জুয়েলারি পণ্যের বৈশ্বিক বাজারের আকার সাড়ে ৩০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এর মধ্যে অধিকাংশ হলো স্বর্ণালংকার। এ খাতে রপ্তানির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। বিশ্ব বাজারের একটি ছোট অংশ দখল করতে পারলেও তা হবে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ। এজন্য প্রয়োজন রপ্তানিবান্ধব নীতি।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে রয়েছে স্বর্ণালংকার বানানোর দক্ষ কারিগর। এখন প্রয়োজন রপ্তানিবান্ধব নীতি। তাহলে রপ্তানির দিক দিয়ে এ খাত পোশাক শিল্পকেও পেছনে ফেলে দিতে পারে।

 

প্রতিবছর বাড়ছে বাজারের আকার

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাজার গবেষণা এবং পরামর্শ প্রতিষ্ঠান গ্র্যান্ড ভিউ রিসার্চের তথ্যমতে ২০২৩ সালে বিশ্বে জুয়েলারি বাজারের মোট আকার ছিল ৩৫৩.২৬ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছর শেষে এর আকার দাঁড়াবে ৩৬৬.৭৯ বিলিয়ন ডলারে। প্রতিবছর এ আকার বাড়বে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে রয়েছে স্বর্ণালংকার বানানোর দক্ষ কারিগর। এখন প্রয়োজন রপ্তানিবান্ধব নীতি। তাহলে রপ্তানির দিক দিয়ে এ খাত পোশাক শিল্পকেও পেছনে ফেলে দিতে পারে

গ্র্যান্ড ভিউ রিসার্চ বলছে, বছরে গড় ৪.৭ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি ধরে ২০৩০ সালে সারা বিশ্বে জুয়েলারি পণ্যের বাজারের মোট আকার দাঁড়াবে ৪৮২.২২ বিলিয়ন ডলার। 

বাংলাদেশের রয়েছে ব্যাপক সম্ভাবনা 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শরীফ মোশাররফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোল্ড ইন্ডাস্ট্রির বিশ্ববাজার প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ডলারের। এই বড় মার্কেটের যদি ০.৫ ভাগও বাংলাদেশ দখল করতে পারে তাহলে গোল্ড ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশের দ্বিতীয় রপ্তানি পণ্য হিসেবে আবির্ভূত হবে। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই ইন্ডাস্ট্রি তৈরি পোশাক শিল্পকেও ছাড়িয়ে যাবে, এতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, স্বর্ণের বিশ্ব মার্কেট কিন্তু খুব ছোট নয়। তবে স্বর্ণালংকার রপ্তানি করে এমন দেশের সংখ্যা খুব বেশি নেই। এই মার্কেটে আমরা যদি ঢুকতে পারি তাহলে একটা অবস্থান তৈরি করতে পারব বলে আমি মনে করি। সেটা নিয়ে আমরা আশাবাদী।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ বলেন, আমাদের কিন্তু যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের যে ভৌগোলিক অবস্থান, বাংলাদেশ কিন্তু একটা রুট। এই রুটে স্বর্ণ আসতে পারে এবং যেতেও পারে। এই আসা-যাওয়াটাকে খারাপ চোখে না দেখে এটাকে যেন গঠনমূলকভাবে নিতে পারি, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সম্ভাবনা থাকলেও রপ্তানি কম 

জুয়েলারি পণ্য রপ্তানির ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও বিশ্ববাজার ধরতে পারছে না বাংলাদেশ। প্রতি বছর এ খাতে নামমাত্র রপ্তানি হয়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, ১৯৯৫ সালে প্রথম রপ্তানি শুরু হওয়া এই খাতটি গত ২০২১-২২ অর্থবছরে এসে মাত্র এক কোটি ২০ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ও স্বর্ণজাত পণ্য রপ্তানি করেছে।

