ড. মো. মতিউর রহমান, বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ১১তম ব্যাচের কর্মকর্তা। বর্তমানে এনবিআরের সদস্য ও কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট। ছিলেন ট্রাইব্যুনালের সদস্য, কিছুদিন আগে পদোন্নতি পেয়ে ট্রাইব্যুনাল প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

শিক্ষা জীবনে মতিউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিনান্স বিষয়ে প্রথম শ্রেণীতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। সিকিউরিং ফিন্যান্স বিষয়ে এমবিএ এবং ইনডিভিজুয়াল অ্যাটিচুড অব শেয়ারহোল্ডার ইন রেসপেক্ট অব ঢাকা স্টক-এক্সচেঞ্জ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, বৃহৎ করদাতা ইউনিট, ঢাকা বন্ড কমিশনারেট রাজধানীর বিভিন্ন কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম কাস্টমস, বেনাপোল কাস্টমস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। 

ট্রাইব্যুনালে কর্মরত থেকে আড়াই বছরে প্রায় চার হাজার মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। যার মাধ্যমে সরকারের অনুকূলে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার রাজস্ব এসেছে। বর্তমানে ট্রাইব্যুনালে মামলা জট নেই বললেই চলে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাইব্যুনালকে ডিজিটাইজেশন করাসহ যুগোপযোগী করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি সোনালী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবেও কাজ করে যাচ্ছেন। ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপচারিতায় বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এফ এম আবদুর রহমান মাসুম

কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মো. মতিউর রহমান

ঢাকা পোস্ট : চাকরি জীবনে আপনার ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত  ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিজের কাজ ও পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাই?  

মতিউর রহমান : এই অফিসের মূল কাজ হলো যারা বিচার প্রার্থী তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। আপিলাত  ট্রাইব্যুনাল থেকে যে আদেশ দেওয়া হয়, তার অধিকাংশ কমিশনারের সিদ্ধান্তের বিপরীতে যায়। কমিশনার যখন আদেশ দেন, তিনিও অনেক বিচার বিশ্লেষণ করেই দেন। যদিও আমাদের ৭৬ শতাংশ রায় সরকারের পক্ষে যায়। যে রায়গুলো বিপক্ষে যায়, সেগুলো আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করেই দিই। ফিল্ড পর্যায়ের সমস্ত মামলা এই অফিস হয়ে হাইকোর্টে যায়। কাস্টমস, ভ্যাট ও আপিলাত  ট্রাইব্যুনাল প্রমাণ করে দেখিয়েছে চাইলেই মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব। ২০১৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১৫ হাজার ৩৫৬টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। ওই সময়ে আপিল মামলা দায়ের হয়েছে ৭ হাজার ৬৬১টি। ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে যে পরিমাণ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, তার মাধ্যমে এটা প্রমাণিত, সদিচ্ছা থাকলে সীমিত জনবল দিয়ে একই অফিসে মামলা নিষ্পত্তি সম্ভব। এখানে দীর্ঘদিন পেন্ডিং অনেক মামলা ছিল। আমি এর ক্রেডিট আমার আগের দুই প্রেসিডেন্টকে দিতে চাই। তারা যথেষ্ট কষ্ট করেছেন। তাদের সঙ্গে আমি যখন প্রথম যোগদান করি, সে সময় আমি এসব মামলার জটের মধ্যে পড়ি। মামলা নিষ্পত্তি করার পরই তা আবার ফিল্ডে চলে যাচ্ছে। রায়ের বাস্তবায়ন করা আমার দায়িত্ব নয়। রায় বাস্তবায়ন আবার বড় কাজ, সেটা ফিল্ড অফিস, এনবিআর ও হাইকোর্ট মিলে সমন্বয় করতে হবে। এটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।

ঢাকা পোস্ট : হাইকোর্টে হাজার হাজার মামলা বছরের পর বছর পড়ে থাকে। বিচার প্রার্থীরা যথা সময়ে বিচার পান না, এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন।

