পুলিশ-কাউন্সিলরের ‘সৃজনশীল’ চাঁদাবাজি!
‘ম’ তে মাসিক?
ব্যাটারিচালিত রিকশার পেছনে লাগানো আছে একটি স্টিকার। ফেব্রুয়ারি মাসের স্টিকারে লেখা অমর একুশে ‘ম’, মার্চে স্বাধীনতা দিবস ‘ম’, এপ্রিলে শুভ নববর্ষ ‘ম’, জুনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ‘ম’, সর্বশেষ জুলাই মাসে ছিল পদ্মা সেতু ‘ম’।
ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচলের অনুমতি নেই। এর মধ্যে প্রতিটা রিকশার পেছনে থাকা স্টিকার কীসের আবার ওই স্টিকারে ‘ম’ লেখা কেন তা জানতে অনুসন্ধান চালায় ঢাকা পোস্ট। মেলে ‘সরষের মধ্যেই ভূত’ থাকার তথ্য।
বিজ্ঞাপন
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত মাসিক চাঁদার ভিত্তিতে চলছে এসব বাহন। এজন্য ‘ম’ লেখা হয়েছে। অর্থাৎ ম-তে মাসিক! চাঁদা নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীরা। চাঁদা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘ম’ সম্বলিত একটি স্টিকার সেঁটে দেওয়া হচ্ছে রিকশায়। সেই স্টিকার দেখলেই কোনো ট্রাফিক পুলিশ সদস্য তা আটকান না। অন্যদিকে, স্টিকার না থাকলে লাগানো হয় রেকার, পাঠিয়ে দেওয়া হয় ডাম্পিং স্টেশনে।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত মাসিক চাঁদার ভিত্তিতে চলছে এসব বাহন। এজন্য ‘ম’ লেখা হয়েছে। অর্থাৎ ম-তে মাসিক! চাঁদা নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীরা। চাঁদা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘ম’ সম্বলিত একটি স্টিকার সেঁটে দেওয়া হচ্ছে রিকশায়। সেই স্টিকার দেখলেই কোনো ট্রাফিক পুলিশ সদস্য তা আটকান না। অন্যদিকে, স্টিকার না থাকলে লাগানো হয় রেকার, পাঠিয়ে দেওয়া হয় ডাম্পিং স্টেশনে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বর্তমানে রাজধানীতে তিন লাখের বেশি ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করছে। সবগুলোই অবৈধ। চলাচলের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চাঁদাসহ বিভিন্ন মাসোহারা দিয়ে এগুলো চলছে দাপটের সঙ্গে।
সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ঢাকায় সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে প্যাডেলচালিত রিকশার লাইসেন্স দিয়েছিল সিটি করপোরেশন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি আবার নতুন করে প্যাডেলচালিত রিকশার লাইসেন্স দেওয়া শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
দক্ষিণ সিটির তথ্য অনুযায়ী, ডিএসসিসি এলাকায় প্রায় সাত লাখ প্যাডেলচালিত রিকশা চলাচল করছে। এর মধ্যে বর্তমানে অনুমোদিত দুই লাখ ১৩ হাজার রিকশা। অন্যদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় প্রায় পাঁচ লাখ রিকশা চলাচল করছে। এর মধ্যে অনুমোদিত প্রায় ২৮ হাজার।
সবমিলিয়ে বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ রিকশা চলাচল করছে রাজধানীতে। যার বড় একটি অংশ ব্যাটারিচালিত। এছাড়া পুরাতন প্যাডেলচালিত অনেক রিকশায় ব্যাটারি লাগিয়ে যান্ত্রিক করা হচ্ছে।
যেভাবে চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা
রাজধানীর মূল সড়কের চেয়ে অলিগলিতে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল বেশি। সুযোগ পেলে মূল সড়কেও দাপিয়ে বেড়ায় এসব রিকশা। রাজধানীর খিলগাঁও, মান্ডা, বাসাবো, মানিকনগর, রামপুরা, বাড্ডা, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, সবুজবাগ, শ্যামপুর, ডেমরা, মোহাম্মদপুর, বছিলা, উত্তরা, ভাটারা, দক্ষিণখান, উত্তরখান, ময়নারটেক, মিরপুর, পল্লবী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা বেশি।
