বছরজুড়ে আলোচনায় করোনা, রক্ষা পাননি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরাও
শেষের পথে ২০২০ সাল। তবে প্রাণঘাতী করোনার কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বছরটি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও কয়েক লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এ ভাইরাসে। মারা গেছেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ। রক্ষা পাননি সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরাও।
আক্রান্ত হয়েছেন যারা-
বিজ্ঞাপন
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও করোনায় আক্রান্ত হন।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সিএমএইচে মৃত্যু হয় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর। পরে পরীক্ষা করে জানা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।
আ ক ম মোজাম্মেল হক
গত ১২ জুন নমুনা পরীক্ষায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। পরের দিন তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। গত ২২ জুন কোভিড-১৯ মুক্ত হয়ে বাসায় ফেরেন মন্ত্রী।
টিপু মুনশি
করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গত ১৭ জুন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা শেষে ২৭ জুন দুপুরে করোনামুক্ত হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন তিনি।
মো. শাহাব উদ্দিন
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) নমুনা পরীক্ষা করলে গত ১২ আগস্ট দুপুরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি সিএমএইচে ভর্তি হন। করোনামুক্ত হয়ে ২০ আগস্ট দুপুরে সিএমএইচ থেকে ঢাকার বেইলি রোডের সরকারি বাসায় ফেরেন মন্ত্রী।
এম এ মান্নান
গত ১৩ অক্টোবর করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সিএমএইচে ভর্তি হন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। প্রায় ২০ দিন সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ২ নভেম্বর করোনামুক্ত হয়ে বাসায় ফেরেন এম এ মান্নান।
ড. হাছান মাহমুদ
গত ১৬ অক্টোবর নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ আসায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন। ২৫ অক্টোবর করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফা নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসে তার।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন
করোনার কোনো লক্ষণ না থাকলেও পরীক্ষার পর আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ৪৭তম সম্মেলনে যোগদানের জন্য নাইজার সফর উপলক্ষে নিয়মিত পরীক্ষার অংশ হিসেবে তার করোনা পরীক্ষা করা হলে গত ২৫ নভেম্বর ফল জানা যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে বাসায় আইসোলেশনে থেকে করোনামুক্ত হন তিনি।
ডা. দীপু মনি
গত ৬ ডিসেম্বর রাতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর সরকারি বাসভবনে আইসোলেশনে ছিলেন তিনি। গত ২১ ডিসেম্বর করোনামুক্ত হন শিক্ষামন্ত্রী।
বীর বাহাদুর উশৈসিং
গত ৬ জুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। গত ৭ জুন উন্নত চিকিৎসার জন্য বান্দরবান থেকে হেলিকপ্টারে এনে তাকে ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। ২৪ জুন করোনামুক্ত হন তিনি।
শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ
গত ১৩ জুন রাত পৌনে ১২টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সিএমএইচে মৃত্যু হয় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর। মারা যাওয়ার পর তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। ১৪ জুন সকালে তার পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার কেকানিয়ায় পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয় তাকে।
কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক
করোনা পজিটিভ হয়ে গত ১ জুলাই সিএমএইচে ভর্তি হন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম। সেখানেই চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি। দীর্ঘ ১৬ দিন চিকিৎসা শেষে ফলোআপ পরীক্ষায় প্রতিমন্ত্রীর করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী
গত ১৪ সেপ্টেম্বর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি তার মন্ত্রিপাড়ার সরকারি বাসভবনে হোম আইসোলেশনে ছিলেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর করোনামুক্ত হন তিনি।
ফরহাদ হোসেন
গত ১০ অক্টোবর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। এরপর হোম আইসোলেশনে চলে যান তিনি। ৩০ অক্টোবর পরীক্ষায় তার করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে।
শাহরিয়ার আলম
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে গত ১২ নভেম্বর শনাক্ত হন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। প্রতিমন্ত্রী বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়ে করোনামুক্ত হন।
এসএইচআর/এইচকে/এমএআর