্ণ কেন ক্রয় করেছেন, স্বর্ণই বা কোথায় আছে— শুরু হয় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেল, বিমান থেকে নামার আগেই স্বর্ণের বারবোঝাই ব্যাগটি তিনি বিমানের ডি/৮ নম্বর সিটের নিচে রেখে এসেছেন। সবুজ নামে তার এক বন্ধুর ব্যাগটি নিয়ে যাওয়ার কথা।

প্রতি বছর ৫০০ টনের বেশি স্বর্ণ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে / ছবি- সংগৃহীত

আরও পড়ুন

এনবিআরের শুল্ক গোয়েন্দারা ছুটলেন সেই ব্যাগের সন্ধানে। কিন্তু সেই ব্যাগ ও সবুজ বিমানবন্দর থেকে হাওয়া! শেষমেশ পাসপোর্টের তথ্য ঘেঁটে জানা যায়, আকবর ও সবুজ মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে শুধুমাত্র দুবাই থেকে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ বার আসা-যাওয়া করেছেন। অনুমান করা হয়, এ সময়ে তারা ১৫০ থেকে ২০০ কেজি স্বর্ণ পাচার করেছেন।

অভিনব এমন স্বর্ণ চোরাচালানের ভিন্ন চিত্রও আছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও প্রচেষ্টার পর প্রবাসী ছেলেকে দেখতে মালয়েশিয়ায় যেতে সক্ষম হন মমতাময়ী এক মা। কাগজপত্রের জটিলতায় ছেলে দীর্ঘদিন ধরে দেশে আসতে পারছিলেন না। উল্টো মাকে প্রবাসে দেখতে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ছেলে। বেশ কিছুদিন ভালো সময় কাটান তারা। এরপর আসে বিদায়ের পালা। ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর ওই মা মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্ট থেকে দেশের উদ্দেশে রওনা হন। ফ্লাইটও ঠিক সময়ে ছাড়ে, ঢাকায়ও নামেন মা। হঠাৎ মায়ের আর খোঁজ নেই। বাসায় ফেরেননি তিনি। দেশে থাকা স্বামী-সন্তানরা বহু চেষ্টার পর জানতে পারেন, অবৈধ স্বর্ণ বহনের জন্য মা কাস্টমসের হাতে ধরা পড়েছেন। বিচারে তার ছয় মাসের জেল হয়েছে।

বর্তমানে যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালা, ২০১৬–এর বিধি ৩–এর উপ-বিধি (১০) অনুযায়ী, একজন যাত্রী বিদেশ থেকে আসার সময় ১১৭ গ্রাম ওজনের স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড সব ধরনের শুল্ক–কর পরিশোধ সাপেক্ষে আমদানি করতে পারেন। যাত্রী বিদেশ থেকে আসার সময় স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড আনার ক্ষেত্রে প্রতি ১১.৬৬৪ গ্রাম (এক ভরি) স্বর্ণের জন্য চার হাজার টাকা শুল্ক–কর পরিশোধ করে থাকেন

পরে জানা যায়, মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশন শেষ করে মা ভেতরে যেতেই পরিচিত একজন তার হাতে কালো রঙের একটি ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বলেন, মেয়ের জন্য স্বর্ণের চেইনসহ চকলেট আছে। শুল্ক-কর সব পরিশোধ করা। ঢাকার এয়ারপোর্টে লোক থাকবে, তারা ব্যাগটি গ্রহণ করবে। অথচ অবৈধ স্বর্ণ বহনের অভিযোগে ওই মাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ব্যাগেজ বিধিমালা না জানার কারণেই তাকে জেলে যেতে হয়।

অভিযোগ উঠেছে, যাত্রী বা ক্যারিয়ার মূলত ব্যাগেজ বিধিমালার অপব্যবহার করে নানা কৌশলে দেশে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার বা স্বর্ণের বার আনছেন। পরবর্তীতে তা পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, বৈধ উপায়ে স্বর্ণ আমদানিতে বিভ্রান্তিকর নীতিমালা, অস্বাভাবিক শুল্কহার এবং কাগজপত্রে অস্বাভাবিক সময়ক্ষেপণে এর ব্যয় বাড়ছে। মুখ থুবড়ে পড়ছে স্বর্ণের ব্যবসা। সরকারও হারাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব।

ব্যাগেজ বিধিমালার অপব্যবহার করে নানা কৌশলে দেশে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার বা স্বর্ণের বার আনা হচ্ছে / ছবি- সংগৃহীত

