করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারির পর শুরু হয় ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। সর্বশেষ নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় সৃষ্ট সংকটে কঠিন সময় পার করছে দেশ। এমন কঠিন সময়ও দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতির প্রসার থামেনি। বরং বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

শেষ হতে যাওয়া ২০২৩ সালেও দুর্নীতিবাজদের লাগাম টেনে ধরার মতো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র চোখে পড়েছে।

২০০৪ সালে গঠিত কমিশনের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন বিচারপতি সুলতান হোসেন খান। এরপর যথাক্রমে সাবেক সেনাপ্রধান হাসান মশহুদ চৌধুরী, গোলাম রহমান, মো. বদিউজ্জামান, ইকবাল মাহমুদ ও মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। কিন্তু দুদকের ভাবমূর্তির তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রতিকূল পরিবেশ উপেক্ষা করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান, অনুসন্ধান ও তদন্তে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক)। গত বছরের (২০২২ সাল) তুলনায় চলতি বছরে (২০২৩ সাল) দায়ের করা মামলা কমলেও বেড়েছে দায়মুক্তি বা অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সংখ্যা। সাফল্য বলতে মামলার দীর্ঘ আট বছর পর বহুল আলোচিত বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা

তারা বলছেন, প্রতিকূল পরিবেশ উপেক্ষা করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান, অনুসন্ধান ও তদন্তে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক)। গত বছরের (২০২২ সাল) তুলনায় চলতি বছরে (২০২৩ সাল) দায়ের করা মামলা কমলেও বেড়েছে দায়মুক্তি বা অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সংখ্যা। সাফল্য বলতে মামলার দীর্ঘ আট বছর পর বহুল আলোচিত বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম‌্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা।

এ ছাড়া, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সেগুনবাগিচার দুদক কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির করানোর বিষয়টিও বেশ আলোচিত হয়েছে এ বছর। অর্থপাচার সংক্রান্ত সব অপরাধ তদন্তের ক্ষমতা ফের ফিরে পেতে আইন ও বিধি সংশোধনের তোড়জোড়ও করতে দেখা গেছে সংস্থাটিকে।

চলতি বছরের নয় মাসে (জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) বিভিন্ন অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে ৩০৩টির অনুসন্ধান এবং ১৯৬টি মামলা দায়ের করে দুদক / ফাইল ছবি

কমছে দুর্নীতির মামলা, বেড়েছে দায়মুক্তি

চলতি বছরের নয় মাসে (জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) বিভিন্ন অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে ৩০৩টির অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল। এ সময়ে মাত্র ১৯৬টি মামলা হয়। কিন্তু নয় মাসসহ বিগত দিনগুলোর পরিসমাপ্তি অর্থাৎ অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয় ৫৫৯টি। যা ২০২১ ও ২০২২ সালের ১১ মাসের পরিসংখ্যান বিবেচনায় প্রায় দ্বিগুণ। একই সময়ে চার্জশিট কিছুটা বেশি অর্থাৎ ২৪৭টি মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়। অন্যদিকে, ৫৫টি মামলার চার্জশিট না দিয়ে এফআরটির (মামলা থেকে অব্যাহতি) মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়।

২০২১ ও ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে ২৪৪টি ও ৩১২টি অভিযোগ পরিসমাপ্তি অর্থাৎ নথিভুক্তি (অভিযোগ থেকে অব্যাহতি) দেওয়া হয়। ওই সব অভিযোগে দুর্নীতি খুঁজে পায়নি দুদকের অনুসন্ধান বিভাগ।

২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৩২৬টি দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। একই সময়ে ৩১১টি দুর্নীতির মামলা হয়। ২৪৪টি অভিযোগের পরিসমাপ্তি বা নথিভুক্তি (অভিযোগ থেকে অব্যাহতি) হয়। তদন্ত শেষে ২২২টি মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়। এ সময়ে এফআরটি (মামলা থেকে অব্যাহতি) হয় ৮০টি মামলা

