হানি ট্র্যাপ : মুখ খুলতে কেন এত ভয়?
প্রথমে ফেসবুকে বন্ধুত্ব ও কথোপকথন, তারপর ভিডিও কলে ঘনিষ্ঠ আলাপচারিতা। সেই আলাপচারিতার ভিডিও চিত্র সম্পাদনা করে নানাভাবে প্রতারণা এবং দীর্ঘমেয়াদে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া— ধারাবাহিক এ কর্মযজ্ঞ চালান সুন্দরী নারীরা। তাদের এমন প্রলোভনের শিকার হন ধনাঢ্য ও খ্যাতনামা ব্যক্তিরা। ঘটনার প্রকৃতি বলে, এটা অনেকটা ‘হানি ট্র্যাপ’-এর মতো। অতীতে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে ‘হানি ট্র্যাপ’ (Honey Trap) বা সুন্দরী নারীদের দিয়ে ফাঁদ তৈরি করা হতো।
বিশ্বে এমন অপরাধের ঘটনা দিনদিন বেড়ে চলেছে। পাশের দেশ ভারতে এমন প্রতারণার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশে সম্পূর্ণ ভিন্নমাত্রা পেয়েছে এ অপরাধ। মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে ভারতীয় সুন্দরী তরুণীরা বাংলাদেশিদের এ ‘মধু ফাঁদে’ ফেলছেন। দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, স্বনামধন্য সাংবাদিক ও সরকারি কর্মকর্তারা এ ফাঁদে পা দিয়ে খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে টাকার অঙ্ক কোটি ছুঁয়েছে।
বিজ্ঞাপন
যৌনতা বা শারীরিক সম্পর্কের প্রলোভন দেখিয়ে ‘হানি ট্র্যাপে’র মতো প্রতারণার ফাঁদে পা দেওয়া কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা হয়েছে ঢাকা পোস্টের। কীভাবে তারা এ ফাঁদে পা রাখেন সে বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। হানি ট্র্যাপ থেকে বাঁচার উপায় এবং প্রতিকার নিয়ে কথা বলেছেন বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা। দুই পর্বের বিশেষ আয়োজনের আজ থাকছে শেষটি।
ভুয়া ই-মেইলে এভাবে হুমকি দেওয়া হয়— পর্নোভিডিও দেখে তুমি কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছ তা আমি রেকর্ড করেছি। ওই পর্নোভিডিও এবং তা দেখে তোমার প্রতিক্রিয়ার ভিডিও আমি একসঙ্গে কম্পাইল করে একটি ভিডিও ক্লিপ তৈরি করে রেখেছি। আমি জানি তোমার এসব ভিডিও গোপন রাখার জন্য ২৯০০ মার্কিন ডলার তোমার কাছে অনেক কম। আমি চাই, তুমি আমার নামে ২৯০০ ডলারের সমতুল্য বিট কয়েন কিনো। আমি জানি, তুমি ই-মেইলটি পড়েছ। তোমার কাছে মাত্র এক দিন সময় আছে। এ সময়ের মধ্যে আমার অ্যাকাউন্টে বিট কয়েন পাই তাহলে ওই ভিডিও মুছে দেব। যদি না পাই তাহলে তোমার পরিবারের ১৩ জনের কাছে এ ভিডিও চলে যাবে। এ অফার নন-নেগোশিয়েবল
ঢাকা পোস্টের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে মূলত দুটি উপায়ে হানি ট্র্যাপের মাধ্যমে সমাজে প্রতিষ্ঠিতদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একটি চক্র বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চল এবং ভারতের প্রতারক চক্রের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। অপর অংশটি সম্পূর্ণভাবে পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশি প্রতারক চক্রের মাধ্যমে। যৌনতা ও শারীরিক সম্পর্কের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আদায় তাদের কাজ হলেও একপক্ষের সঙ্গে অপরপক্ষের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
আরও পড়ুন >> হানি ট্র্যাপ : ভারতে বসে বাংলাদেশে প্রেমের ফাঁদ
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশি প্রতারক চক্রে আনুমানিক ৩০-৩৫ জন সদস্য রয়েছেন। তাদের মধ্যে ছয়/সাতজন তরুণী ও মধ্যবয়স্ক নারী। এ চক্রের নারী সদস্যরা রাজধানীর নাইট ক্লাব, তারকা হোটেলের বার ও নামিদামি ক্লাবগুলোতে যাতায়াত করেন। সাধারণত এসব জায়গায় বিত্তশালীরা যান। তরুণীরা বিত্তশালী ও বিবাহিতদের টার্গেট করেন। কারণ, তারা তাদের সামাজিক মর্যাদা রক্ষার্থে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতেও দ্বিধাবোধ করেন না।