বর্তমানে যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালা, ২০১৬–এর বিধি ৩–এর উপ-বিধি (১০) অনুযায়ী, একজন যাত্রী বিদেশ থেকে আসার সময় ১১৭ গ্রাম ওজনের স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড সব ধরনের শুল্ক–কর পরিশোধ সাপেক্ষে আমদানি করতে পারেন। যাত্রী বিদেশ থেকে আসার সময় স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড আনার ক্ষেত্রে প্রতি ১১.৬৬৪ গ্রাম (এক ভরি) স্বর্ণের জন্য চার হাজার টাকা শুল্ক–কর পরিশোধ করে থাকেন।

যদিও প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাগেজ বিধিমালায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিধিমালায় শুল্ক-কর ঠিকঠাক রেখে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণ আনার সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। তবে, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) ও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নতুন নিয়মে স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে মূলত ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় আসা স্বর্ণ এবং পুরনো বা তেজাবি স্বর্ণের যোগানের মাধ্যমে মোট স্বর্ণের চাহিদা পূরণ করা হয়। ব্যাগেজ বিধিমালায় যাত্রীদের মাধ্যমে ২০২৩ সালে ৫২ এবং ২০২২ সালে ৫৪ টনের মতো স্বর্ণ দেশে আসে। এর বাইরে এ সুবিধার অপব্যবহারের মাধ্যমে চোরাকারবারিরা পাঁচ থেকে ১০ গুণ বেশি স্বর্ণ বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আনেন। এসব স্বর্ণ আবার ভারতসহ অন্যান্য দেশে পাচার হয়ে যায়। যার পরিমাণ ৫০০ টনের বেশি। কারণ, ভারতে ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় স্বর্ণ আনার সুবিধা অত্যন্ত সীমিত। শুধু ভারত কেন, পাকিস্তান কিংবা নেপালে এর আওতায় স্বর্ণ আনা অত্যন্ত কঠিন। এ কারণে বাংলাদেশে আসা ৯০ শতাংশ স্বর্ণই পাচার হয়ে যাচ্ছে।

যদিও প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাগেজ বিধিমালায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিধিমালায় শুল্ক-কর ঠিক রেখে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণ আনার সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। তবে, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) ও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নতুন নিয়মে স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না।

অন্যদিকে, দেশে বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানির পরিমাণ খুবই কম। বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের তথ্যানুসারে, ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত দেশে স্বর্ণ আমদানি হয়েছে মাত্র ৬০ কেজি। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত স্বর্ণ আমদানি হয়নি। যদি ২০১৯ সালের পরিসংখ্যানও বিবেচনা করা হয়, তাহলে দেখা যায় যে ২০০ কেজি স্বর্ণও আমদানি হয়নি। যদি চাহিদা অনুযায়ী আমদানি হতো তাহলে এ খাতে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আসত।

অথচ দেশে বছরে ২০ থেকে ৪০ টন স্বর্ণের চাহিদা রয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) এক সমীক্ষা বলছে, দেশে স্বর্ণের চাহিদা প্রায় ৪৩ টন। বাজুসের তথ্যানুসারে, বছরে দেশে স্বর্ণের চাহিদা পূরণে ১৮ থেকে ২০ টন নতুন স্বর্ণ দরকার। সিপিডির তথ্যানুসারে, নতুন স্বর্ণের চাহিদার পরিমাণ ১৮ থেকে ৩৬ টন। অর্থাৎ স্বর্ণের বর্তমান বাজারের চাহিদা পুরোপুরি পুরনো স্বর্ণ এবং ব্যাগেজ বিধিমালার অপব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রায়ই উদ্ধার করা হয় অবৈধ স্বর্ণের বার / ছবি- সংগৃহীত

এমনটি মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় স্বর্ণের বাজার পুরোপুরি পুরনো স্বর্ণ ও ব্যাগেজ বিধিমালার অপব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল। ব্যাগেজ বিধিমালার অপব্যবহার করে ক্যারিয়ারের (যাত্রী) মাধ্যমে ২০২২ সালে ৫২ টন স্বর্ণ দেশে প্রবেশ করেছে। অন্যদিকে, ২০১৮ সালের স্বর্ণ নীতিমালা অনুসারে বাংলাদেশে এর চাহিদা চার টন, যদিও প্রকৃত চাহিদা আট থেকে ১০ গুণ বেশি। দেশের বাজারে স্বর্ণের প্রকৃত চাহিদা ১৮ থেকে ২৬ টন। মাত্র ১০ শতাংশ আসে পুরাতন স্বর্ণ পরিশোধনের মাধ্যমে। বাকি ৯০ শতাংশের উৎস হচ্ছে চোরাচালানের স্বর্ণ। অস্বাভাবিক শুল্কহার, বিভ্রান্তিকর নীতিমালা প্রণয়ন, আমদানির ক্ষেত্রে কাগজপত্রে অস্বাভাবিক সময়ক্ষেপণ এবং সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্বর্ণের ব্যবসা কোণঠাসা করে রাখাই স্বর্ণ চোরাচালানের অন্যতম কারণ।