স্বর্ণ শিল্পের আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি) জুয়েলারি পণ্য রপ্তানিতে ২০২২ সালের শীর্ষ ১০০ দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে। সেখানে স্থান হয়নি বাংলাদেশের। এ তালিকায় শীর্ষ পাঁচ দেশ হচ্ছে চীন, সুইজারল্যান্ড, ভারত, হংকং ও ইতালি। বিশ্বে রপ্তানি করা অলংকারের অর্ধেকের বেশি (৫৩.৩ শতাংশ) এই পাঁচটি দেশের দখলে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী ৯ হাজার ৮৮০ কোটি ডলারের জুয়েলারি পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ২০২১ সালে এ অঙ্ক ছিল ৭ হাজার ২০০ কোটি ডলারের। এক বছরের ব্যবধানে জুয়েলারি পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৩৭.১ শতাংশ।

সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে চীন সর্বোচ্চ এক হাজার ২৫০ কোটি ডলারের স্বর্ণালংকার রপ্তানি করেছে (মোট বৈশ্বিক রপ্তানির ১২.৬ শতাংশ)। সুইজারল্যান্ড এক হাজার ১৪০ কোটি ডলারের (১১.৬%), ভারত এক হাজার ৬০ কোটি (১০.৭%), হংকং ৯৩০ কোটি (৯.৪%), ইতালি ৮৯০ কোটি (৯%), যুক্তরাষ্ট্র ৭২০ কোটি, (৭.৩%), তুরস্ক ৬৮০ কোটি (৬.৯%), ফ্রান্স ৫২০ কোটি (৫.২%), সংযুক্ত আরব আমিরাত ৩৮০ কোটি (৩.৮%), থাইল্যান্ড ৩৩০ কোটি (৩.৪%), সিঙ্গাপুর ২৯০ কোটি (২.৯%), যুক্তরাজ্য ২৯০ কোটি (২.৯%), ইন্দোনেশিয়া ২৬০ কোটি (২.৬%), জার্মানি ১৬০ কোটি (১.৬%) ও আয়ারল্যান্ড ১১০ কোটি (১.১%) ডলারের স্বর্ণালংকার রপ্তানি করেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে তালিকায় ভারতের পরে রয়েছে শ্রীলঙ্কা (৪৩তম), নেপাল (৭০তম) ও পাকিস্তান (৭১তম)।

গ্র্যান্ড ভিউ রিসার্চের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে বিশ্বে জুয়েলারি বাজারের মোট আকার ছিল ৩৫৩.২৬ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছর শেষে এর আকার দাঁড়াবে ৩৬৬.৭৯ বিলিয়ন ডলারে। প্রতিবছর এ আকার বাড়বে

বাংলাদেশের প্রতিবন্ধকতা কোথায়? 

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রপ্তানি না হওয়ার প্রথম কারণ সরকারের সদিচ্ছার অভাব। সদিচ্ছা বলতে বোঝাচ্ছি কোনো পণ্য বা খাতকে যদি সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করতে চায় যে এখান থেকে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করব, তখন সেই খাতকে সুযোগ করে দিতে হয়। বাংলাদেশে স্বর্ণের কোনো খনি নেই। এটা বাইরে থেকে আমদানি করে নিয়ে আসতে হয়। এজন্য আমদানি এবং রপ্তানির যথাযথ সুযোগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে যদি ট্যাক্স-ফ্রি করে দেওয়া হয় তাহলে প্রতিবছর ২২ বিলিয়ন ডলার সরকারের কোষাগারে জমা হবে। এটার জন্য আমদানি নির্ভর সুবিধা দিতে হবে। দেশের স্থানীয় মার্কেটে যে চাহিদা আছে, যদি এটা পূরণ করার জন্য সহজে স্বর্ণ আনার সুযোগ করে দেওয়া হয়, তাহলে সরকার এখান থেকে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা মুনাফা পাবে।