হানি ট্র্যাপ নিয়ে কাজ করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করে জানান, তরুণীরা বেশ কয়েকদিন ধরে বিত্তশালীদের টার্গেট করেন। এরপর তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলেন, মদ খান। অনেক সময় পৃথক রুমে সময় কাটান। সম্পর্কের দুই/তিন সপ্তাহ পার না হতেই তরুণীরা ওই ব্যক্তিকে একসঙ্গে রাত কাটানোর প্রস্তাব দেন। রাত কাটানোর জন্য ফার্মগেট, মতিঝিল, পল্টন ও নবাবপুর এলাকার নিম্নমানের হোটেল বেছে নেন তারা।
ওই ব্যক্তিকে নিয়ে তরুণী যখন হোটেলে যান তখনই সেখানে হানা দেন কথিত ডিবি অফিসার, সাংবাদিক কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট। অস্ত্রের মুখে তাদের দিয়ে জোর করে নগ্ন ছবি তোলা হয়, ভিডিও ধারণ করা হয়। এরপর বারবার সেই ভিডিও দেখিয়ে বিত্তশালী ওই ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল করেন চক্রের সদস্যরা।
দেশের হানি ট্র্যাপ চক্রটি নিয়ে বিস্তরভাবে কাজ করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এখন পর্যন্ত তারা এমন প্রতারণার অভিযোগে দুই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযান চলছে চক্রের বাকি সদস্যদের ধরার জন্য। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেকেই পরিচয় বদলে সরকারি কর্মকর্তাদের ব্ল্যাকমেইল করেন। আমরা এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত অনেককে গ্রেপ্তার করেছি। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। এসব ঘটনায় আর কাউকে পেলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
সরকারি কর্মকর্তাদের টার্গেট করার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘প্রতারকদের ধারণা সরকারি কর্মকর্তাদের এ ধরনের কেলেঙ্কারির ঘটনা বাইরে এলে তাদের চাকরি হারানোর সম্ভাবনা থাকে। চাকরি হারানোর ভয় থেকে তাদের কাছে যা চাওয়া হয় তা তারা দিয়ে দেন।’
চক্রের সদস্যদের আনাগোনা যেখানে
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাছে আসা মৌখিক ও লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ চক্রের সদস্যদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ করা গেছে রাজধানীর দ্য ওয়েস্টিন ঢাকা হোটেল, রিনাইস্যান্স হোটেল, হোটেল সেরিনা, উত্তরা ক্লাব ও লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল ক্লাবের মতো কিছু সংরক্ষিত জায়গায়। সেখানে গিয়ে তরুণীদের সঙ্গে পরিচিত হন ভুক্তভোগীরা।
এছাড়া এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা পুলিশকে জানান, তারা (তরুণীরা) পাঁচ তারকা হোটেল বা ক্লাবে গিয়ে উচ্চবিত্তদের সঙ্গে সম্পর্ক করেন। অনেক সময় তারা নিজের পকেট থেকে টার্গেট করা ব্যক্তিকে মদ কিংবা অন্য খাবারের বিল পরিশোধ করেন। যাতে দ্রুত তাদের সান্নিধ্য পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন >> ব্লাকমেইল করে বিয়ে : ব্যবসায়ীর বাড়ি-গাড়ি সবই এখন স্বর্ণার
গ্রেপ্তার ও পুলিশি তদন্তের ভিত্তিতে জানা গেছে, দেশীয় চক্রের অধিকাংশ সদস্য রাজধানী ঢাকায় থাকেন না। তারা ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে হোটেল বা বারে সময় কাটিয়ে আবার ফিরে যান। সাভার, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ চক্রের কিছু সদস্য কেরানীগঞ্জের দিকে থাকেন বলেও জানা গেছে। তবে, তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
