ভুলে ভরা পাঠ্যবই, নতুন কারিকুলাম নিয়ে বিতর্ক, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের আন্দোলন, এসএসসি ও এইচএসসিতে খারাপ ফল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতাসহ শিক্ষা খাতে নানা ঘটনা ঘটেছে বিদায়ী বছরে। বছরের শুরুতে ভুলে ভরা পাঠ্যবই দিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। বছর শেষে রাজনৈতিক উত্তাপ পড়ে শিক্ষাঙ্গনে।

হরতাল-অবরোধের আতঙ্কের মধ্যে পরীক্ষায় বসে শিক্ষার্থীরা। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে এক ছাত্রীকে বিয়ে করে আলোচনায় আসেন গভর্নিং বডির ৬০ বছর বয়সী এক সদস্য। ভিকারুননিসায় এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করে বহিষ্কার হন শিক্ষক। সমালোচনা ছিল বিনামূল্যের বই বিতরণ নিয়েও।

সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিদের নির্বাচনী উপহার হিসেবে বিশেষ বিবেচনায় ৯১টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। এমপিও নীতিমালা- ২০২১ এর বিশেষ ২২ ধারা ব্যবহার করে এমপিওভুক্ত করা হয় প্রতিষ্ঠানগুলো। অভিযোগ ওঠে, প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিও নীতিমালার শর্ত পূরণ না করলেও সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ বিবেচনায় এমপিওভুক্ত করা হয়

জানুয়ারি মাসের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয় সরকার। সেসব বইয়ে ‘ইতিহাস ও তথ্য বিকৃতি’, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা গদ্যে ‘চৌর্যবৃত্তি’, মুক্তিযুদ্ধের ‘ভুল ইতিহাস’ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে শুরু হয় শিক্ষাবর্ষ। প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হয়। সেসব বই ছিল ভুলে ভরা। এরপর শুরু হয় নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে নানা আলোচনা। চলে বছরজুড়ে। বছর শেষে এসেও সেই বিতর্কের সুরাহা হয়নি। শেষ সময়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের জোরালো দাবি ওঠে নতুন শিক্ষাক্রম বাতিলের। এর মধ্যে নতুন কারিকুলামে সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শ্রেণিতে বই ছাপানো কাজ চালাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বছরজুড়ে আলোচনায় নতুন কারিকুলাম

গত জানুয়ারি থেকে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম চালু হয়। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে আরও চার শ্রেণিতে চালু হচ্ছে নতুন এ কারিকুলাম। প্রাথমিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে চালু হচ্ছে নতুন কারিকুলাম।

অভিভাবকদের দাবি, নতুন কারিকুলামে সন্তানরা আসলে কিছুই শিখতে পারছে না। শ্রেণিকক্ষের পঠন ও শিখন পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও নতুন কারিকুলামের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছেন না।

শিক্ষা কারিকুলাম সংস্কারসহ সাত দফা দাবি জানিয়ে জুন থেকে আন্দোলনে নামে শিক্ষা আন্দোলন সম্মিলিত অভিভাবক ফোরাম। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মানববন্ধন করেন অভিভাবকরা। তাদের দাবি, নতুন একটি শিক্ষাব্যবস্থা তথা নতুন কারিকুলাম আমাদের সন্তানদের শিক্ষার ভিত নষ্ট করে দিচ্ছে। যেখানে শিক্ষকরা নিজেরাই নতুন কারিকুলাম ভালো করে বুঝতে পারেন না, সেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের কী পাঠদান করবেন?

দীর্ঘসূত্রতা, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের নিরাপত্তাহীনতা, দুর্ভোগ, অতিরিক্ত টাকা ব্যয় ও সময়ক্ষেপণ কমাতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ‘একক’ ভর্তি পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। শেষ পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়ন হয়নি

যদিও বছরজুড়ে শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলেছেন, শিক্ষায় রূপান্তর একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ, এর বিকল্প নেই। সরকার শিক্ষকদের জন্য ব্যাপক প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে, যা চলমান। নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার চালাচ্ছে একটি মহল। তারা চায় না শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে শিখতে, চিন্তা করতে শিখুক, অনুসন্ধিৎসু হোক, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করুক। ওরা চায় মগজ ধোলাইয়ের শিক্ষা চালু থাকুক। নতুন কারিকুলাম চালু হলে শিক্ষায় নোট ও কোচিং ব্যবসায় ধস নামবে। এজন্য তারা ভাড়া করে অভিভাবকদের রাস্তায় নামিয়ে আন্দোলন করাচ্ছে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিভাবকরা বলছেন, নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা পুরাতন কারিকুলামের মতো বাসায় এসে পড়াশোনায় মনোযোগী হয় না। তারা পড়ার টেবিলেই বসতে চায় না। ফলে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বাসায় এসে অলস সময় কাটায়।