মতিউর রহমান : আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার মামলা হাইকোর্টে পড়ে রয়েছে। আমরা একটা বিষয় কখনোই ভাবি না, হাইকোর্টে যারা বিচারক রয়েছেন, তারা লিগ্যাল সাইটে নিঃসন্দেহে বিশেষজ্ঞ। কিন্তু কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিষয়ে তারা অধিকতর দক্ষ নন। সেজন্য ব্যতিক্রমধর্মী কিছু উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।

যেমন- এজলাসে নিয়মিত বিচারকের পাশাপাশি কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিষয়ে কো-জাজ বসবেন। আপিলাত ট্রাইব্যুনালে যেমন এক সিনিয়র কমিশনারের পাশাপাশি জুডিশিয়াল থেকে একজন জজ বসেন, তেমনি হাইকোর্টেও এনবিআরের জন্য যে বিশেষ আদালত রয়েছে, জুডিশিয়াল বিচারকের পাশাপাশি একজন এনবিআর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ বসবেন। তাহলে আদালতের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে মনে করছি।

ঢাকা পোস্ট : স্মার্ট বাংলাদেশের স্লোগান আপনার অফিসে কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারছেন?

মতিউর রহমান : আমাদের চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখা। প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ করা। স্মার্ট বাংলাদেশ হলো একটি কনসেপ্ট। স্মার্ট গভর্নেন্স, স্মার্ট পিপল কিংবা স্মার্ট সিস্টেম। স্মার্ট সিস্টেম যদি করা যায়, তাহলে উন্নতি ধরে রাখা যাবে। আর স্মার্ট সিস্টেমের জন্য যোগ্য লোকও লাগবে। যেমন আমার অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্তদের হাত-পা বেঁধে দেওয়া হয়, তাহলে তো স্মার্ট অফিস করা সম্ভব নয়। সত্যি কথা বলতে আমার এই অফিসে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন একটি কর্মশালা করার উদ্যোগ যদি নেই, তাহলে সেটা করার আলাদা কোনো রুম নেই। কনফারেন্স রুম নেই, অপেক্ষমাণ অতিথিদের জন্য রুম নেই। যদিও এনবিআরের নতুন আরও একটি ভবন হবে, সেখানে আমাদের প্রয়োজনীয়তা কথা বিবেচনা করার অনুরোধ করেছি। হয়ত ভবিষ্যতে হবে। অর্গানোগ্রামের পরিবর্তন দরকার সেটা নিয়েও কাজ চলছে। অর্গানোগ্রামে কিছু পদ বাড়াচ্ছি, তার সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট যিনি থাকবেন, সেটা গ্রেড-১ করা, বেঞ্চে যারা থাকবেন সেটা গ্রেট-২ করা। যাতে সিনিয়র ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা এখানে আসতে উৎসাহ পান।

ঢাকা পোস্ট : আপিলাত  ট্রাইব্যুনাল ডিজিটালাইজেশনের পথে কতদূর এগিয়েছে?

মতিউর রহমান : আমি যেখানেই কাজ করি সেখানের প্রথম পদক্ষেপ থাকে পেপারলেস অর্থাৎ ডিজিটালাইজেশন করা। কারণ এটা করতে পারলে সেবার মান উন্নত হয়, দুর্নীতি ও হয়রানি কমে যাবে। এই অফিসের অনেক পুরাতন নথি আছে যা হারিয়ে যেতে পারে। আমাদের রেকর্ড রুমে পর্যাপ্ত জায়গা নেই। আমরা নথিগুলো ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় একটি সফটওয়্যার তৈরির চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে আমাদের ওয়েবসাইটকে ডায়ানামিক ওয়েবসাইট করতেছি। এরই মধ্যে অনেকগুলো কাজ এগিয়ে নিয়েছি, এ মুহূর্তে চাইলে আপনারা যেসব মামলার শুনানির আগাম দেওয়া হচ্ছে। নিস্পত্তিকৃত মামলার তালিকা এমনকি রায়ের সারসংক্ষেপ ওয়েবসাইটে দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে কেস ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার করার উদ্যোগ নিয়েছি। এই সফটওয়্যার করতে পারলে তখন কাস্টম হাউস বা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে সব সাবমিট করতে পারবে। অনলাইনে নোটিশ কিংবা রায় জানতে পারবেন। শুধু শুনানি ছাড়া অন্য সময়ে অফিসে আসার প্রয়োজন হবে না। আশা করছি আগামী তিন মাসের মধ্যে পাইলটিং করতে পারবো।

ঢাকা পোস্ট : আপনাকে অনেকে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ বলে থাকেন। আপনার পিএইচডি ডিগ্রিও পুঁজিবাজার কেন্দ্রিক। পুঁজিবাজারে আপনি ২০০৭ সাল থেকে বিনিয়োগ করে আসছেন। পুঁজিবাজার নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ কি হতে পারে?