মডেল মাহিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানায়, যুক্তরাজ্যের একটি আইটি ফার্মে কর্মরত হিসেবে পরিচয় দিতেন তিনি। পাশাপাশি ফেসবুকে নিজের আবেদনময়ী ছবি ও টিকটকে ভিডিও পোস্ট করতেন। উচ্চবিত্তদের টার্গেট করে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে ফেলতেন প্রেমের জালে। পরে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও, অডিও ও ভিডিওতে হওয়া কথোপকথন রেকর্ড করে ব্লাকমেইল করে হাতিয়ে নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা
হানি ট্র্যাপের ঘটনায় ২০২২ সালের অক্টোবরে ঢাকার দারুস সালাম থানায় দায়ের করা এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মো. খোকন আকন্দ ও বিলকিস নামের এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল হক বলেন, এ দম্পতি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে শীর্ষ ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন। এরপর বিলকিস বিভিন্ন পরিচয়ে কল বা মেসেজ দিয়ে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। একটু ঘনিষ্ঠ হলে অসামাজিক কাজের উদ্দেশ্যে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে যান। সেখানে হঠাৎ উপস্থিত হন খোকন। নিজেকে সাংবাদিক কিংবা পুলিশ পরিচয় দেওয়া খোকন নির্জন কক্ষে তাদের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। সেই ছবি ও ভিডিও পরিবারের কাছে অথবা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেন।
তানজিনা আক্তার ইভা (মাহি)। ৩৪ বছরের এ যুবতীকে বাংলাদেশে হানি ট্র্যাপে ফেলা অপরাধী চক্রের অন্যতম হোতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই যুবতী নিজেকে মডেল মাহি নামে পরিচয় দেন।
মাহিকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার স্বামী মাসুম বিল্লাহ ফারদিনকেও (রাজু) গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর পুলিশ জানতে পারে তারাও একইভাবে ব্ল্যাকমেইল করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে মাহি জানায়, নিজের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পেজে তিনি নিজেকে ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেল পাস করে যুক্তরাজ্যের একটি আইটি ফার্মে কর্মরত হিসেবে পরিচয় দিতেন। পাশাপাশি ফেসবুকে নিজের আবেদনময়ী ছবি ও টিকটকে ভিডিও পোস্ট করতেন। উচ্চবিত্তদের টার্গেট করে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে ফেলতেন প্রেমের জালে। পরে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও, অডিও ও ভিডিওতে হওয়া কথোপকথন রেকর্ড করে ব্লাকমেইল করে হাতিয়ে নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা।
এককালীন টাকা নেয় বাংলাদেশি চক্র, ভারতীয়রা একাধিকবার
দেশীয় চক্রের প্রতারণার ফাঁদে পড়া চার ভুক্তভোগী (ইচ্ছা করে পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে), আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশের চক্রটি হানি ট্র্যাপে ফেলে একবারে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে। টাকা আদায়ের পর ভুক্তভোগীকে তারা আর কোনোভাবে বিরক্ত করে না। তারা সর্বনিম্ন ২০ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ পর্যন্ত টাকা চেয়ে থাকে। টাকা আদায় করে বিকাশ কিংবা নগদ অ্যাপের মাধ্যমে। এছাড়া অনেক সময় চক্রের তরুণীরা অজ্ঞাত স্থানে ডেকে নগদে টাকা আদায় করে থাকে।
আরও পড়ুন >> সার্ভেয়ারের চাকরি নাকি সম্পদ গড়ার পরশ পাথর!