এসব এলাকা ছাড়াও রাজধানীর প্রায় সর্বত্র ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল রয়েছে। ফলে নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকে আহত হচ্ছেন, প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কয়েক দফা অভিযান চালালেও থেমে নেই অবৈধ এসব বাহনের দৌরাত্ম্য।
আরও পড়ুন >> কিউআর কোড ছাড়া রিকশা চলতে দেবে না ডিএনসিসি
এলাকা ভেদে ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে পরিচালিত হচ্ছে অবৈধ এসব রিকশা। রাজধানীর যে ২০টি এলাকায় সবচেয়ে বেশি এসব বাহন চলাচল করছে তার মধ্যে ভাটারা এলাকা অন্যতম। এখানকার ১৩ জন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। তারা জানান, আগে এখানে একটি বিশেষ ধরনের স্টিকার বা টোকেন দেওয়া হতো। এজন্য লাইন ম্যানকে প্রতি মাসে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা দিতে হতো। মূলত এলাকার প্রভাবশালীদের মাধ্যমে থানা থেকে বিশেষ এ স্টিকার সংগ্রহ করা হতো। ওই স্টিকার লাগিয়ে নির্দিষ্ট মাসজুড়ে চালানো যেত অবৈধ এসব বাহন।
মাঝে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। তখন থেকে বিশেষ স্টিকার/টোকেন আর আর দেওয়া হচ্ছে না। এখন যে যার মতো করে রিকশা চালাচ্ছেন।
তবে রাজধানীর মুগদা ও মান্ডা এলাকায় এখনও প্রতি মাসে বিশেষ টোকেন বা স্টিকার লাগিয়ে চলাচল করতে দেখা যায় অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে। এখানে প্রতি রিকশার জন্য মাসে ১২০০ থেকে ২০০০ টাকা পরিশোধ করতে হয়। বিনিময়ে রিকশাগুলো নিরাপদে চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।
রাজধানীর মুগদা ও মান্ডা এলাকায় এখনও প্রতি মাসে বিশেষ টোকেন বা স্টিকার লাগিয়ে চলাচল করতে দেখা যায় অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে। এখানে প্রতি রিকশার জন্য মাসে ১২০০ থেকে ২০০০ টাকা পরিশোধ করতে হয়। বিনিময়ে রিকশাগুলো নিরাপদে চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর মুগদা ও মান্ডা এলাকা মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করে। মাসিক টোকেন মূল্যের হিসাব অনুযায়ী প্রতি রিকশায় সর্বনিম্ন খরচ ১৫০০ টাকা ধরলে মাস শেষে শুধু ওই এলাকা থেকেই ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় করছেন প্রভাবশালীরা।
কাদের দিতে হয় টোকেনের টাকা
কীভাবে স্টিকার বা টোকেন সংগ্রহ করা হয়— জানতে চাইলে মুগদার ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক এরশাদ আলী (ছদ্মনাম) ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখানে লাইন ম্যান আছেন। তাদের কাছেই টাকা দিতে হয়। টাকা দিলে তারা স্টিকার লাগিয়ে দেন। একটা স্টিকারের মেয়াদ থাকে এক মাস। এজন্য ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা দিতে হয়। অনেকে আবার গ্যারেজ থেকেই এ টাকা পরিশোধ করে স্টিকার নেন। স্টিকার না থাকলে গাড়ি ধরাসহ নানা সমস্যা করেন লাইন ম্যানরা। স্টিকার থাকলে কোনো সমস্যা হয় না। বড় রাস্তাতেও চলাচল করা যায়। কেউ ধরে না।
লাইন ম্যান কারা— জানতে চাইলে এরশাদ আলী বলেন, ‘সব যদি বলে দিই তাহলে তো রিকশা চালাতেই পারব না।’ তবে, দূর থেকে একজনকে দেখিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ওই যে, ওর কাছে যান। তিনি সব জানেন।’
মধ্যবয়সী এক যুবক তিনি। হাতে দুটি খাতা ও রিকশা গ্যারেজের কিছু নামসহ একটি কাগজ। পরিচয় গোপন করে তাকে বলা হয়, দুই-তিনটা ব্যাটারিচালিত রিকশা নামাতে চাই, এজন্য কী কী প্রক্রিয়া আছে বা কী করা লাগবে?
