চার ধাপে দেশের ৩০ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ
মন্ত্রী-সচিবদের সাবেক পিএসদের কাঁধেই সংসদ নির্বাচন!
সম্প্রতি চার ধাপে দেশের ৩০ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে সরকার। নিয়মানুযায়ী এসব কর্মকর্তা আগামী নির্বাচনে (জাতীয় সংসদ নির্বাচন) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এ তালিকায় আছেন মন্ত্রী-সচিবের একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আট কর্মকর্তা।
মন্ত্রী-সচিবের একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে তারা তাদের একান্ত অনুগত হবেন বলেই মনে করা হয়। তাদের হাতে যদি জাতীয় সংসদের মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের দায়িত্ব থাকে, তাহলে নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব— তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত ৬ জুলাই ১০ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জেলাগুলো হচ্ছে—ঢাকা, রাঙামাটি, বান্দরবান, টাঙ্গাইল, পাবনা, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ফেনী ও গাজীপুর। এর তিন দিন পর গত ৯ জুলাই আরও ১০ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। এদিন বরগুনা, যশোর, হবিগঞ্জ, বাগেরহাট, বরিশাল, ভোলা, নেত্রকোনা, পটুয়াখালী, সিলেট ও কুষ্টিয়ায় ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়।
মন্ত্রী-সচিবের পিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আট উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাকে ডিসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএস মু. আসাদুজ্জামানকে পাবনা, আইনমন্ত্রীর পিএস নূর কুতুবুল আলমকে পটুয়াখালী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর পিএস মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদারকে যশোর, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পিএস মো. গোলাম মওলাকে নওগাঁ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর পিএস খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমানকে কুমিল্লা, পানিসম্পদ উপমন্ত্রীর পিএস আরিফুজ্জামানকে ভোলা এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের পিএস কায়ছারুল ইসলামকে টাঙ্গাইলের ডিসি করা হয়েছে
গত ১০ জুলাই আট জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। জেলাগুলো হলো- মেহেরপুর, শেরপুর, জামালপুর, মুন্সীগঞ্জ, রংপুর, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গা। সর্বশেষ ১৩ জুলাই আরও দুই জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। জেলাগুলো হলো- নওগাঁ ও গাইবান্ধা।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন >> এটি শুধু পদযাত্রা নয়, জয়যাত্রা : মির্জা ফখরুল
এবার মন্ত্রী-সচিবের পিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আট উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাকে ডিসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএস মু. আসাদুজ্জামানকে পাবনা, আইনমন্ত্রীর পিএস নূর কুতুবুল আলমকে পটুয়াখালী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর পিএস মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদারকে যশোর, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পিএস মো. গোলাম মওলাকে নওগাঁ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর পিএস খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমানকে কুমিল্লা, পানিসম্পদ উপমন্ত্রীর পিএস আরিফুজ্জামানকে ভোলা এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের পিএস কায়ছারুল ইসলামকে টাঙ্গাইলের ডিসি করা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের পিএস শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিনকে বান্দরবানের ডিসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তরের মেয়র পদটি মন্ত্রীপদমর্যাদার। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এ সিটির মেয়র নির্বাচিত হন আতিকুল ইসলাম।
নির্বাচনে প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের পাশাপাশি মাঠ প্রশাসনকেও নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। বিশেষ করে ডিসিরা রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এজন্য এ পদে ক্ষমতাসীনরা নিজেদের অনুগত কর্মকর্তাদের দিয়ে নির্বাচনী মাঠ সাজান।
বিরোধী শিবির থেকে ইতোমধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচনী মাঠ সাজানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকায় একটি আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যে, পুলিশের ব্যাপক রদবদল, ব্যাপক পদোন্নতি, ৭৫০ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, পোস্টিং করা হয়েছে। কারণ, মাথার মধ্যে নির্বাচন।’