বছরে ৯১ হাজার কোটি টাকার স্বর্ণ ও হীরা পাচার

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৩০টি জেলার সীমান্ত। ভারতে পাচার হওয়া স্বর্ণের বড় একটি অংশ যায় মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলা হয়ে। বাজুসের প্রাথমিক ধারণা, প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে প্রতিদিন সারা দেশের জল, স্থল ও আকাশ পথের মাধ্যমে বিভিন্ন কৌশলে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার অবৈধ স্বর্ণের অলংকার, বার, ব্যবহৃত পুরনো জুয়েলারি ও হীরার অলংকার বাংলাদেশে আসছে। যা বছর (৩৬৫ দিন) শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার বেশি। পুরো টাকাই হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হচ্ছে। ফলে সরকার একদিকে যেমন রেমিট্যান্স হারাচ্ছে, অন্যদিকে স্বর্ণ ও হীরার চোরাকারবারিরা অর্থ বিদেশে পাচার করছে। এজন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো অভিযানের পাশাপাশি ব্যাগেজ বিধিমালা সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন বাজুস নেতৃবৃন্দ। তাদের মতে, সর্বোচ্চ ৫০ গ্রামের ক্ষেত্রে শুল্ক-কর সুবিধা রেখে বেশকিছু শর্ত যুক্ত করার পাশাপাশি স্বর্ণ আমদানি নীতিমালায় শুল্ক-কর কমানো প্রয়োজন।

এ প্রসঙ্গে গোল্ড ওয়ার্ল্ডের কর্ণধার ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, ব্যাগেজ বিধিমালা ও স্বর্ণ আমদানি নীতিমালার মধ্যে পার্থক্য আকাশ-পাতাল। যেমন- ব্যাগেজ বিধিমালা অনুসারে ১০ ভরির একটি স্বর্ণালংকার বা সোনা আনলে ৪০ হাজার টাকা কর দিলেই তা বৈধ হয়ে যায়। আর কোনো খরচ নেই। মাত্র ৪ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ স্বর্ণ পেলে কেন আমদানি করবেন ব্যবসায়ীরা? বর্তমান আমদানি নীতিমালায় পাঁচ কেজি স্বর্ণ আনলেও লাভের মুখ দেখা যায় না। ব্যাগেজ বিধিমালায় আমদানির তুলনায় ১০ শতাংশ কম শুল্ক-কর দিয়ে যদি স্বর্ণ পাওয়া যায়, তাহলে কেন আমদানি করবে?

প্রতিদিন সারা দেশের জল, স্থল ও আকাশ পথের মাধ্যমে বিভিন্ন কৌশলে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার অবৈধ স্বর্ণের অলংকার, বার, ব্যবহৃত পুরনো জুয়েলারি ও হীরার অলংকার বাংলাদেশে আসছে। যা বছর (৩৬৫ দিন) শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার বেশি। পুরো টাকাই হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হচ্ছে। ফলে সরকার একদিকে যেমন রেমিট্যান্স হারাচ্ছে, অন্যদিকে স্বর্ণ ও হীরার চোরাকারবারিরা অর্থ বিদেশে পাচার করছে

‘২০২৩ সালে ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় শুল্ক-কর দিয়ে স্বর্ণ এসেছে মাত্র ৫২ টন। কিন্তু এর চেয়ে ১০ গুণ স্বর্ণ বাংলাদেশে এসেছে, যা ধরা পড়েনি। এত স্বর্ণ কই গেছে? ভারতে পাচার হয়েছে। এখানে স্বর্ণ আমদানি নীতিমালায় ত্রুটি রয়েছে। আমরা এনবিআরকে বাজেটের আগে একাধিকবার প্রস্তাবনা দিয়েছি। সেখানে গাইডলাইনও দেওয়া আছে। ব্যাগেজ বিধিমালা রেখে দরজা খুলে দিলেও আমদানি হবে না। কারণ একটাই, আমদানি করা স্বর্ণের দাম ব্যাগেজ বিধিমালায় আসা স্বর্ণের দামের চেয়ে অনেক বেশি।’

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস ও অন্যান্য সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে পাচার হচ্ছে স্বর্ণ / ছবি- সংগৃহীত

উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় ১০০ টাকার স্বর্ণ আনতে খরচ পড়ে ১০৪ টাকা। অন্যদিকে, আমদানি নীতিমালা অনুসারে একই স্বর্ণের দাম পড়ে ১১৮ থেকে ১১৯ টাকা। এমন ব্যবধান কি মানা যায়?’