অন্যদিকে, ভারতীয় চক্রটি ২০ লাখ থেকে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত দাবি করে থাকে। একবারে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত আদায়ও করেছে তারা। তবে, ধাপে ধাপে দীর্ঘমেয়াদে টাকা আদায় করে চক্রটি। তারাও বিকাশ ও নগদ অ্যাপের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে।
ভারতীয় চক্রের হাতে প্রতারণার শিকার এক ভুক্তভোগী ঢাকা পোস্টকে জানান, তারা ৭০ লাখ টাকা চেয়েছিল। তিনি ৩০ লাখ টাকায় তাদের রাজি করান এবং সমুদয় টাকা পরিশোধও করেন। কিন্তু দুই মাস পর ওই প্রতারক চক্র আবারও তাকে নগ্ন ভিডিও পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আরও আট লাখ টাকা বিকাশের মাধ্যমে দেন তিনি।
কেন মুখ খুলছেন না কেউ
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত হানি ট্র্যাপের মতো কতটি ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য এবং এ সংক্রান্ত কোনো গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ পায়নি। তবে, বাংলাদেশের সাইবার অপরাধের প্রবণতা নিয়ে চলতি বছর (২০২৩ সাল) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ার্নেস ফাউন্ডেশন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে নতুন ধরনের সাইবার অপরাধের মাত্রা বেড়েছে ২৮১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। দেশে যারা সাইবার ক্রাইমের শিকার হয়েছেন তাদের ১৫.৪৭ শতাংশকে অনলাইনে বার্তা পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইলসহ নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৯.১২ শতাংশ ভুক্তভোগীকে পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে হয়রানি করা হয়েছে।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, সাইবার অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীদের পুলিশের সহায়তা চেতে চরম অনীহা। ২০১৮ সালের জরিপে যেখানে অভিযোগকারীর শতকরা হার ছিল ৬১ শতাংশ, ২০২৩ সালে এসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশে। পুলিশের কাছে না যাওয়ার কারণ হিসেবে ‘সামাজিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা’র কথা বলেছেন অনেকে।
কেন তারা পুলিশি সহায়তা নিচ্ছেন না— জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ধরনের ব্ল্যাকমেইল করার ক্ষেত্রে প্রতারকরা ব্যক্তির আর্থিক ও সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করেন। তাদের যেহেতু টাকা দেওয়ার সামর্থ্য আছে এবং সামাজিক মর্যাদা রক্ষার চাপ থাকে, এ কারণে সহজেই তারা প্রতারকদের দাবি করা টাকা দিয়ে দেন।
আরও পড়ুন >> কিং মুশতাক ও রানি সিনথিয়া উপাখ্যানে ‘বিব্রত’ আইডিয়াল
“মর্যাদাসম্পন্ন ও ভুক্তভোগী মানুষগুলো মনে করেন যে, আইনি ব্যবস্থা নিলে বা পুলিশের কাছে গেলে তার সংবেদনশীল বিষয়গুলো জানাজানি হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় তথ্যগুলো গণমাধ্যমে চলে আসতে পারে। এতে তার সামাজিক অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। এসব ভয়ে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যেতে চান না। সহজ উপায় হিসেবে তারা ‘অর্থ দিয়ে প্রতারক চক্রকে ম্যানেজ করাই উত্তম’ হিসেবে বিবেচনা করেন। এটা কিন্তু ঠিক নয়। যদি কেউ প্রতারকদের দিনের পর দিন টাকা দিতেই থাকেন তাহলে তারা (প্রতারক চক্র) একই অপরাধ বারবার করতে উদ্বুদ্ধ হবেন। ফলে ভুক্তভোগী মানসিক ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।”
সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ার্নেস ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ এ প্রসঙ্গে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘অনেকের ধারণা, থানা পুলিশের কাছে জিডি বা মামলা করতে গেলে তাদের হেয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তারা ভোগান্তিতে পড়তে পারেন অথবা নানা কারণে বিব্রত হতে পারেন। পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থার অভাব তো আছেই। সবমিলিয়ে এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নেওয়াটা বাড়তি ঝামেলা মনে করেন অনেকে।’
সংস্থাটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা আইনের আশ্রয় নিতে থানা-পুলিশে কাছে যান তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই সন্তুষ্ট নন। এ পরিস্থিতির উন্নতির জন্য রাষ্ট্রকেই উদ্যোগ নিতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং আইনের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে– বলেন কাজী মুস্তাফিজ।
হানি ট্র্যাপের শিকার হলে কী করবেন
হানি ট্র্যাপের মতো ঘটনা ঘটলে ভয় না পেয়ে পুলিশের সাইবার ইউনিটের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি অপরিচিতদের সঙ্গে একান্ত আলাপ বা ভিডিও কল করা যাবে না। এছাড়া আইনি সহায়তা হিসেবে একজন ভুক্তভোগী অপরাধীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দিতে পারেন।
আরও পড়ুন >> প্রতারণার জাল ফেলে আত্মগোপনে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা
এ বিষয়ে সিটিটিসির এডিসি নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘সবার প্রতি অনুরোধ, অপরিচিত আইডি থেকে কোনো এসএমএস বা মেসেজ আসলে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব করার দরকার নেই। বন্ধুত্ব করলেও সেক্ষেত্রে সাবধানে কথা বলতে হবে। কারও প্রতি বিশ্বাস করে গোপন চ্যাট বা ভিডিও কলে কথা বলা যুক্তিযুক্ত নয়। কারও সঙ্গে যদি এমন ঘটনা ঘটেই যায়, তাহলে কোনোভাবে টাকা দেওয়া যাবে না। টাকা দিলে প্রতারকরা বুঝবেন ওই ব্যক্তির কাছে টাকা আছে। তখন তারা বারবার ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করবেন। কেউ যদি এ ধরনের ঘটনায় ভুক্তভোগী হয়ে থাকেন অবশ্যই তাকে সাইবার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন এ প্রসঙ্গে ঢাকা পোস্টকে বলেন, যারা ব্ল্যাকমেইলের শিকার হচ্ছেন তাদের প্রথমত দায়িত্ব হচ্ছে, বিষয়গুলো চেপে না গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া। কারণ, ব্ল্যাকমেইলারদের কথায় একবার সায় দিলে তারা বারবার ব্ল্যাকমেইল করতে পারেন। তার (ভুক্তভোগী) যদি তাৎক্ষণিক সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তাহলে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশি সাহায্য নিতে পারেন।
“কেউ যদি এমন ব্ল্যাকমেইলের শিকার হন, টাকাও দিয়ে দেন, তাহলে তারা থানায় গিয়ে মামলা করতে পারবেন। ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ৩৮৩ ধারা অনুযায়ী, ‘বল প্রয়োগের মাধ্যমে সম্পত্তি আদায়’ (ব্ল্যাকমেইলিং) অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ধারায় তারা মামলা করতে পারেন। এছাড়া পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারায় মামলা করা যেতে পারে। যেহেতু এ ধরনের মামলার তদন্তে টেকনিক্যাল সাপোর্ট প্রয়োজন, তাই যে কোনো ভিক্টিম মামলা করার পর মামলার কপি নিয়ে সাইবার পুলিশের কাছে যেতে পারেন। তাহলে তারা অপরাধীকে শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করাতে পারবেন।”
হানি ট্র্যাপের নামে ভুয়া মেইল, প্রতারণার নতুন কৌশল
