শিশুদের বিপদ ডেকে আনছে যে আসক্তি
২০২১ সালে রাজধানীর কলাবাগানে বন্ধুর বাসায় ডেকে ধানমন্ডির মাস্টার মাইন্ড স্কুলের ১৭ বছরের ‘ও লেভেল’ পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনায় ভিকটিমের বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। ঘটনার তদন্তে কলাবাগানে ছেলেটির বাসায় গিয়ে বিকৃত যৌন নির্যাতনে ব্যবহৃত কিছু জিনিসপত্র উদ্ধার করে পুলিশ। যা পশ্চিমা পর্নোগ্রাফির ভিডিওতে ব্যবহার করতে দেখা যায়। ওই ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর বন্ধু (বয়স ১৮ বছরের নিচে) জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, সে পর্নোগ্রাফি ভিডিও দেখে এসব ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল।
বর্তমানে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারী অধিকাংশ শিশু পর্নোগ্রাফি দেখছে। একপর্যায়ে তারা আসক্ত হয়ে পড়ছে। ফল হিসেবে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে শিশু-কিশোরদের মধ্যে ধর্ষণ, ইভটিজিং ও যৌন নির্যাতনের প্রবণতা।
বিজ্ঞাপন
শিশুবিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত শিশুদের সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ আসক্তি শিশু-কিশোরদের শারীরিকভাবে দুর্বল করে দিচ্ছে। এতে তাদের কর্মক্ষমতা কমছে। পড়াশোনায়ও অনীহা তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি তারা নানা ধরনের যৌনবিষয়ক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আসক্তির কারণে তরুণদের মধ্যে নৈতিক অধঃপতন হচ্ছে। ফলে আমরা দেখছি, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এখন ধর্ষণ মামলার আসামি হচ্ছে।
আরও পড়ুন
দেশের ৩৪ শতাংশ শিশু পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। তাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি দেখে। আসক্ত ২৬ শতাংশ মেয়েশিশু তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে এসব দেখে। ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ অনাত্মীয় বা পরিবারের বাইরের লোকজনের সঙ্গে দেখে। পর্নোগ্রাফি দেখা শিশুদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ দেখে বন্ধু অথবা আত্মীয়-স্বজনের বাসায়। ৩২.৩ শতাংশ দেখে নিজেদের বাসায়। ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ শিশু তাদের বন্ধু-বান্ধবের মাধ্যমে প্রথম পর্ন দেখে। বাকিরা আত্মীয়-স্বজন, অপরিচিত এবং নিজ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেখে- বলছে গবেষণা প্রতিবেদন
স্যার সলিমুল্ল্যাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের পেড্রিয়াটিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক শেখ জাহিদ বখস বলেন, পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত ছেলে ও মেয়েরা বাসায় পরিবারের অনেকের সঙ্গে মিশতে চায় না, একা থাকতে পছন্দ করে। একপর্যায়ে মানসিক রোগে ভোগে। মেজাজ খিটখিটে হয়। এ ছাড়া, আসক্ত অনেকের ক্ষেত্রে বিশেষ করে ছেলেদের বিয়ের পর সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এক কথায় বলতে গেলে, এ আসক্তির পরিণতি মাদক থেকেও ভয়াবহ।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মানসিক রোগবিশেষজ্ঞ ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, পর্নোগ্রাফি শিশুদের ভেতরে বিকৃত মানসিকতা তৈরি করে। যৌনবিষয়ক একটি বিকৃত চিন্তা ও ধারণা তৈরি করে। বাংলাদেশে তেমন যৌনাচারের শিক্ষাব্যবস্থা নেই, তাই শিশুরা ভিডিওতে যা দেখে, স্বাভাবিক জীবনকেও সেটা মনে করে। যখন তারা এগুলো দেখে তাদের মধ্যে একটি সেক্সুয়াল ক্রাইম করার প্রবণতা বেড়ে যায়। অনেক সময় তারা না জেনেই নিজেদের এসব ক্রাইমের দিকে ঠেলে দেয়।
শিশুদের মধ্যে কেন এ আসক্তি
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, ১৮ বছরের নিচের শিশু-কিশোররা মূলত দুটি কারণে এ ধরনের অনলাইন সেক্সুয়াল অ্যাক্টিভিটিজ বা পর্নোগ্রাফির সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। প্রথমত, বয়সগত কারণে হরমোনের পরিবর্তন; অপরটি হচ্ছে বন্ধু-বান্ধবের প্রভাব। এ ছাড়া, আগে পর্নোগ্রাফির কনটেন্টগুলো সবাই গোপনীয়তার সঙ্গে উপভোগ করত। এখন এগুলো খোলামেলাভাবে উপভোগ করা হয়। মোবাইলে বা ল্যাপটপে ইন্টারনেট ব্যবহার করলে অনেক সময় অনিচ্ছাকৃতভাবেও চলে আসে কনটেন্টগুলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক এবং সমাজ ও অপরাধবিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, শারীরিক পরিবর্তন এবং সঙ্গগত (বন্ধু-বান্ধব) কারণে শিশু-কিশোররা পর্নোগ্রাফি দেখায় আসক্ত হচ্ছে। এগুলো দেখে একপর্যায়ে তাদের যৌন আকাঙ্ক্ষা তৈরি হচ্ছে। তখন তারা বিপরীত লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক করে যৌন আকাঙ্ক্ষা মেটানোর চেষ্টা করছে। যখন তারা ব্যর্থ হচ্ছে তখন জোরপূর্বক চেষ্টা করছে। ধর্ষণ, ইভটিজিং, যৌন নিপীড়নের মতো কাজে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। এগুলো করতে না পারলে টাকার বিনিময়ে আকাঙ্ক্ষা মেটানোর চেষ্টা করছে। ফলে একদিকে যেমন তাদের নৈতিক অবক্ষয় হচ্ছে, অন্যদিকে পড়াশোনায় অনীহা তৈরি হচ্ছে। মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হচ্ছে তারা।