ঢাকা পোস্টের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে দুদক বিভিন্ন অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে ৩৫৪টি অনুসন্ধানের জন্য আমলে নেয়। এ সময় মামলা দায়ের হয় ২৭৬টি। ৩১২টি অভিযোগের পরিসমাপ্তি বা নথিভুক্তি (অভিযোগ থেকে অব্যাহতি) হয়। ১৬২টি মামলার চার্জশিট দেয় দুদক। ৭৮টি মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।

২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৩২৬টি দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। একই সময়ে ৩১১টি দুর্নীতির মামলা হয়। ২৪৪টি অভিযোগের পরিসমাপ্তি বা নথিভুক্তি (অভিযোগ থেকে অব্যাহতি) হয়। তদন্ত শেষে ২২২টি মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়। এ সময়ে এফআরটি (মামলা থেকে অব্যাহতি) হয় ৮০টি মামলা।

দীর্ঘ আট বছর পর চলতি বছরের জুনে আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর নাম বেসিক ব্যাংকের ৫৮ মামলার চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয় / ফাইল ছবি

মামলার ৮ বছর পর আসামি বেসিক ব্যাংকের বাচ্চু

নানা আলোচনা-সমালোচনা ও প্রশ্ন পেরিয়ে মামলার দীর্ঘ আট বছর পর চলতি বছরের (২০২৩ সাল) জুনে আলোচিত সাবেক চেয়ারম‌্যান আবদুল হাই বাচ্চুর নাম বেসিক ব্যাংকের ৫৮ মামলার চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করে দুদক। চার্জশিটে বাচ্চুসহ ১৪৭ জনকে আসামি করা হয়।

বেসিক ব্যাংকের ৫৮টি মামলার তদন্তে নতুন আসামি হিসেবে আলোচিত আবদুল হাই বাচ্চু ও কোম্পানি সচিব শাহ আলম ভূঁইয়ার নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি চলতি বছর দুদকের অন্যতম সাফল্য বলে বিবেচিত হচ্ছে। অথচ ২০১৫ সালে দায়ের করা কোনো মামলায় বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি। যে কারণে দুদককে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। চার্জশিটে আসামিদের বিরুদ্ধে মোট দুই হাজার ২৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

আসামিদের মধ্যে ৪৬ জন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ১০১ জন গ্রাহকসহ বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিরা রয়েছেন। যেখানে ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী ফখরুল ইসলামকে আসামি করা হয় ৪৮টি মামলায়। ডিএমডি ফজলুস সোবহান ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থ ২৩টি, মো. সেলিম আটটি, বরখাস্ত হওয়া ডিএমডি এ মোনায়েম খানকে ৩৫টি মামলায় আসামি করা হয়।

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ছয় হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ৩০ মে মামলা করে দুদক। গত ৪ অক্টোবর ড. ইউনূসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। যদিও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আত্মসাতের মামলা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়েছে বলে দাবি করা হয় তার পক্ষ থেকে

প্রসঙ্গত, ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে মোট সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ ওঠার পর অনুসন্ধানে নামে দুদক। ঋণপত্র যাচাই না করে জামানত ছাড়া, জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণদানসহ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনাপর্ষদের বিরুদ্ধে। পাঁচ বছর অনুসন্ধান শেষে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনে টানা ৫৬টি মামলা হয়।

শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস / ফাইল ছবি

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় যখন মামলা করা হয় তখন দুদক চেয়ারম্যান ছিলেন মো. বদিউজ্জামান। তিনি মামলার তদন্ত শেষ করে যেতে পারেননি। ২১০৬ সালে দুদক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান ইকবাল মাহমুদ। তার পাঁচ বছরেও বেসিক ব্যাংকের তদন্ত শেষ হয়নি। সংস্থাটির বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ২০২১ সালে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। তার আমলে মামলার তদন্ত শেষ হয়। অর্থাৎ এ মামলার তদন্ত শেষ করে চার্জশিট দিতে দুদকের আট বছর লেগে যায়।