মাসুদুর রহমান আরও বলেন, ‘ব্যাগেজ রুলস একটি বিতর্কিত বিধিমালা। এবার এখানে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তাতে কোনো লাভ হবে না। কারণ, ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণালংকার ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় কোনো বাহক যদি হাতে করে দেশে আনেন, সেখানে শুল্ক দিতে হবে না। অন্যদিকে, আমাদের দেশে ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণালংকার বিক্রিও হয় না। এ ধরনের অলংকারের মূল্য অনেক বেশি। যেটি আমাদের দেশে চলে না। স্বর্ণ খাত থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করার যদি লক্ষ্যমাত্রা থাকে তাহলে বাজুসের প্রস্তাব অনুসরণ করা উচিত। এ খাতে বাড়তি সুবিধা না দিলে উন্নয়ন সম্ভব নয়।’

বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায় বলেন, ‘ব্যাগেজ বিধিমালা সংশোধনের মাধ্যমে স্বর্ণের বার আনা বন্ধ করা এবং ট্যাক্স ফ্রি স্বর্ণের অলংকারের ক্ষেত্রে ১০০ গ্রামের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম করা উচিত। এ ছাড়া একই ধরনের অলংকার দুটির বেশি আনা যাবে না— এমন বিধি রাখা প্রয়োজন।’

‘অলংকার ও স্বর্ণের বার আনার ক্ষেত্রে পাশের দেশগুলো যে বিধিবিধান মানে, আমাদেরও সেগুলোর (ব্যাগেজ বিধিমালা) সঙ্গে সমন্বয় করা প্রয়োজন। আমাদের প্রস্তাবনা হলো- একজন যাত্রী বছরে একবারই ব্যাগেজ বিধিমালার সুবিধা ভোগ করবেন। এ ছাড়া এমন সুবিধার অপব্যবহারের কারণে ডলার সংকট, চোরাচালান ও অর্থপাচারে যে প্রভাব পড়ছে তা নিরূপণে বাজুসকে যুক্ত করে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনার দাবি জানাচ্ছি।’

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. মো. ইফতেখারুজ্জামানের মতে, ‘স্বর্ণ খাতে চোরাচালান বড় একটি সমস্যা। সমস্যা সমাধানে সরকার স্বর্ণ নীতিমালা করেছে। শুধু নীতিমালা দিয়ে এ খাতের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবৈধ আমদানির নামে চোরাচালান বন্ধ করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন আইনের যথাযথ প্রয়োগ। চোরাচালান একটি অপরাধ, অবৈধভাবে স্বর্ণ বা পণ্য আনাও একটি অপরাধ। এগুলো আসলে নিয়ন্ত্রিত হয় না। সে কারণে অপরাধ বন্ধ হয় না।’

স্বর্ণ আমদানির বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘আমরা নানাভাবে নীতি-সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি; যাতে স্বর্ণ আমদানি হয়, স্মাগলিং (চোরাচালান) বন্ধ হয়। এরপরও আমি জানি না, কেন স্বর্ণ আমদানিতে তেমন সাড়া পড়ছে না, স্মাগলিংয়েও ভাটা পড়ছে না।’

‘গোল্ড স্মাগলিংটা ঠেকানো, এটি আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটির সঙ্গে (চোরাচালান) দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা হয়তো জড়িত নন, দেশের ভেতরে বা বাইরের অবৈধ ব্যবসায়ীরা জড়িত। এ ছাড়া নানাবিধ কারণও আছে। তবে, রাজস্ব ভারের কারণে স্মাগলিং প্রবণতা বাড়ছে কি না, সেটি আমরা দেখার চেষ্টা করছি।’

সারা দেশের জল, স্থল ও আকাশ পথের মাধ্যমে বিভিন্ন কৌশলে প্রতি বছর প্রায় ৯১২৫০ কোটি টাকার স্বর্ণ দেশে আসছে / ছবি- সংগৃহীত

