‘অন্যদের নতুন সিনেমার চেয়ে শাকিবের পুরনো সিনেমায় দর্শক বেশি’
শূন্য দশকের মাঝামাঝি সময়ে তার উত্থান। এখনো পর্যন্ত অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ঢালিউড শাসন করে যাচ্ছেন। তিনি শাকিব খান। তার সিনেমা দেখার জন্য প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের ভিড় হয়। সিনেমা হল মালিকদের ঠোঁটে আসে হাসি। সিনেপাড়া হয়ে ওঠে জমজমাট।
করোনার কারণে অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশের সিনেমাও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। সেই প্রভাব কাটিয়ে এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি ইন্ডাস্ট্রি। গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি আলোচিত সিনেমা মুক্তি পেয়েছে বটে। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া ফেলতে পারেনি কোনোটিই।
বিজ্ঞাপন
সিনেমা হল মালিকদের মতে, দর্শক ফেরাতে শাকিব খানের সিনেমা লাগবে। এ ছাড়া আপাতত অন্য উপায় নেই।
ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হলের কর্ণধার ও প্রদর্শক সমিতির সাবেক সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘ব্যবসায়িক মন্দা কাটছে না। মধুমিতার মতো সিঙ্গেল স্ক্রিনের জন্য কর্মাশিয়াল সিনেমা লাগবে। যারা নিয়মিত সিনেমার দর্শক তারা কমার্শিয়াল ধাঁচের সিনেমা পছন্দ করে। শাকিব খান নিয়মিত এ ধরণের সিনেমা করে থাকে। তার সিনেমার দর্শক আলাদা। হলে হলে আগের মতো ভিড় লম্বা লাইন ফেরাতে হলে শাকিব খানের সিনেমা মাস্ট লাগবে।’
সিঙ্গেল স্ক্রিন বাঁচাতে শাকিব খানের বিকল্প নেই বলে মনে করেন নওশাদ। তার ভাষ্য, ‘গণমানুষ তার (শাকিব খান) সিনেমা যে পরিমাণ দেখে অন্যদের সিনেমা সেভাবে দেখে না। দেশে মধুমিতার মতো সিঙ্গেল স্ক্রিন বাঁচাতে শাকিব ছাড়া উপায় নেই! তার পুরাতন সিনেমা চালালেও প্রচুর দর্শক আসে। হল মালিকদের কথা ভেবে এবং দর্শকের আগ্রহ বিবেচনায় শাকিবের সিনেমাগুলোর প্রযোজকদের বলতে চাই, তার সিনেমা মুক্তি দেয়া উচিত। এবং এরকম কমার্শিয়াল সিনেমাগুলো নিয়মিত হলে মুক্তির ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে।’
একই সুরে কথা বললেন গাজীপুরের বর্ষা সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক আবদুর রহমান। তার মতে, গত কয়েকমাসে যেসব সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, সেগুলো ‘ঠাণ্ডা মেজাজের’। এ কারণে সাধারণ দর্শকের আগ্রহ কম।
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, “ঢাকার বাইরে যারা নিয়মিত সিনেমা দেখে, তারা অ্যাকশন-রোম্যান্টিক-বাণিজ্যিক সিনেমা পছন্দ করে। শ্রমজীবী যারা একদিন সিনেমা দেখতে আসে তারা ‘ঠাণ্ডা মেজাজের ছবি’ চায় না। নাচ গান ফাইটিংয়ে ভরপুর সিনেমা এলে মানুষ হুমড়ি খেয়ে আসে। এরমধ্যে নতুন সিনেমা চালিয়েও লোকসান গুনেছি। অনেকদিন ধরে সিনেমা হলে শাকিব খানের নতুন সিনেমা আসছে না। এখনকার নতুন সিনেমাগুলোর চেয়ে শাকিব খানের পুরাতন সিনেমাতে দর্শক বেশি হয়। সিনেমা হলে দর্শক ফেরাতে শাকিব খানের সিনেমার কোনো বিকল্প নেই।”
প্রসঙ্গত, শাকিব খান অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘শাহেনশাহ’। গত ২০২০ সালে মুক্তি পেয়েছিল এটি। একই বছর তিনি ‘বীর’ নামের আরেকটি সিনেমাও উপহার দিয়েছিলেন। বর্তমানে তার হাতে বেশ কয়েকটি সিনেমা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ‘অন্তরাত্মা’, ‘গলুই’ ও ‘লিডার: আমিই বাংলাদেশ’।
এছাড়া শাকিব বর্তমানে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখান থেকেই নতুন সিনেমার ঘোষণা দিয়েছেন। শিগগিরই শুরু হবে সেই সিনেমার কাজ। যেটি নির্মাণ করবেন হিমেল আশরাফ।
কেআই