মাসুদুর রহমান বলেন, সরকারকে বাজুস যে প্রস্তাবনাগুলো দিয়েছে, সেগুলো ভালো প্রস্তাব।‌ সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে যারা আছেন, তারা কীভাবে অথবা কী চিন্তা করেন, সেটা তো আমাদের জানার বাইরে। যেমন- আমদানির ক্ষেত্রে লজিস্টিকসহ ১৪ থেকে সাড়ে ১৪ শতাংশ ট্যাক্স পড়ছে। অন্যদিকে ব্যাগেজ রুল সহজ করে দিয়েছে। এই বৈষম্যের কারণে দেশে বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানি হচ্ছে না। আমি মনে করি বাংলাদেশের স্বর্ণ খাতে উন্নয়নের ক্ষেত্রে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্তটা হচ্ছে মূল প্রতিবন্ধকতা।

তিনি বলেন, সম্প্রতি আমরা অনেকগুলো ফেয়ার (মেলা) করছি। এগুলো কেন করা হচ্ছে? এগুলোর উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বকে জানান দেওয়া, আমাদের রপ্তানির সক্ষমতা আছে। আমরা শুধু সরকারকে নাড়া দিতে চাচ্ছি, সুযোগ-সুবিধা চাচ্ছি। এখন সরকারের তো সদিচ্ছা থাকতে হবে। উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আপনি গার্মেন্টস খাতের উপর নির্ভর করছেন। কোনো কারণে এই সেক্টর যদি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে সহযোগিতা করতে না পারে, তখন কী হবে?

তিনি আরও বলেন, স্বর্ণ খাতে বিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার আয় করার উৎস রয়েছে। একটা সেক্টরকে উন্নত করতে গিয়ে যদি কিছু চাওয়া হয়, তাহলে সরকারের যারা নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে রয়েছেন সেখানে তাদের ভূমিকা নিতে হবে।

বাজুস সহ-সভাপতি বলেন, এখানে শুধু জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের বিষয় নয়। সুফল এলে দেশে ডলার আসবে, চোরাচালান বন্ধ হবে। হাজার-হাজার কোটি টাকা ডলার হয়ে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। অন্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে স্বর্ণের দাম বেশি। সেজন্য ব্যাগেজ রুলসে দেশের বাইরে থেকে মানুষ স্বর্ণ কিনে আনছে। এই পদ্ধতি থেকে ফিরে এলে দেশের টাকা দেশেই থাকবে, ডলার দেশেই থাকবে এবং এই সেক্টরও উন্নত হবে। প্রতিবন্ধকতাগুলো সরকার যদি দূর করে দেয়, তাহলে খুব সহজেই এর সুফল দেশের মানুষ ভোগ করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, এ খাতে আমাদের রপ্তানির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট) একটি রিপোর্ট দিয়েছে, যেখানে ২২ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্যের কথা বলা হয়েছে। সেখান থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা সরকার শুধু ভ্যাট পাবে। এটা বিএফআইইউর জরিপে উঠে এসেছে।

স্বর্ণ শিল্পের আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি) জুয়েলারি পণ্য রপ্তানিতে ২০২২ সালের শীর্ষ ১০০ দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে। সেখানে স্থান হয়নি বাংলাদেশের। এ তালিকায় শীর্ষ পাঁচ দেশ হচ্ছে চীন, সুইজারল্যান্ড, ভারত, হংকং ও ইতালি। বিশ্বে রপ্তানি করা অলংকারের অর্ধেকের বেশি (৫৩.৩ শতাংশ) এই পাঁচটি দেশের দখলে

কীভাবে সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে?

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ বলেন, স্বর্ণের জন্য একটি কমিউনিটি এক্সচেঞ্জ যদি আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারি এবং সেটা যদি কার্যকর করতে পারি তাহলে আমাদের স্বর্ণের সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং ব্যবহার; এগুলোর ক্ষেত্রে নতুন একটি সুযোগ হতে পারে। যেটা একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