ব্যাগেজ মানে কী

বিধিমালায় বলা আছে, ‘ব্যাগেজ’ অর্থ বিদেশ থেকে আগত কোনো যাত্রী কর্তৃক আমদানিকৃত যুক্তিসংগত পরিমাণের খাদ্যদ্রব্য, পরিধেয়, গৃহস্থালি বা অন্যবিধ ব্যক্তিগত সামগ্রী, যার প্রতিটি আইটেমের ওজন ১৫ কেজির অধিক নয় এমন লাগেজ। প্রচলিত ভাষায় এটিকে লাগেজও বোঝানো হয়।

বাংলাদেশে ব্যাগেজ বিধিমালায় যা আছে

যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালা- ২০১২ বাতিল করে ২০১৬ সালের ২ জুন যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালা- ২০১৬ প্রবর্তন করা হয়। এ বিধিমালার আওতায় আকাশ ও জলপথে আসা যাত্রীরা শুল্ক ও কর সুবিধা পেয়ে থাকেন। বিধিমালার ৩ ধারায় বলা হয়েছে, আকাশ ও জলপথে আসা ১২ (বার) বৎসর বা তদূর্ধ্ব বয়সের যাত্রীর সঙ্গে আনা হাতব্যাগ, কেবিনব্যাগ বা অন্যবিধ উপায়ে আনা মোট ৬৫ কিলোগ্রাম ওজনের অতিরিক্ত নয় এরূপ ব্যাগেজ সকল প্রকার শুল্ক ও কর পরিশোধ ছাড়া খালাসযোগ্য হবে। অন্যদিকে, বিদেশে অবস্থানের মেয়াদ নির্বিশেষে স্থলপথে আসা একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ৪০০ মার্কিন ডলার মূল্যের ব্যাগেজ সকল প্রকার শুল্ক ও কর পরিশোধ ছাড়া আমদানি করতে পারবেন, যা ৪ বিধিমালার ধারায় বলা হয়েছে।

সোনা ও রুপা আনার বিষয়টি ব্যাগেজ রুলের ৯ ও ১০ ধারায় বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, একজন যাত্রী অনধিক ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার অথবা ২০০ গ্রাম ওজনের রৌপ্যের অলংকার (এক প্রকার অলংকার ১২টির অধিক হবে না) সকল প্রকার শুল্ক ও কর পরিশোধ ছাড়া আমদানি করতে পারবেন।

অন্যদিকে ১০ ধারা অনুসারে, একজন যাত্রী বিদেশ হতে দেশে আসার সময় অনধিক ২৩৪ গ্রাম বা ২০ তোলা ওজনের স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড কিংবা রৌপ্যবার বা রৌপ্যপিণ্ড সকল প্রকার শুল্ক ও কর পরিশোধ সাপেক্ষে আমদানি করতে পারবেন। তবে, সকল যাত্রীর জন্য একটি ফরম পূরণ করিয়া ব্যাগেজ ঘোষণা প্রদান করতে হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বিধিমালা সংশোধন করে ২৩৪ গ্রামের পরিবর্তে ১১৭ গ্রাম করা হয়।

বিধিমালার ৬ ধারা অনুসারে, একজন যাত্রী দুটি মোবাইল ফোন সকল প্রকার শুল্ক ও কর পরিশোধ ছাড়া এবং অতিরিক্ত একটি শুল্ক ও কর পরিশোধ সাপেক্ষে আমদানি করতে পারবেন।

প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাগেজ বিধিমালায় শুল্ক-কর ঠিক রেখে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণ আনার সুবিধা বাতিল করা হয়েছে / ছবি- সংগৃহী

প্রস্তাবিত বাজেটে ৬, ৯ ও ১০ ধারা আরেক দফা সংশোধন করা হয়েছে। যা আগামী ৩০ জুন পাস হতে যাচ্ছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাগেজ বিধিমালায় যে পরিবর্তন আনা হয়েছে

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ‘যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালা- ২০১৬’ এর তিনটি বিষয়ের ওপর পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছে প্রস্তাবিত বাজেটে। সেগুলো হলো- স্বর্ণের অলংকারের সংজ্ঞা সংযোজন, মুঠোফোন আনার সুবিধা সুনির্দিষ্ট করা এবং স্বর্ণ ও সিগারেট আনার সুবিধা ১২ বছরের কম বয়সী যাত্রীর ক্ষেত্রে বাতিল করা।