‘গতকালও দেখলাম, সচিবদের পরিবর্তন করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রশাসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাদের (আওয়ামী লীগ) একটাই উদ্দেশ্য যে, নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা তাদের মতো করে সবকিছু সাজিয়ে নিতে চায়।’
আরও পড়ুন >> যুক্তরাষ্ট্র আর ইইউ বিএনপিকে ‘ঘোড়ার ডিম’ দিয়েছে : কাদের
জাতীয় নির্বাচনে মহানগরগুলো বাদে জেলাগুলোতে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব ডিসিরাই পালন করেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ও আচরণবিধি অনুযায়ী কাজ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডিসি একটি বড় পদ। কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা সরকারপন্থি হিসেবে পরিচিত, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারাই এ পদে নিয়োগ পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকেন।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, কেন্দ্রীয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করেন ডিসিরা। তাই এ পদে সরকারপন্থি না হলে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয় না। শুধু বর্তমান সরকার নয়, সব সরকারের আমলেই যোগ্যতার পাশাপাশি সরকারপন্থি হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের এ পদে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চলে।
জানা গেছে, এবার ডিসি পদে বিসিএস- ২৪, ২৫ ও ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তারাই নির্বাচনকালে দায়িত্ব পালন করবেন।
হঠাৎ ডিসি পদে মন্ত্রী-সচিবদের সাবেক পিএসদের নিয়োগের পেছনে ‘রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নেই’ বলে দাবি করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে এসব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখানে অন্য কোনো বিষয় বা উদ্দেশ্য নেই।’
পুলিশ সুপার পদেও ব্যাপক রদবদল
এদিকে, জেলা প্রশাসক ছাড়াও পুলিশ সুপার (এসপি) পদেও ব্যাপক রদবদল আনা হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৩ জুন দেশের ১২ জেলায় এসপি পদে রদবদল আনে সরকার। জেলাগুলো হলো- নরসিংদী, নীলফামারী, নওগাঁ, শেরপুর, চাঁদপুর, গোপালগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, কুষ্টিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, খুলনা, পিরোজপুর, ভোলা ও শরীয়তপুর।
আরও পড়ুন >> সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে, মনে করে বিএনপি
এদিন নীলফামারীর এসপি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে নরসিংদীতে, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার মো. গোলাম সবুরকে নীলফামারীতে, বিশেষ শাখার (এসবি) মোনালিসা বেগমকে শেরপুরে, ভোলার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে চাঁদপুরে এবং ডিএমপির উপকমিশনার আল-বেলী আফিফাকে গোপালগঞ্জে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এছাড়া অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) মোহাম্মদ আসলাম খানকে মুন্সিগঞ্জে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের এসপি এ এইচ এম আবদুর রকিবকে কুষ্টিয়ায়, পুলিশ অধিদপ্তরের মো. ছাইদুল হাসানকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে, পিরোজপুরের এসপি মোহাম্মদ সাঈদুর রহমানকে খুলনায়, স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রোটেকশন ব্যাটালিয়ন-১ এর (এসপিবিএন) মোহাম্মদ শফিউর রহমানকে পিরোজপুরে, এটিইউর মো. মাহিদুজ্জামানকে ভোলায় এবং হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর অঞ্চলের মো. মাহাবুবুল আলমকে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সর্বশেষ গত ১৭ জুলাই আরও ১১ জেলায় নতুন পুলিশ সুপার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) মো. আজিম-উল-আহসানকে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার, পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মো. মনজুর রহমানকে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার, ট্যুরিস্ট পুলিশের সৈকত শাহীনকে বান্দরবানের পুলিশ সুপার, বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলামকে নাটোরের পুলিশ সুপার, নাটোরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমানকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডির পুলিশ সুপার মুক্তা ধরকে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার করা হয়েছে।