২২ বইয়ের ৪২১ ভুল, চার মাস পর সংশোধনী

২০২৩ সালে নতুন কারিকুলামে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে অসংখ্য ভুল ধরা পড়ে। যা গণমাধ্যমে আসার পর টনক নড়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি)। শুরু হয় ভুল চিহ্নিত করার কাজ। প্রায় চার মাস পর এপ্রিলের শেষ এসে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ২২টি বইয়ে ৪২১টি ভুল-ভ্রান্তির সত্যতা পায় এনসিটিবি। ভুলগুলো সংশোধন করে ২৯ এপ্রিল এনসিটিবির ওয়েবসাইটে সংশোধনী দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তড়িঘড়ি করে চলতি শিক্ষাবর্ষে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম চালুর ফলে এসব বইয়ে নানা ভুল, অসঙ্গতি ও বিভ্রান্তিকর তথ্য এসেছে। দেশজুড়ে সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে পাঠ্যবইয়ের ভুলভ্রান্তি চিহ্নিত করে সংশোধন করা হচ্ছে। এতে কারও কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে দুটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

জানুয়ারির বই যায় এপ্রিলে

২০২৩ শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যে পাঠ্যবই জানুয়ারি ১ তারিখ তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও নানা সংকটে সেটি হয়নি। এপ্রিল মাসে গিয়ে শেষ হয় জানুয়ারি মাসের বই বিতরণ। করোনা মহামারি ও কাঁচামাল সংকটের কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বই ছাপানোর কাজ শুরু হয় বেশ দেরিতে। তাই ১ জানুয়ারি বই উৎসব হলেও সব বই হাতে পায়নি শিক্ষার্থীরা।

এসএসসি-এইচএসসিতে খারাপ ফল

২০২৩ সালে এসএসসি ও এইচএসসিতে খারাপ ফল হয়েছে। এ দুটি পরীক্ষার পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে। এ ছাড়া, অন্যান্য সব সূচকও নেতিবাচক ছিল। যদিও মন্ত্রণালয় ও শিক্ষাবোর্ড বলছে, এ ফলাফল স্বাভাবিক, খারাপ নয়।

করোনার আগের বছরগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে পাসের হার সাধারণত ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশের ঘরে ছিল। মাঝে ২০২১ ও ২০২২ শিক্ষাবর্ষে পাসের হার বেড়ে ৯০ শতাংশের বেশি হয়। কারণ, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে কম বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া। এ বছর আগের মতো স্বাভাবিক নিয়মে পরীক্ষায় ফেরায় ফল ৮০ শতাংশের ঘরে নেমে এসেছে।

শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলেছেন, শিক্ষায় রূপান্তর একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ, এর বিকল্প নেই। সরকার শিক্ষকদের জন্য ব্যাপক প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে, যা চলমান। নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার চালাচ্ছে একটি মহল। তারা চায় না শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে শিখতে, চিন্তা করতে শিখুক, অনুসন্ধিৎসু হোক, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করুক। ওরা চায় মগজ ধোলাইয়ের শিক্ষা চালু থাকুক। নতুন কারিকুলাম চালু হলে শিক্ষায় নোট ও কোচিং ব্যবসায় ধস নামবে। এজন্য তারা ভাড়া করে অভিভাবকদের রাস্তায় নামিয়ে আন্দোলন করাচ্ছে

ওই দুই পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, করোনার সময়ের প্রভাব এবারের ফলে পড়েছে। এ ছাড়া, দুই বছর পর চলতি বছর পূর্ণ নম্বরে পরীক্ষা এবং ইংরেজি ও গণিতে খারাপ করায় এর প্রভাব সার্বিক ফলাফলের ওপর পড়েছে।