ওই লাইন ম্যান জানান, শুধু রিকশা কিনলেই হবে না, সেটা নামানোর জন্য প্রতি মাসে রোড খরচ দিতে হবে। সর্বনিম্ন ১৫০০ টাকা। টাকা দিলে একটা করে স্টিকার দেওয়া হবে। এর মেয়াদ মাসের ২৫ তারিখ থেকে পরের মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত। এ সময়ে কোনো থানা পুলিশ বা লাইন ম্যান রিকশা ধরবে না। সব ম্যানেজ করা আছে।
আরও পড়ুন >> রিকশা-ইজিবাইক বন্ধ করলে বেকার হবে এক কোটি মানুষ
টাকাটা কার কার পকেটে যাবে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিটি এলাকায় নেতারা (ক্ষমতাসীন দলের নেতারা) তাদের কর্মী বা লোক নির্ধারণ করে দেন। তারাই টাকা তোলেন। ওই টাকা দলীয় নেতা, স্থানীয় কাউন্সিলর, থানা-পুলিশ ও লাইন ম্যান সবার পকেটে যায়। আমরা যারা আছি তারা রাস্তাঘাট দেখাশোনা করি। কোনো সমস্যা হলে সমাধান করি। রিকশায় স্টিকার আছে কি না দেখি, না থাকলে সেই রিকশা চলতে দেওয়া হয় না। প্রতিটি গ্যারেজে আমরা যাই, খোঁজখবর নিই। কোন কোন রিকশায় স্টিকার আছে, আর কোনটিতে নেই— দেখার জন্য তো লোক প্রয়োজন। তাদের বেতন দিতে হয়। সবই আসে টোকেন/স্টিকারের টাকা থেকে।
রাজধানীর খিলগাঁও, মান্ডা, বাসাবো, মানিকনগর, রামপুরা, বাড্ডা, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, সবুজবাগ, শ্যামপুর, ডেমরা, মোহাম্মদপুর, বছিলা, উত্তরা, ভাটারা, দক্ষিণখান, উত্তরখান, ময়নারটেক, মিরপুর, পল্লবী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা বেশি। এসব এলাকা ছাড়াও রাজধানীর প্রায় সর্বত্র ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল রয়েছে। ফলে নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকে আহত হচ্ছেন, প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে
রিকশায় লাগানো এমন একটি স্টিকার/টোকেন ঢাকা পোস্টের সংগ্রহে আছে। সাধারণ চোখে এমন স্টিকার দেখে বোঝার উপায় নেই এটি আসলে কী কাজে ব্যবহৃত হয়। সংশ্লিষ্টরা ছাড়া এর তাৎপর্য বোঝা মুশকিল। এসব স্টিকার দিয়ে প্রতিটি এলাকা থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হচ্ছে।
২৫ মে থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেওয়া এমন একটি স্টিকারে দেখা গেছে, ‘৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২২’, সঙ্গে বড় করে কালো কালি দিয়ে লেখা ‘ম’। পাশেই সবুজ পৃথিবীর একটি লোগো। মূলত এগুলো হলো সাংকেতিক চিহ্ন। এ চিহ্নের মাধ্যমে লাইন ম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা বোঝেন ‘রিকশাটি অনুমোদিত’।
কীভাবে এ স্টিকার পাওয়া যায়— এমন প্রশ্নের জবাবে রিকশাচালক নাদের আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজধানীতে মূলত দুই ধরনের রিকশা চলে। এক, নিজস্ব মালিকানা; দুই, গ্যারেজ থেকে দিনচুক্তির ভিত্তিতে ভাড়া নেওয়া রিকশা। রিকশার মালিক যারা তারা লাইন ম্যানের কাছে টাকা দিয়ে স্টিকার সংগ্রহ করেন। যারা গ্যারেজমালিক তারা গ্যারেজ থেকে লাইন ম্যানের মাধ্যমে স্টিকার নেন। এ ক্ষেত্রে মালিক ও চালক, উভয় মিলেই স্টিকারের টাকা জোগাড় করেন। অনেক গ্যারেজমালিক নিজ খরচেই স্টিকার লাগিয়ে নেন, সেক্ষেত্রে রিকশার চালককে টাকা দিতে হয় না।
‘স্টিকার-বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রতি মাসে ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা আদায় করা হয়। এ টাকার ভাগ স্থানীয় নেতা, কাউন্সিলর ও পুলিশ পায় বলে অভিযোগ।’ আপনার মন্তব্য কী— জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭২ নম্বর ওয়ার্ড (মান্ডা এলাকা) কাউন্সিলর শফিকুল আলম শামীম বলেন, ‘এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। কারা এ টাকা নিচ্ছে তা আমার জানা নেই। আমরা ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করি। আগামীতেও এমন অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
এমন অভিযোগের বিষয়ে মুগদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা পেলেই আমরা জব্দ করি। সবসময় নয়, মাঝেমধ্যে এসব বাহনের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান চালাই। থানা পুলিশের টাকা নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এটা মিথ্যা অভিযোগ। যারা এসব কাজ করে তারা পুলিশের নাম ভাঙিয়ে নিজেরা নিরাপদ থাকতে চায়।
চাঁদাবাজিতে সেরা যাত্রাবাড়ী থানা