হানি ট্র্যাপের মাধ্যমে বর্তমানে ভুয়া ই-মেইল বার্তায় ব্লাকমেইল করার হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করছে একটি প্রতারক চক্র। ঢাকা পোস্টের অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশের অনেকেই নিষিদ্ধ পর্নোসাইট বা লাইভ ভিডিও কলিং অ্যাপে নিয়মিত অপরিচিত তরুণীদের সঙ্গে আপত্তিকর ভঙ্গিতে কথা বলছেন। একটি চক্র সেসব ওয়েবসাইট থেকে বাংলাদেশিদের ই-মেইল আইডি সংগ্রহ করে তাদের ই-মেইল পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইলের ভয় দেখায় এবং চাঁদা দাবি করে।
আরও পড়ুন >> বিদেশি নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে বাড়ছে অপরাধ
ঢাকা পোস্টের হাতে এ ধরনের একটি ই-মেইল এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, “প্রিয়, আমি জানি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোমার ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড *** (কাছাকাছি), এবং তুমি ইতিমধ্যে বুঝে গেছ কেন তুমি ই-মেইলটি পেয়েছ? তুমি যে পর্নোসাইটে গিয়ে ভিডিও দেখছিলা সেখানে আমি একটি ম্যালওয়্যার স্থাপন করেছিলাম এবং তোমার মোবাইলের ফ্রন্ট ক্যামেরা, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের ফোন নম্বর ও ফেসবুক আইডির তথ্য আমি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছি।
পর্নোভিডিও দেখে তুমি কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছ তা আমি রেকর্ড করেছি। ওই পর্নোভিডিও এবং তা দেখে তোমার প্রতিক্রিয়ার ভিডিও আমি একসঙ্গে কম্পাইল করে একটি ভিডিও ক্লিপ তৈরি করে রেখেছি। আমি জানি, তোমার এসব ভিডিও গোপন রাখার জন্য ২৯০০ মার্কিন ডলার তোমার কাছে অনেক কম। আমি চাই, তুমি আমার নামে ২৯০০ ডলারের সমতুল্য বিট কয়েন কিনো। (বিট কয়েন কিনে দেওয়ার অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত লিংক)।
আমি জানি, তুমি ই-মেইলটি পড়েছ। তোমার কাছে মাত্র এক দিন সময় আছে। এ সময়ের মধ্যে আমার অ্যাকাউন্টে বিট কয়েন পাই তাহলে ওই ভিডিও মুছে দেব। যদি না পাই তাহলে তোমার পরিবারের ১৩ জনের কাছে এ ভিডিও চলে যাবে। এ অফার নন-নেগোশিয়েবল এবং আমার এ ই-মেইলের রিপ্লাই দিয়ে তুমি নিজের সময় নষ্ট করো না।”
এ ধরনের অপরাধের বিষয়ে সিআইডি ও ডিবির সাইবার দলের সদস্যরা জানান, অনেকেই এমন ই-মেইল পেয়ে থাকেন। তবে, এটি নিছকই ভুয়া ই-মেইল। একটি প্রতারক চক্র নানা জায়গা থেকে নাগরিকদের ই-মেইল সংগ্রহ করে এবং এ ধরনের মেইল পাঠায়। একসঙ্গে প্রায় হাজারজনকে এ মেইল পাঠায় তারা। যারা সচরাচর নানা পর্নোসাইট ভিজিট করেন, তারা অনেক সময় মেইল পেয়ে ঘাবড়ে যান। তবে, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এ ধরনের যত ঘটনা ঘটেছে সবগুলো ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
বিশ্বে যেভাবে হানি ট্র্যাপের শুরু
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে হানি ট্র্যাপের ঘটনা ঘটে আসছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘মাতাহারিকাণ্ড’। মাতাহারির আসল নাম মারগারেটা গিরট্রুইডা ম্যাকলিয়ড। এ ডাচ তরুণী যৌনবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জার্মান গুপ্তচর হিসেবে চিহ্নিত করা হয় তাকে। তদন্তের পর জানা যায়, তিনি স্পেননিবাসী এক জার্মান রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে টাকা নিতেন। তার কাছে নিয়মিত তথ্যও ফাঁস করতেন। ১৯১৭ সালে ফ্রান্সে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
আরও পড়ুন >> স্বপ্নের দুবাইয়ে দুঃস্বপ্নের রাত পার করছেন বাংলাদেশি তরুণীরা