বছর শেষে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়ায় শিক্ষাঙ্গনে

দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এ কারণে অক্টোবর মাস থেকে রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়ায়। ফলে বছরের শেষ সময়ে সব শ্রেণিতে বার্ষিক পরীক্ষা, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির অর্ধবার্ষিকী (ষাণ্মাসিক) মূল্যায়ন, এসএসসির প্রস্তুতি, এইচএসসির প্রাক-নির্বাচনীসহ বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষায় ব্যাঘাত ঘটে।

দাবি ওঠে, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহার করার। যদিও সেই দাবি মানেনি বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলো। শেষ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন পরীক্ষা বন্ধের দিন অর্থাৎ শুক্র-শনিবার নেয়। বাকি পরীক্ষাগুলো হরতাল-অবরোধের ফাঁকা দিনগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়।

বিশেষ বিবেচনায় এমপিওভুক্ত হয় ৯১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিদের নির্বাচনী উপহার হিসেবে বিশেষ বিবেচনায় ৯১টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। এমপিও নীতিমালা- ২০২১ এর বিশেষ ২২ ধারা ব্যবহার করে এমপিওভুক্ত করা হয় প্রতিষ্ঠানগুলো।

অভিযোগ ওঠে, প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিও নীতিমালার শর্ত পূরণ না করলেও সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ বিবেচনায় এমপিওভুক্ত করা হয়। এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এর কোনো শর্তই মানা হয়নি। শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিবেচনায় যাচাই-বাছাই ছাড়াই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়।

এমপিওভুক্তির দাবিতে রাজপথে শিক্ষকরা

এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জুন থেকে আন্দোলন শুরু করেন। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সদস্যরা অবস্থান নেন। ১৯ জুলাই আন্দোলনরত শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

অভিভাবকদের দাবি, নতুন কারিকুলামে সন্তানরা আসলে কিছুই শিখতে পারছে না। শ্রেণিকক্ষের পঠন ও শিখন পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও নতুন কারিকুলামের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছেন না

সেখানে তিনি বলেন, এ বিষয়ে (জাতীয়করণ) আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ নেই। তবে, জাতীয়করণের যৌক্তিকতা আছে কি না, সেটাসহ শিক্ষা ও শিক্ষকদের সার্বিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে দুটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষামন্ত্রীর এমন আশ্বাসেও অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান শিক্ষকরা।

২ আগস্ট সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলনরত শিক্ষকরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।

আটকে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়েরএককভর্তি পরীক্ষা

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি কার্যক্রমে জটিলতা, দীর্ঘসূত্রতা, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের নিরাপত্তাহীনতা, দুর্ভোগ, অতিরিক্ত টাকা ব্যয় ও সময়ক্ষেপণ কমাতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ‘একক’ ভর্তি পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। শেষ পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। নতুন পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে ইউজিসি গত ৩১ অক্টোবর ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ, ২০২৩’–এর খসড়া চূড়ান্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠালেও সেটি চূড়ান্ত হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় নানা জটিলতায় সেটি চূড়ান্ত করতে না পারায় এবারও আগের মতো গুচ্ছ ভিত্তিতেই ভর্তি পরীক্ষা হবে বলে জানায় ইউজিসি।

একাদশের ছাত্রীকে বিয়ে করে আলোচনায় আসেন মুশতাক

ঢাকার মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করে আলোচনায় আসেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ]

দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এ কারণে অক্টোবর মাস থেকে রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়ায়। ফলে বছরের শেষ সময়ে সব শ্রেণিতে বার্ষিক পরীক্ষা, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির অর্ধবার্ষিকী (ষাণ্মাসিক) মূল্যায়ন, এসএসসির প্রস্তুতি, এইচএসসির প্রাক-নির্বাচনীসহ বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষায় ব্যাঘাত ঘটে

ঢাকা পোস্টের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পর ৬০ বছর বয়সী মুশতাককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিষয়টি তদন্ত করতে ঢাকা জেলা প্রশাসন অফিস ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ড আলাদা তদন্ত কমিটি করে। এটি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

মেয়ের বাবা মুশতাকের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে ঠাকুরগাঁওয়ে মামলা করেন। ঢাকার আদালতেও মামলা হয়। এসব মামলায় মুশতাককে সহযোগিতা করার জন্য আইডিয়াল স্কুলের অধ্যক্ষকেও আসামি করা হয়। পরে অসুস্থতাজনিত ছুটিতে গিয়ে পদত্যাগ করেন অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী। বাধ্য হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করেন মুশতাক আহমেদ।

এনএম/এসকেডি/এমএআর