রাজধানী ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দেখা যায় যাত্রাবাড়ী এলাকায়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বেশকিছু ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ এলাকা। ৬২ নম্বর ওয়ার্ড এর একটি।
এ বিষয়ে কথা হয় ডিএসসিসি’র ৬২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদের সঙ্গে। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আমাদের এলাকাতেও ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। আমাদের সার্বিক সহযোগিতা সেখানে থাকবে। যেদিন থেকে রিকশা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হবে, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেব।’
টাকার ভাগ পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘খোঁজখবর নেন, আমার নাম পেলে তখন বইলেন। আমি আমার জায়গায় সৎ আছি। রিকশার টোকেনের ভাগ নিই না। অন্য কাউন্সিলররা কী করেন, তা আমার জানা নেই। আমার কার্যালয় থেকে এমন টাকা নেওয়া হয় না। কেউ নেওয়ার সাহসও দেখাবে না। সরকার বা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত এলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন >> ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলো বিদ্যুৎ বিধ্বংসী : মেয়র আতিক
পুলিশের টাকা নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজাহারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ব্যাটারিচালিত অটো-রিকশার চলাচল বন্ধের বিষয়ে আমাদের কোনো কার্যক্রম নেই। নির্দেশনা পেলেই আমরা এগুলো বন্ধ করে দেব। এমন রিকশার বিরুদ্ধে মূলত অভিযান চালায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ। তারা অভিযানে নামলে আমরা তাদের সহযোগিতা করি।
‘বর্তমানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছেন। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। নিয়মিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। আমরা আগেও ব্যবস্থা নিয়েছি, এখনও তা চলমান।’
ব্যাটারিচালিত রিকশায় বেড়েছে দুর্ঘটনা
গত ২১ জুলাই রাজধানীর চকবাজারের ইসলামবাগে ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে উম্মে সালমা (২৪) নামের এক নারী নিহত হন। চালকের বেপরোয়া গতির জন্য ওই দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছোট এ যানটা যে গতিতে চলার কথা তার চেয়ে বেশি গতি তোলা হয়। ফলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। হঠাৎ ব্রেক করলে তা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে, উল্টে যায়। বাহনটির দ্রুতগতির কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে।
রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বপালন করা অনারারি মেডিকেল অফিসার ডা. সাজেদুর রহমান বলেন, জরুরি বিভাগে দায়িত্বপালনের সময় দুর্ঘটনার শিকার অনেক রোগী পাওয়া যায়। এর মধ্যে অনেকে আসেন ব্যাটারিচালিত রিকশার দুর্ঘটনায় আহত হয়ে। মূলত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রিকশা থেকে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হন যাত্রীরা।
ব্যাটারিচালিত রিকশার ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা কেন বাড়ছে— জানতে চাইলে রাজধানীর মিরপুর পশ্চিম শেওড়াপাড়ার রিকশাচালক আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, চিকন টায়ার আর দ্রুতগতির হওয়ায় হঠাৎ ব্রেক করলে গাড়ি উল্টে যায়। প্যাডেলচালিত রিকশা আস্তে চলে, ব্রেক করলে থেমে যায়। ব্যাটারিচালিত রিকশায় একই ধরনের ব্রেক থাকায় তা তেমন কাজে আসে না। এখন সবাই প্যাডেলচালিত রিকশা ছেড়ে ব্যাটারির দিকে ঝুঁকছেন। পরিশ্রম কম, গতি বেশি; ট্রিপও বেশি। এ কারণে সবাই পুরোনো রিকশায় ব্যাটারি লাগিয়ে নিচ্ছেন। বেশি বেশি ট্রিপ নেওয়ার আশায় অনেকে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালান। দুর্ঘটনায়ও পড়েন তারা।
অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ধরনের রিকশার কারণে প্রতিনিয়ত রাজধানীতে দুর্ঘটনা বাড়ছে। দুর্ঘটনা রোধে রিকশার আকৃতি ও গঠন পরিবর্তন জরুরি। যেমন- ব্যাটারিচালিত রিকশার টায়ার চিকন, ব্রেক সিস্টেম আগের রিকশার মতো। ফলে গতি বাড়ালে রিকশার ব্রেক হঠাৎ কাজ করে না। উল্টে যায় অথবা নিয়ন্ত্রণ হারায়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে রিকশার আকৃতি ও কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। একটু বড় সাইজের রিকশা বানাতে হবে। সেই সঙ্গে ব্রেক, টায়ার ও স্পোকগুলো মানসম্মত ও চলাচলের উপযোগী করতে হবে।