মতিউর রহমান : আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের হালাল রুজির একটা বড় জায়গা হলো পুঁজিবাজার। আমি যখন দেখলাম, আমার তো হালাল রুজি দরকার। আমি ফাইনান্সে লেখাপড়া করা। ক্যাপিটাল মার্কেটের ওপর আমার অনেক পড়ালেখা আছে। আমি অনেক আগে থেকে পুঁজিবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাজারে আমি দুটা জায়গায় কাজ করি। একটা হলো একটা কোম্পানিকে খুঁজে বের করি যে, কোম্পানিটির সম্ভাবনা আছে, কিন্তু এখন দুর্বল। তখন প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে বসে বলি যে, ভাই, তোমরা দুর্বল কেন, সচল হচ্ছ না কেন? আমরা খুঁজে বের করি, এই প্রতিষ্ঠান সবল হওয়ার ক্ষেত্রে কী অন্তরায় আছে। তখন প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক হিসাবে কাজ করি। আমি প্রতিষ্ঠানের দুর্বল সময় শেয়ার কিনি। যখন সমৃদ্ধ হয়, শেয়ারের দাম বাড়ে, বিক্রি করে দিই। আমি বাজারের সঙ্গে যাই না, নিজের মতো করে রিসার্চ করি। আরেকটা হলো একেবারে নতুন কোম্পানি, যে বাজারে আসবে। ক্যাপিটাল মার্কেটে আসতে হলে অনেক কমপ্লায়েন্স হতে হয়। এই কমপ্লায়েন্সের জ্ঞান আমার আছে। আমি নতুন প্রতিষ্ঠানকে সেই জ্ঞান দিয়ে সাহায্য করি।

ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপচারিতায় ড. মো. মতিউর রহমান

যেমন- ২০০৯ সালে আমি ও আমার পরিবার দুই কোটি টাকা বিনিয়োগ করে লাভই করি ১৪ কোটি টাকা। ওইটা দিয়ে শুরু। দেখা যায়, যারা জেলাস তারা নানাভাবে হয়রানি করতে চায়।

ঢাকা পোস্ট : আপনার বিরুদ্ধে সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগ সম্পর্কে আপনি কী বলবেন?

মতিউর রহমান : আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তার একটাও সত্য নয়। প্রথমত, একটা বাড়ির ছবি দেওয়া হয়েছে। বলা হয় বাড়িটি আমার। কিন্তু এই বাড়ি যার, তার ট্যাক্স ফাইলও আছে। ফাইলে ইনকামও দেখানো আছে এবং তার নামেই দেখানো আছে। বাড়িটি আমার নয়। দ্বিতীয়ত, একটা প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে আমার পরিবারের অংশীদারিত্ব আছে। প্রতিষ্ঠানটি আমার একার নয়। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ট্যাক্স ফাইল আছে। তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অর্থাৎ যে অ্যাসেট দেখানো হয়েছে, কোনো অ্যাসেটের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি কাস্টমস বিভাগে চাকরি করে ১০ বছর কাস্টমসের বাইরে ছিলাম। কাস্টমস থেকে কখন বাইরে থাকে, যখন সে কাস্টমসকে মধু মনে করে না। আমি কাস্টমসকে কখনও রুটি-রুজির জায়গা মনে করিনি, কাস্টমসকে আমি ভালোবাসি। যখন যেখানে কাজ করেছি, মন উজাড় করে কাজ করেছি। মূলত একজন কর্মকর্তাকে মূল্যায়ন করা উচিত যে, সে তার কর্মস্থলে সৎ কি অসৎ। যদি সে অসৎ হয়, তাহলে সেটা গোপন থাকে না। আমি চ্যালেঞ্জ করেছি যে, আপনারা আমার কর্মস্থল নিয়ে যাচাই করেন। আমার পরিবারের সদস্যদের ইনকাম সোর্স আছে।

ঢাকা পোস্ট : চাকরির বাইরে আর কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন কি না?