বিদেশ ফেরত একজন যাত্রী বিনা শুল্কে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণালংকার আনতে পারেন। এক যুগ ধরে ব্যাগেজ বিধিমালায় এ সুবিধা দিয়ে আসছে সরকার। এবারও এ সুবিধা বহাল রাখা হয়েছে। তবে, এ সুবিধার অপব্যবহার ঠেকাতে স্বর্ণালংকারের সংজ্ঞায় ‘স্বর্ণালংকার অর্থাৎ ২২ বা তার চেয়ে কম ক্যারেটের স্বর্ণে নির্মিত নকশাখচিত ও পরিধানযোগ্য অলংকার’-এর কথা বলা হয়েছে। ফলে ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণবার গলিয়ে চুড়ির মতো বানিয়ে আনার সুযোগ থাকছে না এবার।

দ্বিতীয় বড় পরিবর্তন এসেছে মুঠোফোন আনার সুবিধায়। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, বিদেশ থেকে ফেরার সময় একজন যাত্রী দুটি ব্যবহৃত মুঠোফোন বিনা শুল্কে আনতে পারবেন। এর বাইরে আরেকটি নতুন মুঠোফোন আনা যাবে। তবে, এ জন্য শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হবে। সবমিলিয়ে একজন যাত্রী বিদেশ থেকে তিনটি মুঠোফোন আনতে পারবেন।

ব্যাগেজ রুলের তৃতীয় পরিবর্তন হলো- ১২ বছরের কম বয়সী যাত্রীদের জন্য স্বর্ণবার ও স্বর্ণের অলংকার আনার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া। আগের বিধিমালায় এটি সুস্পষ্ট ছিল না।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ব্যাগেজ বিধিমালায় যা আছে

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সীমান্তবর্তী ভারতে একজন পুরুষ মানুষ ৫০ হাজার রুপির মাত্র ২০ গ্রাম স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার শুল্ক-কর ছাড়া আনতে পারেন। অন্যদিকে, একজন মহিলা যাত্রী এক লাখ টাকা মূল্যের ৪০ গ্রাম স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার শুল্ক-কর ছাড়া আনতে পারেন। এর অধিক অর্থাৎ ২১ থেকে ৫০ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার আনলে ৩ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। এভাবে ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত ৫ শতাংশ এবং ১০০ গ্রামের ওপরে গেলে ৭ থেকে ৯ শতাংশ হারে শুল্ক-কর দিতে হবে। এভাবে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক-কর পরিশোধের বিধান আছে ভারতে।

ব্যাগেজ রুলস একটি বিতর্কিত বিধিমালা। এবার এখানে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তাতে কোনো লাভ হবে না— বাজুস / ছবি- সংগৃহীত 

অন্যদিকে, নেপালে বিদেশে কাজ করে ফিরে আসা কর্মীরা ১০০ গ্রাম পর্যন্ত কাঁচা স্বর্ণ আনতে পারবেন। এজন্য তাকে কর পরিশোধ করতে হবে। যাত্রী যদি ৫০ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণ আনেন তবে তাকে প্রতি ১০ গ্রামের জন্য নয় হাজার ৫০০ টাকা কর দিতে হবে। যাত্রী যদি ৫০ গ্রামের বেশি স্বর্ণ আনেন সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত স্বর্ণের ওপর ১০ গ্রামপ্রতি ১০ হাজার ৫০০ টাকা কর ধার্য করা আছে। অর্থাৎ অতিরিক্ত ৫০ গ্রামের জন্য ৫২ হাজার ৫০০ রুপি শুল্ক দিতে হবে। আর ১০০ গ্রামের বেশি স্বর্ণ আনলে তা বাজেয়াপ্ত হবে।

স্বর্ণের অলংকারের ৫০ গ্রামের বেশি হলে প্রতি ১০ গ্রামের জন্য ১০ হাজার ৫০০ টাকা এবং ১০০ গ্রামের বেশি আনলে প্রতি ১০ গ্রামের জন্য ১২ হাজার ৫০০ টাকা হারে শুল্ক ধার্য করা আছে। এর চেয়ে বেশি স্বর্ণের অলংকার আনলে তা বাজেয়াপ্ত করার বিধান আছে।

সার্কভুক্ত অপর দেশ পাকিস্তানে কোনো শুল্ক পরিশোধ ছাড়াই ১০০ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণ আমদানি করা যায়। তবে, ১০০ গ্রামের বেশি আনলে স্বর্ণের মূল্যের ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়।

আরএম/এমএআর/