আরও পড়ুন >> রিকশা-ভ্যান বন্ধ নয়, ব্যাটারি-মোটর খুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত
‘রিকশা বন্ধ করে দেওয়া কিন্তু কোনো সমাধান নয়। দরকার সঠিক পরিকল্পনা এবং এটিকে যুগোপযোগী বাহনে রূপান্তর করা। শহরের রাস্তার সক্ষমতা বিবেচনা করে রিকশার সংখ্যাও নির্ধারণ করতে হবে। এজন্য জোনভিত্তিক পরিবহন পরিকল্পনা দরকার। প্রাথমিকভাবে এ ধরনের রিকশার চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধের পরিবর্তে ধাপে ধাপে পর্যাপ্ত বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।’
ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর বৈধতা চান তারা
ভাটারা এলাকায় নয় বছর ধরে রিকশা চালান রংপুর থেকে আসা বেলাল মিয়া।আগে তিনি প্যাডেলচালিত রিকশা চালাতেন, তিন বছর হলো ব্যাটারিচালিত রিকশা চালান। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আমার আগের রিকশাতে ২৬ হাজার টাকা খরচ করে ব্যাটারি লাগিয়েছি। প্যাডেলচালিত রিকশায় খুব পরিশ্রম হয়, ট্রিপ মারা যায় কম। ব্যাটারিচালিত রিকশায় পরিশ্রম কম, দ্রুতগতির হওয়ায় ট্রিপ মারা যায় বেশি। ইনকামও ভালো হয়।
ঢাকার রাস্তায় বৈধভাবে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর অনুমতি চান বেলাল মিয়ার মতো বয়স্ক এবং শারীরিকভাবে অক্ষম রিকশাচালকরা। একটা সময় প্রতিবন্ধী রিকশাচালকরা ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর অনুমতি পেতেন। তিন বছরের বেশি সময় ধরে এমন অনুমোদন বন্ধ আছে।
রাজধানীর মানিকনগর এলাকার রিকশাচালক স্বপন আহমেদ। এক পায়ে সমস্যা থাকায় ক্র্যাচ (হাঁটার লাঠি) নিয়ে চলাফেরা করতে হয় তাকে। নিজেকে ‘প্রতিবন্ধী’ দাবি করে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর অনুমতি চান তিনি। স্বপন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে সুপারিশ নিয়ে থানা ও সংশ্লিষ্ট জায়গা থেকে প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর অনুমতি মিলত। এখন পাওয়া যায় না। ফলে আমাদের ধরা হচ্ছে এখন। যেহেতু আমরা শারীরিকভাবে অক্ষম, কোনো কাজ করতে পারি না, সেহেতু আমাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে পরিবার-পরিজন নিয়ে টিকে থাকতে পারব। কারও কাছে হাত পাততে হবে না।
ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন স্বপন আহমেদের মতো প্রতিবন্ধী চালকরা। ‘প্রতিবন্ধী ঐক্য সমাজ’-এর ব্যানারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনও করেছেন তারা।
আরও পড়ুন >> বিদ্যুৎচালিত মোটরযান অনুমোদন দেবে সরকার
প্রতিবন্ধী ঐক্য সমাজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সভাপতি আল মাহমুদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিবন্ধী হিসেবে অনেকে সামান্য কিছু ভাতা পান। কেউ কেউ তাও পান না। খেয়ে-পরে কোনো মতে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের একটা উপার্জনের পথ দরকার। আমরা যারা শারীরিকভাবে অক্ষম, তাদের ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর অনুমতি দেওয়া হোক। আমরা নিজেরাই উপার্জন করতে চাই, কারও বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। যেহেতু ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে পরিশ্রম কম, সেহেতু বৈধভাবে এগুলো চালানোর অনুমতি দেওয়া হোক।
ব্যাটারিচালিত রিকশায় দুর্ঘটনা বাড়ছে, নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ কী— জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে আমরা বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করেছি। এটা আরও কার্যকর করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে আমরা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছি, এটা পুরোপুরি বন্ধ করতে চাই। প্রায়ই আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি। এটা আরও জোরদার করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, প্যাডেলচালিত রিকশার লাইসেন্স দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এ বিষয়ে কাজ করছে। পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে মাঠে নামবে ডিএনসিসি।
ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের বিষয়ে সাধারণ নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা শহরের অলিগলি ও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় এসব বাহন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চালকদের নেই কোনো প্রশিক্ষণ, নেই লাইসেন্সও। আইনগতভাবে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ হলেও এক শ্রেণির দুষ্কৃতিকারী, মাসল ম্যান, পুলিশ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় এসব বাহন চলছে। ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনা, যানজটের ভারে ন্যুব্জ হচ্ছে রাজধানী ঢাকা। প্যাডেলচালিত রিকশা এখন চোখেই পড়ে না। দ্রুত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের হয় প্রশিক্ষণ দিয়ে লাইসেন্স এবং তাদের চলাচলের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করতে হবে, না হয় সম্পূর্ণভাবে এগুলো নিষিদ্ধ করতে হবে। এটা করতে না পারলে দুর্ঘটনা দিনদিন বাড়তেই থাকবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এসব বাহন বন্ধ করে দেওয়া। সেই সঙ্গে যুগোপযোগী নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা।
আরও পড়ুন >> সেই রিকশাচালকের মুখে হাসি ফোটালেন ব্যারিস্টার আহসান
‘যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এক যুগ ধরে আমরা ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা পুরোপুরি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এ খাতে প্রতিদিন অনেক টাকার চাঁদাবাজি হচ্ছে। যারা এ সুবিধা নিচ্ছেন তারাই ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করতে দিচ্ছেন না। তাদের লোভের কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন সাধারণ যাত্রীরা।’
কিউআর কোডযুক্ত ২ লাখ রিকশা নিবন্ধন দেবে ডিএনসিসি
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের ২৮ হাজার রিকশার লাইসেন্স দেওয়া ছিল। কিন্তু এখন প্রায় ১০ লাখের বেশি রিকশা চলছে। এগুলো কোনো শৃঙ্খলার মধ্যে নেই, কোনো ডাটাবেজ নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগের অনিবন্ধিত রিকশা তুলে দিয়ে নতুন করে কিউআর কোডযুক্ত দুই লাখ রিকশা নিবন্ধন দেব।
তিনি বলেন, আমরা পরিকল্পনা করে ফেলেছি প্রাথমিকভাবে দুই লাখ রিকশা কিউআর কোডের মাধ্যমে চালু করব। আগের যেসব রিকশা আছে সেগুলো ক্লোজ করা হবে এবং শুধুমাত্র কিউআর কোডযুক্ত রিকশা চলবে ঢাকার রাস্তায়। এর মাধ্যমে একটা সিস্টেম তৈরি হবে। কিউআর স্ক্যান করলেই বোঝা যাবে রিকশা কোথাকার, মালিক কে, গ্যারেজ কোথায়। অর্থাৎ যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে কিউআর কোডের মাধ্যমে।
ব্যাটারিচালিত রিকশার বিষয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য আমরা বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ব্যাটারিচালিত রিকশা বিদ্যুৎ অপচয় করছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ ধরনের রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেব।
লোডশেডিংয়ের মধ্যেই বিদ্যুৎ খাচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা
সম্প্রতি বিদ্যুতের অপচয় রোধে প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অফিস-আদালতে বিদ্যুতের ব্যবহার কমানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ৯০ শতাংশ গ্যারেজে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে প্রতিদিন চার্জ দেওয়া হচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ অন্যান্য বাহন। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা জারি না হওয়ায় রাজধানীসহ দেশজুড়ে চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশার আধিপত্য।
জানা গেছে, সারা দেশে ৬০ লাখের বেশি ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করছে। রাজধানীতেই এসব বাহনের সংখ্যা ১০ লাখের বেশি। এসব বাহনে নিয়মিত চার্জ দিতে অপচয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ।
বিশ্লেষকদের মতে, ব্যাটারিচালিত একটি রিকশায় প্রতিদিন পাঁচ ইউনিটের মতো বিদ্যুৎ খরচ হয়। বিনিময়ে রিকশাপ্রতি ৭০ টাকা করে নেওয়া হয়। সারাদিন চালিয়ে রাতে গ্যারেজে রাখা হয় রিকশাগুলো। সেখানে ১০/১২ ঘণ্টা ধরে চার্জ দেওয়া হয়। বিনিময়ে গ্যারেজমালিকরা টাকা নেন। অধিকাংশ গ্যারেজেই রয়েছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ।
এএসএস/এসআই/এআর/এমএআর/ওএফ