আসামি নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ছয় হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ৩০ মে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৪ অক্টোবর ড. ইউনূসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। যদিও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আত্মসাতের মামলা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়েছে বলে দাবি করা হয় তার পক্ষ থেকে।

বছরজুড়ে অর্থপাচার রোধ সংক্রান্ত অভিযোগের তীর ছিল দুদকের দিকে। এমনকি দেশের উচ্চ আদালত থেকেও বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার এবং পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে দুদক ঘুমিয়ে আছে বলে মন্তব্য করা হয়। যে কারণে অর্থপাচার সংক্রান্ত সব অপরাধের তদন্তের ক্ষমতা পুনরায় ফিরে পেতে আইন ও বিধি সংশোধনের তোড়জোড় শুরু করে দুদক

মামলার আসামিরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী। এ ছাড়া, আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী, আইনজীবী জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলামকেও আসামি করা হয়।

অর্থপাচার : ক্ষমতা ফেরাতে নেই গতি

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অর্থপাচারের পরিমাণ বাড়ছে। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়েছে চার লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা (চার হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার)। অর্থাৎ গড়ে প্রতি বছর পাচার হয়েছে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা।

বছরজুড়ে অর্থপাচার রোধ সংক্রান্ত অভিযোগের তীর ছিল দুদকের দিকে। এমনকি দেশের উচ্চ আদালত থেকেও বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার এবং পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে দুদক ঘুমিয়ে আছে বলে মন্তব্য করা হয়। যে কারণে অর্থপাচার সংক্রান্ত সব অপরাধের তদন্তের ক্ষমতা পুনরায় ফিরে পেতে আইন ও বিধি সংশোধনের তোড়জোড় শুরু করে দুদক।

অর্থপাচারসহ সম্পৃক্ত সব অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্ত অন্যান্য সংস্থার মতো ক্ষমতা পেতে আইন ও বিধিমালা (তফসিলসহ) সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে দুদক / ফাইল ছবি 

দুদকের দাবি ছিল, বিদ্যমান আইনে আমদানি-রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত করতে পারে না তারা। এর বাইরে বেসরকারি পর্যায়েও অর্থপাচার সংক্রান্ত অপরাধ সংঘটিত হয়। যার তদন্তের ক্ষমতাও দুদকের এখতিয়ারের বাইরে। যে কারণে ২০১২ সালের অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে অর্থপাচারসহ সম্পৃক্ত সব অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্ত অন্যান্য পাঁচটি সংস্থার পাশাপাশি দুদককেও দেওয়ার লক্ষ্যে আইন ও বিধিমালা (তফসিলসহ) সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করে সংস্থাটি।

২০২২ সালে অর্থপাচার ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে জাতীয় সমন্বয় কমিটির ২৬তম সভায় দুদক চেয়ারম্যানের দাবির পক্ষে সমর্থন জানান জাতীয় সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে (বিএফআইডি) প্রস্তাবনা প্রস্তুতের নির্দেশনা দেন। ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর বিএফআইডি, দুদক ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের আরও একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিধিমালা (তফসিলসহ) সংশোধনের জন্য দুদকের কাছে প্রস্তাবনা চাওয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ২৯ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। কিন্তু ২০২৩ সাল শেষ হলেও বিধিমালা সংশোধন আলোর মুখ দেখেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, অর্থপাচার সংক্রান্ত ২৭টি অপরাধের মধ্যে কেবলমাত্র ঘুষ ও দুর্নীতি থেকে উদ্ভূত অর্থপাচার অপরাধ দুদকের আওতায়। ফলে, আমাদের অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের প্রস্তাব হলো, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আমাদেরও যেন বাকি ২৬টি অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্তের এখতিয়ার দেওয়া হয়। এ বিষয়ে আমাদের উদ্যোগ চলমান।’

আরএম/এমএআর