আরও পড়ুন
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ইউটিউব বা টিকটকে অনেক প্রি-সেক্সুয়াল কনটেন্ট দেখা যায়। এসব কনটেন্টে নগ্নতা না থাকলেও এগুলো যৌন সুড়সুড়ি বা যৌন উন্মাদনা তৈরি করে। নগ্ন কনটেন্টগুলোর বিষয়ে নানা রকম উদ্যোগ নেওয়া হলেও এগুলোর বিরুদ্ধে কেউ কোনো উদ্যোগ নেয় না।
গবেষণার ফল ভয়াবহ
২০২৩ সালে শিশু সহিংসতা নিয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে বেসরকারি সংস্থা- ইনসিডিন বাংলাদেশ ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের অধিকাংশ শিশুই তাদের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়র মাধ্যমে পর্ন দেখা শুরু করে এবং পরে আসক্ত হয়।
এতে বলা হয়েছে, দেশের ৩৪ শতাংশ শিশু পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। তাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি দেখে।
“পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত ২৬ শতাংশ মেয়ে শিশু তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে এসব দেখে। ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ অনাত্মীয় বা পরিবারের বাইরের লোকজনের সঙ্গে দেখে। পর্নোগ্রাফি দেখা শিশুদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ দেখে বন্ধু অথবা আত্মীয়-স্বজনের বাসায়। ৩২.৩ শতাংশ দেখে নিজেদের বাসায়। ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ শিশু তাদের বন্ধু-বান্ধবের মাধ্যমে প্রথম পর্ন দেখে। বাকিরা আত্মীয়-স্বজন, অপরিচিত এবং নিজ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেখে।”
খোলামেলা হচ্ছে শিশুরা, বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা
পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, প্রায়ই অনেক অভিভাবক তাদের অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুকে (অধিকাংশই মেয়ে) নিয়ে সাইবার পুলিশের কাছে আসেন। তাদের বেশির ভাগেরই একই ধরনের অভিযোগ থাকে। মেয়েটি নিজের স্কুল বা কোচিংয়ে কোনো ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কথা বলত। কথাবার্তার একপর্যায়ে তারা ভিডিও কলে ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলতে থাকে। পরে তাদের বন্ধুরা সেসব ভিডিও নিজের বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার, অথবা ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করে অথবা আপলোডের হুমকি দেয়।
সাইবার ক্রাইম বিষয়ক সচেতনতাধর্মী প্রতিষ্ঠান সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ার্নেস ফাউন্ডেশনের গবেষণা বলছে, গত ছয় বছরে শিশুদের সাইবার অপরাধের শিকার হওয়ার হার ব্যাপক বাড়ছে, যা উদ্বেগজনক। ২০২৩ সালের জরিপে ভুক্তভোগীদের ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশের বয়সই ১৮ বছরের নিচে, যা ২০১৮ সালের জরিপের তুলনায় ১৪০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে।
অধিকাংশ স্কুল-কলেজপড়ুয়া মেয়ে এ ধরনের অপরাধের শিকার হচ্ছে। অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি। কিশোর-কিশোরীরা খুব সহজেই আজকাল এ ধরনের কনটেন্ট দেখতে পায়। এসব দেখে তাদের মধ্যেও এ ধরনের কাজ করার তাড়না তৈরি হয়। একপর্যায়ে নিজেদের ফ্যান্টাসি থেকে তারা খোলামেলা হয়ে ভিডিও কলে কথা বলে। এরপর তারা অপরাধের শিকার হয়। পর্নোগ্রাফির আসক্তি নীতি-নৈতিকতাকে অনেকাংশে ধ্বংস করে ফেলে। এ কারণে তারা অপরাধের শিকার হয়
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, অধিকাংশ স্কুল-কলেজপড়ুয়া মেয়ে এ ধরনের অপরাধের শিকার হচ্ছে। অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি। কিশোর-কিশোরীরা খুব সহজেই আজকাল এ ধরনের কনটেন্ট দেখতে পায়। এসব দেখে তাদের মধ্যেও এ ধরনের কাজ করার তাড়না তৈরি হয়। একপর্যায়ে নিজেদের ফ্যান্টাসি থেকে তারা খোলামেলা হয়ে ভিডিও কলে কথা বলে। এরপর তারা অপরাধের শিকার হয়। পর্নোগ্রাফির আসক্তি নীতি-নৈতিকতাকে অনেকাংশে ধ্বংস করে ফেলে। এ কারণে তারা অপরাধের শিকার হয়।