এ প্রসঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শরীফ মোশাররফ হোসেন বলেন, আমার সুপারিশ হচ্ছে গোল্ড রিফাইনারি কারখানার কাঁচামাল হিসেবে অপরিশোধিত বা অর্ধ পরিশোধিত আকরিকের আমদানির ট্যারিফ শূন্য করে দিতে হবে। জুয়েলারি শিল্পে ব্যবহৃত বিভিন্ন পণ্যের আমদানি শুল্ক যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনতে হবে। এই শিল্পের উন্নয়নে গোল্ড কয়েন এবং বিভিন্ন ধরনের অলংকারের সম্ভাব্য বাজার খুঁজে বের করার জন্য আমাদের স্টাডি করতে হবে। এ স্টাডি করার ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন এবং বাজুস একযোগে কাজ করতে পারে। এরপর রপ্তানির জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের অধীনে এই খাতের জন্য  আলাদা একটি ইকোনমিক জোন বরাদ্দ দিতে হবে, যেখানে যৌথ উদ্যোগে দেশীয়দের সঙ্গে বিদেশি উদ্যোক্তাও কারখানা স্থাপন করতে পারে। তাহলে দেশে উন্নত টেকনোলজি স্থানান্তরিত হবে। যদিও দেশে অলংকার তৈরির দক্ষ কারিগর রয়েছে কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির কারখানায় কাজ করার মতো দক্ষ কারিগরের অভাব রয়েছে। যে কারিগরগুলো রয়েছে তারা মূলত হাতের কাজে বেশি পারদর্শী। তাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। সর্বোপরি বাজুসকে গোল্ড রিফাইনারি ও জুয়েলারি শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

ড. শরীফ মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকারি নীতির মাধ্যমে এ খাতকে যদি পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়, উদ্যোক্তারা যদি সময়োপযোগী এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেন তাহলে আশা করছি অদূর ভবিষ্যতে গোল্ড রিফাইনারি ও জুয়েলারি খাতকে একটি উদীয়মান রপ্তানি খাত হিসেবে দেখতে পারব এবং দেশের অর্থনীতিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারবে এ খাত।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে। তখন কিছু-কিছু সুবিধা আর মিলবে না, সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। রপ্তানি পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপিত হবে। এ কারণে যে খাত সমস্যায় উপনীত হবে বলে মনে করা হচ্ছে সেটিই হচ্ছে রপ্তানি খাত। সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ কমে যেতে পারে।

এলডিসি প্রসঙ্গে অধ্যাপক শরীফ বলেন, এ দেশের রপ্তানির প্রধান উৎস হচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। এ শিল্পের উত্থান হয়েছিল শুল্কমুক্ত সুবিধার কারণে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর পোশাক শিল্পের রপ্তানির উপর বড় ধরনের প্রভাব আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই দিকটি মাথায় রেখে আমাদের ভাববার সময় এখনই।

ড. শরীফ মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা একটি পণ্যের রপ্তানির উপর নির্ভরশীল। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অন্যান্য খাতেও বাজারের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে। অন্য কোন পণ্য রপ্তানি করতে সক্ষম এ রকম খাত খুঁজে বের করতে হবে। খুঁজে বের করে তাদের প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা দিতে হবে। আমি মনে করি গোল্ড রিফাইনারি এবং জুয়েলারি খাতে প্রচুর রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, এই খাতে উৎপাদিত পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। এই খাতে কাজ করার জন্য দক্ষ কর্মীর যোগান রয়েছে আমাদের দেশে। আর বিনিয়োগের জন্য আগ্রহী উদ্যোক্তাও রয়েছে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, যখন আমরা আশির দশকে গার্মেন্টস শুরু করি তখন বাংলাদেশের অবস্থান কোথায় ছিল? কোথাও ছিল না, কিন্তু সেখান থেকে তো আমরা দুই নম্বর অবস্থানে চলে এসেছি। শুরুটা যদি ভালো হয়, ভিত্তি যদি ভালো হয় আর পলিসি যদি ঠিক থাকে তাহলে কিন্তু নিজেদের জায়গা করে নিতে খুব একটা অসুবিধা হয় না।

এ বিষয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্বর্ণ নীতিমালার কোথায়-কোথায় সমস্যা রয়েছে সেটা আমাদের দিন, তাহলে অবশ্যই আমরা এটা নিয়ে কাজ করব। 

এসএইচআর/এমজে