এছাড়া ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) উত্তম প্রসাদ পাঠককে ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদকে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার, ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আবুল হাসনাত খানকে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার, ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদকে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার এবং শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামানকে জামালপুরের পুলিশ সুপার করা হয়েছে।
নির্বাচনের আগে প্রশাসনের শীর্ষপর্যায়ে এমন রদবদলের বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমরা অতীতেও এমনটি দেখেছি যে ক্ষমতাসীনরা নির্বাচনের আগে নির্বাচনী মাঠ সাজায়। এটা স্বাভাবিক, তারা নির্বাচনে জিততে চায়।’
‘কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে যে, এখন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এসব ব্যক্তিরা চরমভাবে দলীয় হয়ে গেছেন। শুধু তা-ই নয়, নির্বাচনটা নির্বাচন কমিশনের হাত থেকে এসব ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। ফলে এটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য পর্বত-সমান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
আরও পড়ুন >> নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নে গুরুত্বের তাগিদ
‘নির্বাচনের দিন তো দূরের বিষয়, এখনই ভোট চুরি চলছে’— মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এখনই ডিসিদের, পুলিশ অফিসারদের পোস্টিং হচ্ছে। সরকার আবারও ভোট চুরি করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে নিজেদের মতো করে প্রশাসনকে সাজাচ্ছে। কিন্তু এবার জনগণকে আর ধোঁকা দেওয়া যাবে না। আজ দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ। তারা এ সরকারের পতনের দাবিতে রাস্তায় নামছে।’
সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘যদি প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকে, তাহলে পক্ষ নেওয়ার প্রশ্নই আসবে না। যারা রিটার্নিং কর্মকর্তা হবেন তারা যদি নিরপেক্ষ থাকেন, তাহলে অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে না।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সময় থেকে প্রশাসনে দলীয় আনুগত্যের বিষয়টি শুরু হয়েছে। প্রশাসন যদি দলীয় আনুগত্য অব্যাহত রাখে তাহলে অবশ্যই নির্বাচনের ওপর প্রভাব পড়বে। এখন প্রশ্ন হলো কোন ধরনের প্রভাব পড়বে? এসব জেলা প্রশাসকরা রিটার্নিং কর্মকর্তা হলে কিছুটা প্রভাব পড়বেই।’
‘প্রশাসনের দলীয় মনোভাব যদি খুবই প্রকট মনে হয়, নির্বাচন কমিশন তাদের মনোভাব পরিবর্তন করার যদি উদ্যোগ নেয়, তাহলে প্রভাব পড়ার বিষয়ে শঙ্কামুক্ত হওয়া যায়। এখন কথা হচ্ছে নির্বাচন কমিশন সেটা করবে কি না? সেটা করতে গেলে হোমওয়ার্ক বা তথ্য-উপাত্তের প্রয়োজন, পাশাপাশি সরকারের সহযোগিতাও প্রয়োজন।’
নির্বাচনে পুলিশ ও বিজিবির তুলনায় একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা খুবই অল্প পরিমাণ প্রভাব বিস্তার করতে পারে— উল্লেখ করে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তাকে প্রভাব বিস্তার করতে হলে, প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে তার (রিটার্নিং কর্মকর্তা) প্রভাব কার্যকর করতে হবে। এক্ষেত্রে এটা করা কঠিন। যেটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সহজ বিষয়।’
নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা প্রয়োগ করে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করাতে পারবে কি না— এমন প্রশ্নে সাবেক এই ইসি বলেন, ‘আমি খোলামেলাভাবেই বলছি, অনেকে বলে নির্বাচন কমিশনের অসীম ক্ষমতা আছে। ক্ষমতা অবশ্যই আছে, তবে এটা কেতাবি বা পুস্তকের কথা। পুস্তকে কিন্তু অবাধ ক্ষমতা দেওয়া আছে। কিন্তু সাবেক একজন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে বলছি, আসলে নির্বাচন কমিশনের কোনো ক্ষমতাই নাই। কারণ, নির্বাচনে প্রশাসন নিরপেক্ষ না থাকলে, নির্বাচন কমিশন তো তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসনকেই রিপোর্ট দেবে। এখন জনপ্রশাসন রিপোর্ট গ্রহণ করবে কি করবে না, অথবা ব্যবস্থা নেবেন কি নেবে না— এটা তো সরকারের ওপর নির্ভর করবে।’
‘আমরা কমিশনে থাকতে সংসদ নির্বাচনে শত শত নমিনেশন বাতিল করেছিলাম। ওই সময় যেগুলো আমরা বাতিল করিনি সেগুলো কোর্ট বাতিল করেছে। আর আমরা যেগুলো বাতিল করেছিলাম সেগুলো কোর্ট বৈধ করেছে। আর আপনি বলছেন নির্বাচন কমিশন স্বাধীন? নির্বাচন কমিশনের অবাধ ক্ষমতা আমি বিশ্বাস করব না।’
সংবাদটি তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাইদ রিপন ও নিজস্ব প্রতিবেদক আদিত্য রিমন।
এসএইচআর/এমএআর/