মতিউর রহমান : আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ছাড়াও আমার আরেকটি পরিচয় আছে। আমি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে কাজ করছি। এনবিআরের ইতিহাসে কেউ ব্যাংকের পরিচালক হয়নি। সেখানে আমি কেস ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার আপডেট করে ফেলছি। সোনালী ব্যাংক পুরোপুরি অনলাইনের আওতায়। সেখানে ই-ওয়ালেট ও ই-পেমেন্ট সিস্টেম করা হয়েছে। ফিনান্সিয়াল সক্ষমতা যদি বিবেচনা করেন, তাহলে সোনালী ব্যাংক বর্তমানে এক নম্বর। এছাড়া বরিশাল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। বরিশাল বিভাগীয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন হলো এমন একটি সংগঠন, যেখানে নবম গ্রেড থেকে সচিব পর্যন্ত সবাই এর সদস্য। সেখানে আমি চেষ্টা করছি বরিশাল বিভাগের উন্নয়নে কাজ করার। যেমন- বর্তমানে আমি চেষ্টা করছি বরিশালে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করার। এর পাশাপাশি বরিশালে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, নার্সিং ইন্সটিটিউট ও বরিশাল হাসপাতালকে আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরের।

ঢাকা পোস্ট : আপনার কর্মজীবনের সফল কোনো গল্প থাকলে, ঢাকা পোস্টের পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন..

মতিউর রহমান : যে কোনো জায়গায় পরিবর্তন আনা অনেক কষ্টের ও চ্যালেঞ্জিং। যেমন আমি চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে যখন ছিলাম তখন আমূল পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছিলাম। যা আজও উদাহরণ হিসাবে মানুষ স্মরণ করে। ওখানে যখন দায়িত্ব পালন করেছিলাম, তখনই অটোমেশনের কাজে হাত দেই। ওই সময় আইজিএম মডিউলকে অনলাইন করেছি, তাও আবার মাত্র তিন মাসের মধ্যে। যা বাস্তবায়ন করতে ফান্ড সঙ্কটসহ বিভিন্ন সমস্যা ছিল। ওই চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের তৎকালীন সভাপতি ও বর্তমান এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম ৫ কোটি টাকার ফান্ড দিয়েছিলেন, ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেটা বাস্তবায়ন করেছি। এটা করার ফলে অনলাইনে বিল অব এন্ট্রি দাখিল সংক্রান্ত যাবতীয় আপডেট তথ্য জানা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে কাজে গতি বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও এই কাজের স্বীকৃতি ওভাবে পাই না। বরং হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এসব কারণে দুদকে অভিযোগও জমা পড়েছে। 

ঢাকা পোস্ট : চাকরি জীবন শেষে অবসর জীবন আসবে, সেই সময়কে ঘিরে আপনার পরিকল্পনা কী?

মতিউর রহমান : আমার এলাকায় আমার পরিবারের উদ্যোগে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমার স্ত্রী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। সে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক। এক সময়ে শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত ছিল। স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে তিনি এখন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে নরসিংদী রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। পুনরায় নির্বাচনও করছেন। আমার স্বপ্ন, তাকে সৎ ও শিক্ষিত রাজনীতিবিদ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা। আর আমার ছেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয় নিয়ে পড়াশুনা শেষ করেছে। তাকে আমি দেশে নিয়ে এসেছি, তরুণ উদ্যোক্তা হিসাবে তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। অবসর জীবনে আমার প্রিয় বিষয় পুঁজিবাজারে সম্পূর্ণ সময় দিতে চাই। এর পাশাপাশি সামাজিক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে চাই।

ঢাকা পোস্ট : এত ব্যস্ততার মধ্যে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

মতিউর রহমান : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। ঢাকা পোস্ট ও এর পাঠকদের জন্য ভালোবাসা।

আরএম/এমএসএ/পিএইচ