২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি ময়মনসিংহের হালুয়ারঘাটে গারো সম্প্রদায়ের দুই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামির বয়স ১৭। পরে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার কিশোর জানায়, সেও পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত ছিল। একই বছরের আগস্টে গাজীপুরের পূবাইলে এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল তার ১৬ বছরের প্রেমিকের বিরুদ্ধে। ওই প্রেমিককে গ্রেপ্তারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে পর্নে আসক্তির বিষয়টি উঠে আসে।
শিশুদের ফেরানোর দায়িত্ব বাবা-মা ও শিক্ষকের
সাইবার অপরাধ ও সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, বাবা-মা ও অভিভাবক এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নজরদারি ও কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে শিশুদের পর্নোগ্রাফি থেকে দূরে রাখতে হবে।
সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, পর্নোগ্রাফি থেকে শিশুদের দূরে রাখতে প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার প্রয়োজন। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় ইন্টারনেট ব্যবহার করে সেটি যেন আসক্তিতে পরিণত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার সবসময় অভিভাবকদের নজরে থাকা উচিত। তাদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাসার কম্পিউটারটি ঘরের খোলামেলা জায়গায় রাখা উচিত, যাতে দেখা যায় সে কখন কী ব্যবহার করছে। এ ছাড়া, সব ডিভাইসে প্যারেন্টিং টুলস থাকে। অভিভাবকদের এ টুলস ব্যবহার করা উচিত। প্যারেন্টিং টুলসের মাধ্যমে সন্তানের ডিভাইসে কী দেখা যাবে, আর কী যাবে না, সব নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন অভিভাবক।
আরও পড়ুন
সমাজ ও অপরাধবিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল বলেন, এমন পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য অভিভাবকদের প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে। সন্তানদের সঙ্গে এসব বিষয়ে নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি স্কুলেও সপ্তাহে বা মাসে অন্তত এক দিন হলেও এসব বিষয়ে পৃথক সেশন থাকা উচিত। আগে স্কুলে নৈতিকতার ক্লাস হতো। এখন এগুলো চোখে পড়ে না। সমবেতভাবে এ প্রচেষ্টাগুলো নিলে আমরা অনেকাংশে শিশু-কিশোরদের পর্নোগ্রাফি থেকে দূরে রাখতে সক্ষম হব।
সরকার যা করছে, যা পারছে না
শিশুদের পর্নোগ্রাফি প্রতিরোধে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের সাইবার ইউনিটগুলো। ২০১৯ সাল থেকে নিরাপদ ইন্টারনেট ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে প্রায় ৩০ হাজার আন্তর্জাতিক পর্ন সাইট বন্ধ করেছে সরকার। মোবাইল অপারেটরগুলোকেও কিছু সুনির্দিষ্ট পর্ন সাইটকে ব্লক করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সালমান মুক্তাদির, ‘ভাদাইম্যা’ চ্যানেল, সানাই মাহবুবসহ যৌন সুড়সুড়ি দিয়ে প্রস্তুত করা কিছু কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে আটকও করেছিল পুলিশ। তবে, পুলিশের সাইবার ইউনিট বলছে, এখনো এ ধরনের অসংখ্য কন্টেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে। এসব কনটেন্টের বিরুদ্ধে ফেসবুক-ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দেওয়া হলেও তা ব্লক করা যায়নি। পাশাপাশি শিশুরা বিকল্প সার্ভার ব্যবহার করেও পর্নোগ্রাফি দেখছে, যা সমাধানের উপায় পৃথিবীর কোনো দেশে নেই।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, সরকার বিষয়টি নিয়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। বিটিআরসি ইতোমধ্যে ৩০ হাজারের মতো পর্ন সাইট বন্ধ করেছে। বাংলাদেশে পর্ন ভিউয়ারও আগের চেয়ে অনেক কমেছে। আমাদের কাছে কোনো পর্ন সাইটের রেফারেন্স এলেই আমরা সেগুলো তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দিচ্ছি। তবে, বর্তমানে আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় বিপদ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াগুলো (ফেসবুক, ইউটিউব)। সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে অনেক পর্নোগ্রাফি থাকে যা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তারপরও এগুলো চোখে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এআর/জেডএস