১৯৫৯ সালে এমন একটি ঘটনা বেশ আলোচিত হয়। যৌনতা ও শারীরিক সম্পর্কের প্রলোভন দেখিয়ে কাজ হাসিল করে নেওয়ার ফাঁদে পা দেন ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ সুকর্ন। দেশটির দ্বিসাপ্তাহিক পত্রিকা ইন্দোনেশিয়া এক্সপার্ট জানায়, ১৯৫৯ সালে দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট আহমেদ সুকর্ন সোভিয়েত ইউনিয়ন সফরে যান। সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (কেজিবি) তার সঙ্গে এক রাশিয়ান তরুণীর অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা চালায়। এর অংশ হিসেবে তাকে হানি ট্র্যাপে ফেলানো হয়। একপর্যায়ে ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেসিডেন্টের শারীরিক সম্পর্ক হয় এবং সফরের মাঝামাঝি সময় কেজিবি প্রেসিডেন্টকে একটি প্রাইভেট সিনেমা হলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে নিজের ভিডিও দেখানো হয় এবং ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করা হয়।
১৯৫৯-এর আগে বিশ্বে এত বড় হানি ট্র্যাপের কথা শোনা যায়নি। পশ্চিমা দেশগুলোতে সঙ্গী পাওয়া সহজ বিধায় এ ফাঁদ সেভাবে কাজ করে না। তবে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা- আইএসআই (ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স) এটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য ভারতীয় সেনাশিবির থেকে সংগ্রহ করেছে বলে বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে।
২০১৯ সালের দিকে প্রথমবারের মতো ভারতীয় সেনাসদস্যদের হানি ট্র্যাপে ফেলে আইএসআই। তারা ভারতীয় সেনাদের ফেসবুক, টুইটারসহ সোশ্যাল মিডিয়ার নানা অ্যাকাউন্ট সংগ্রহ করে সুন্দরী তরুণী দিয়ে হানি ট্র্যাপে ফেলার চেষ্টা করেন। ম্যাসেজিং, ভিডিও কলিংসহ ডেটিং অ্যাপ টিন্ডারের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে তারা দেখা করতেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আইএসআই-এর কাছে চলে যায়। এরপর ভারতীয় আর্মি হানি ট্র্যাপের বিষয়টি টের পায়। তারা সেনাসদস্যদের জন্য ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিন্ডারসহ ৮৯টি অ্যাপ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে
আরও পড়ুন >> ‘জেনে, না বুঝে’ সাইবার অপরাধে কিশোর-তরুণরা
ভারতের অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিষয়ক পত্রিকা বিজনেস ইনসাইডার বলছে, ২০১৯ সালের দিকে প্রথমবারের মতো ভারতীয় সেনাসদস্যদের হানি ট্র্যাপে ফেলে আইএসআই। তারা ভারতীয় সেনাদের ফেসবুক, টুইটারসহ সোশ্যাল মিডিয়ার নানা অ্যাকাউন্ট সংগ্রহ করে সুন্দরী তরুণী দিয়ে হানি ট্র্যাপে ফেলার চেষ্টা করেন। ম্যাসেজিং, ভিডিও কলিংসহ ডেটিং অ্যাপ টিন্ডারের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে তারা দেখা করতেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আইএসআই-এর কাছে চলে যায়। এরপর ভারতীয় আর্মি হানি ট্র্যাপের বিষয়টি টের পায়। তারা সেনাসদস্যদের জন্য ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিন্ডারসহ ৮৯টি অ্যাপ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
বিজনেস ইনসাইডার জানায়, আইএসআই ভারতের প্রায় ৫০ সেনাসদস্যকে হানি ট্র্যাপে ফেলে। তাদের (আইএসআই) হয়ে তরুণীরা ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে চ্যাট করতেন, তাদের ছবি চাইতেন। একপর্যায়ে মেয়েরা সেনাদের কর্মযজ্ঞের ছবি চাইতেন। তাদের অস্ত্র, ট্যাংকের সঙ্গে সেলফি চাইতেন এবং সেসব তথ্য আইএসআইকে দিতেন। সেনাবাহিনীর গোপন তথ্য অন্যদের কাছে ফাঁসের জন্য ভারতীয় আর্মির দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
এআর/এমএআর/